#Quote
সে কাল ও একালের ব্যবধানটি এককথায় নির্দেশ করিতে হইলে বলিতে পারি যে, সেকালের শিল্পীরা মুখ্যত চাহিতেন সৌন্দর্য, আর একালের শিল্পীরা চাহেন সত্য। সুন্দর একখানি রূপ গড়িয়া তোলা ছিল প্রাচীন শিল্পীর সকল প্রয়াস, আধুনিকের একমাত্র যত্ন সত্যকে, নিছক সত্যকে প্রকাশ করিয়া ধরা। এই আকৃতি ও প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিভিন্ন, এমনকি হয়তো বিপরীত ধরনের হইয়া পড়িয়াছে।
Facebook
Twitter
More Quotes by Bishnu Dey
লাঙল ফলায় চেতনাকে করাে উর্বর তবে তাে ফলবে জ্ঞান-বিজ্ঞানে মনের ফসল, তবে তাে গড়বে যন্ত্র হাতের দরদে সচল।
অতি বিজ্ঞাপিত জিনিসের প্রতি আমার শ্রদ্ধা অতি কম। কারণ, মানবহৃদয়ের স্বাভাবিক দুর্বলতার ওপর বিজ্ঞাপনের বল এবং মানবমনের সরল বিশ্বাসের ওপর বিজ্ঞাপনের ছল প্রতিষ্ঠিত।
বন্ধুত্বের পারস্পরিকতায় যে কথা মুখে বলা যায়, সে কথা কাগজের শীতল প্রকাশ্যতায় লেখা অর্থহীন।
আবার অন্যদিকে এমন অত্যুক্তিও করা চলে না যে কবি ও যোগী এক ও অভিজ্ঞ কাব্যরচনা ও যোগ-সাধনায় পার্থক্য নেই, কবির তবুও হল বাঙ্ময় জগৎ এবং সেটি মানসলোকের অন্তর্ভুক্ত। কবির যে অন্তরাত্মার জ্যোতি তা এই বাঙ্ময় মানসলোককে ভাস্বর, অধ্যাত্মপ্রবণ করে তোলে।
সূর্য ফের প্রত্যহই সহিষ্ণু আস্থায় উদয় - শিখরে ।
উপনিষদের কবি পূর্ণমাত্রায় যোগী ও ঋষি ছিলেন। উপনিষদ কবিত্ব হিসাবে যতখানি উৎকৃষ্ট, সাধনার মন্ত্র হিসাবেও ততখানি গ্রহণীয়। কবি ও যোগী এখানে এক হয়ে, উভয়ে উভয়ের অভিব্যক্তি হয়ে প্রমূর্ত—পরস্পরং ভারয়ন্তঃ।
ভাষার একটা স্বাভাবিক স্থিতিপ্রবণতার জন্য রচনার গতিতে আসে দ্বিধা। গতিতে গা ভাসালে অবশ্য খুঁটিতে বাঁধা মনের দ্বিধাও নিষ্প্রয়ােজন। সজীব রচনাতে তাই শিল্পী ও শিল্পবস্তু, বিষয় ও টেকনিকে টান পড়ে জ্যা বদ্ধ ধনুকের টংকারে ধনু ও ছিলা টানের
ইন্দ্রিয়কে দমনে রাখিতে যাইয়া ইন্দ্রিয়ের সত্য ভোগকে নির্বাসিত করিব কেন? ইন্দ্রিয়ের যে বাহ্য বিক্ষোভ তাহার ভয়ে ইন্দ্রিয়ের দেবতাকে অস্বীকার করা সত্যানুভূতিরই অন্তরায়।
জীবনের ছন্দ এক, শিল্পের ছন্দ আর এক; শিল্পের মধ্যে জীবনকেই যদি মূর্ত করিয়া ধরিতে চাই, তবুও জীবনের গতিভঙ্গীকে হুবহু শিল্পের গতিভঙ্গীর মধ্যে তুলিয়া ধরিতে পারি না। জীবনকে শিল্পের মধ্যে তুলিয়া ধরিতে হইলেই দরকার একটা রূপান্তর পাশ্চাত্যে ইহার নাম দিয়াছে —এই রূপান্তরের অর্থই শিল্পগত সৌন্দর্য।
সভ্যতার আর একটি বড় প্রত্যয় হচ্ছে ব্যক্তিত্ববােধ। কি করে সমাজ ও ব্যক্তিতে দ্বন্দ্বাশ্রয়ী সম্বন্ধের দীর্ঘ ইতিহাসে এই ব্যক্তি স্বরূপ মর্যাদা পেতে লাগল, তার ব্যাখ্যা সভ্যতার ইতিহাস। বহির্জগতে বিরুদ্ধশক্তি, অন্ধপ্রকৃতি, জন্তু-জানােয়ার, হিংস্র-গােষ্ঠীর দলাদলি যতদিন না মানুষের শুভবুদ্ধি কর্তৃত্বে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা পেয়েছে ততদিন ব্যক্তির এই মহিমা কবিদের মনেও আসেনি। বাল্মীকি বা হােমার গােষ্ঠীর রচনাই করছেন, রবীন্দ্রনাথই বলতে পেরেছেন স্বকীয়তার কথা।