#Quote
More Quotes by Bishnu Dey
সকল শিল্পের সত্য হইতেছে আত্মা, রস হইতেছে প্রাণ, আর রূপ হইতেছে দেহ।
শান্তি অন্তরের ইন্দ্রিয়কে, বাহিরের ইন্দ্রিয়কে উদার প্রসারিত করিয়া ধরে, আর এইজন্যই সেখানে আসিয়া ধরা দেয় অন্তরের অসীমের স্বাচ্ছন্দ্য। শান্তির মধ্যেই গাঢ় হইয়া জমিয়া উঠে একটা আত্মস্থ সামক্ষ্য শান্তি স্বচ্ছতা দৃষ্টিকে লইয়া চলে গভীর হইতে গভীরে।
সে কাল ও একালের ব্যবধানটি এককথায় নির্দেশ করিতে হইলে বলিতে পারি যে, সেকালের শিল্পীরা মুখ্যত চাহিতেন সৌন্দর্য, আর একালের শিল্পীরা চাহেন সত্য। সুন্দর একখানি রূপ গড়িয়া তোলা ছিল প্রাচীন শিল্পীর সকল প্রয়াস, আধুনিকের একমাত্র যত্ন সত্যকে, নিছক সত্যকে প্রকাশ করিয়া ধরা। এই আকৃতি ও প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিভিন্ন, এমনকি হয়তো বিপরীত ধরনের হইয়া পড়িয়াছে।
কবিদের আদি অর্থ ছিল ঋষি। কিন্তু এখন কবিকে আবার ফিরে আর্য চেতনায় উঠতে হবে নবযুগের নব সৃষ্টির জন্য। জীবনের সাধনায় যে ঋষি ব্ৰহ্মবিৎ ব্ৰহ্মভূত শিল্পের রচনায় তিনিই হবেন পরম কবি।
লােকনৃত্যের প্রেরণা ও প্রয়ােগ অনেকখানি নির্ভর করে তার সামাজিক উপলক্ষে। শহুরে মঞ্চের উপরে অনেক নৃত্যই মানায় না, অধিকন্তু দর্শকরা তার প্রেরণায় অংশ নিতে অক্ষম।
বিচার সত্যকে আবিষ্কার করে না; বিবেকই সত্যকে আবিষ্কার করে, বিচার পরে আসিয়া তাহার কেন কিরূপ বুঝাইয়া দেয়, প্রমাণ সংগ্রহ করে।
সভ্যতার আর একটি বড় প্রত্যয় হচ্ছে ব্যক্তিত্ববােধ। কি করে সমাজ ও ব্যক্তিতে দ্বন্দ্বাশ্রয়ী সম্বন্ধের দীর্ঘ ইতিহাসে এই ব্যক্তি স্বরূপ মর্যাদা পেতে লাগল, তার ব্যাখ্যা সভ্যতার ইতিহাস। বহির্জগতে বিরুদ্ধশক্তি, অন্ধপ্রকৃতি, জন্তু-জানােয়ার, হিংস্র-গােষ্ঠীর দলাদলি যতদিন না মানুষের শুভবুদ্ধি কর্তৃত্বে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা পেয়েছে ততদিন ব্যক্তির এই মহিমা কবিদের মনেও আসেনি। বাল্মীকি বা হােমার গােষ্ঠীর রচনাই করছেন, রবীন্দ্রনাথই বলতে পেরেছেন স্বকীয়তার কথা।
জগতে যে একটি মাত্র সত্য বা সুন্দর বা মঙ্গল আছে তাহা নয়; একটি বিশেষ সত্য, সুন্দর, মঙ্গল যে আর সকলের উপরে, তাহাও নয়। আছে অনেক সুন্দর মঙ্গল প্রত্যেকেই নিজের নিজের ধর্মে মহান।
কিন্তু যোগীর ক্ষেত্র আরো বিস্তৃত ও বস্তুগত—কারণ যোগীর প্রয়াস প্রাণে ও দেহে অধ্যাত্মের আলো প্রজ্বলিত করা। কবি এই প্রয়াসের আরম্ভ হতে পারেন। সহায় হতে পারেন কিংবা শেষে জয়ের প্রকাশ বা ঘোষণাও হতে পারেন, কিন্তু কবি যোগীকে সরিয়ে তার স্থান গ্রহণ করতে পারেন না—যোগী হতে গেলে যে কবি হতেই হবে তা নয়।
ভাষার একটা স্বাভাবিক স্থিতিপ্রবণতার জন্য রচনার গতিতে আসে দ্বিধা। গতিতে গা ভাসালে অবশ্য খুঁটিতে বাঁধা মনের দ্বিধাও নিষ্প্রয়ােজন। সজীব রচনাতে তাই শিল্পী ও শিল্পবস্তু, বিষয় ও টেকনিকে টান পড়ে জ্যা বদ্ধ ধনুকের টংকারে ধনু ও ছিলা টানের