আত্মোপকারীকে বনবাসে বিসর্জন করা তাহাদিগের প্রকৃতি, তাহারা চিরকাল আত্মোপকারীকে বনবাস দিবে–কিন্তু যত বার বনবাসিত করুক না কেন, পরের কাষ্ঠাহরণ করা যাহার স্বভাব, সে পুনর্বার পরের কাষ্ঠাহরণে যাইবে। তুমি অধম–তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন?

---

যাকে ভালবাস তাকে চোখের আড়াল করোনা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

---

কুসুম আপনার জন্য ফোটে না, পরের জন্য তোমার হৃদয় কুসুমটিকে প্রস্ফুটিত করিও।

---

যে কণ্ঠ হইতে কাতরের জন্য কাতরোক্তি নিঃসৃত না হইল, সে কণ্ঠ রুদ্ধ হউক। যে লেখনি আর্তের উপকারার্থে না-লিখিল, সে লেখনি নিষ্ফলা হউক।

---

প্রেম হলো জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা।

---

রূপে মুগ্ধ, কে কার নয়। আমি এই হরিতনীল চিএিত প্রজাপতিটির রূপে মুগ্ধ। তুমি কুসুমতি কামীনি শাখার রূপে মুগ্ধ। তাতে দোষ কি? রূপত মোহের জন্য হইয়া ছিল।

---

মনুষ্যের সুখ মনুষ্যত্বে, এই মনুষ্যত্ব সকল বৃত্তিগুলির উপযুক্ত স্ফূর্তি, পরিণতি ও সামঞ্জস্যের সাপেক্ষ। মনুষ্যের সমুদয় শক্তিগুলিকে চারি শ্রেণীতে বিভক্ত করা গেল: ১. শারীরিকী, ২. জ্ঞানার্জনী, ৩. কার্যকারিনী, ৪. চিত্তরঞ্জিনী। এই চতুর্বিদ বৃত্তির উপযুক্ত স্ফূর্তি, পরিণতি ও সামঞ্জস্যই মনুষ্যত্ব।

---

সাহিত্যও ধর্ম ছাড়া নহে। কেননা, সাহিত্য সত্যমূলক। যাহা সত্য, তাহা ধর্ম। যদি এমন কুসাহিত্য থাকে যে তাহা অসত্যমূলক ও অধর্মময়, তবে তাহার পাঠে দুরাত্মা বা বিকৃতরুচি পাঠক ভিন্ন কেহ সুখী হয় না।

---

তুমি সাহিত্য পাঠে অনুরক্ত এবং তাহাতে আনন্দ লাভ কর, তাহার কারণ এই যে, যে সকল বৃত্তির অনুশীলন করিলে সাহিত্যের মর্ম গ্রহণ করা যায়, তুমি চিরকাল সেই সকল বৃত্তির অনুশীলন করিয়াছ, কাজেই তাহাতে আনন্দ লাভ কর। যে সকল বৃত্তির অনুশীলনে ধর্মের মর্ম গ্রহণ করা যায়, তুমি সেগুলির অনুশীলন কর নাই, এজন্য তাহার আলোচনায় তুমি আনন্দ লাভ কর না।

---

টাকার জন্য লিখিবেন না। ইউরোপে এখন অনেক লোক টাকার জন্যই লেখে এবং টাকাও পায় লেখাও ভাল হয়। কিন্তু আমাদের এখনও সে দিন হয় নাই। এখন অর্থের উদ্দেশ্যে লিখিতে গেলে লোকরঞ্জন-প্রবৃত্তি প্রবল হইয়া পড়ে। এখন আমাদিগের দেশের সাধারণ পাঠকের রুচি ও শিক্ষা বিবেচনা করিয়া লোকরঞ্জন করিতে গেলে রচনা বিকৃত ও অনিষ্টকর হইয়া উঠে।

---