ভাগ্য পরিবর্তন নিয়ে কোরআনের আয়াত
-672a1cd9884c1.jpg)
ভাগ্য আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত। ভাগ্য আল্লাহর এক রহস্যময় জগৎ। তবে তকদিরকে মুসলিম দার্শনিকেরা দুভাবে ব্যাখ্যা করেছেন: মুবরাম ও মুআল্লাক। মুবরাম অর্থ স্থিরকৃত, মুআল্লাক অর্থ পরিবর্তনীয়। আল্লাহ তাআলা ভাগ্য নির্ধারণ করেন এবং তিনিই পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখেন। মূলত তকদির বা ভাগ্য নেক আমল দ্বারা, পিতা-মাতার দোয়ায় ও সদকা ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবর্তন হয়।
ভাগ্য সেসব বিষয়ের একটি যেগুলোর ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন, ‘অদৃশ্য সম্পর্কে তোমাদেরকে আল্লাহ অবহিত করার নয়; তবে আল্লাহ তাঁর রাসুলদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৭৯) কোরআনের বর্ণনায় ভাগ্য: ভাগ্য সম্পর্কে মানুষ ততটুকু জানে, যতটুকু আল্লাহ কোরআন ও তাঁর নবীর মাধ্যমে জানিয়েছেন।
ভাগ্য পরিবর্তন নিয়ে কোরআনের আয়াত
কোরআনের বর্ণনায় ভাগ্য : ভাগ্য সম্পর্কে মানুষ ততটুকু জানে, যতটুকু আল্লাহ কোরআন ও তাঁর নবীর মাধ্যমে জানিয়েছেন। নিম্নে ভাগ্য বিষয়ে কোরআনের বর্ণনা তুলে ধরা হলো—
১. আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত : মানুষের ভাগ্যের ভালো ও মন্দ আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আল্লাহ বলেন, ‘আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে, আমার আদেশ তো একটি কথায় নিষ্পন্ন, চোখের পলকের মতো।
২. ভাগ্য অনিবার্য : আল্লাহ মানুষের জন্য যা নির্ধারিত করে রেখেছেন তা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই; আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। ’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৩)
৩. ভাগ্য পূর্বনির্ধারিত : মানুষের ভাগ্যে যা ঘটে তা পূর্ব থেকেই আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের ওপর যে বিপর্যয় আসে আমি তা সংঘটিত করার আগেই তা লিপিবদ্ধ থাকে।
৪. ভাগ্য জীবনে সংযম আনে : ভাগ্য মানুষের জীবনকে সংযত করে। আল্লাহ বলেন, ‘এটা (ভাগ্য নির্ধারণ) এ জন্য যে, তোমরা যা হারিয়েছ তাতে যেন তোমরা বিমর্ষ না হও এবং যা তিনি তোমাদের দিয়েছেন তার জন্য হর্ষোত্ফুল্ল না হও। আল্লাহ পছন্দ করেন না উদ্ধত ও অহংকারীদের। ’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ২৩)
৫. ভাগ্য অনুসারেই সব হয় : আল্লাহর ইচ্ছা ও পরিকল্পনা অনুযায়ীই সব কিছু সংঘটিত হয়।
মুমিনের ভাগ্যে বিশ্বাস যেমন হবে : আবু আবদুল্লাহ ইবনে দায়লামি (রহ.) বলেন, আমি উবাই বিন কাব (রা.)-এর কাছে এসে তাকে বললাম, তাকদির সম্পর্কে আমার মনে একটা দ্বিধার উদ্রেক হয়েছে। তাই আপনি আমাকে এমন কিছু বলুন যাতে মহান আল্লাহ আমার মনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর করবেন।
তিনি বললেন, মহান আল্লাহ তাঁর আসমান ও পৃথিবীবাসী সবাইকে শাস্তি দিতে পারেন। তার পরও তিনি তাদের প্রতি অন্যায়কারী হবেন না। পক্ষান্তরে তিনি যদি তাদের সবাইকে দয়া করেন তাহলে তাঁর এই দয়া তাদের জন্য তাদের নেক আমল হতে উত্তম হবে। সুতরাং যদি তুমি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর পথে দান করো আর তাকদিরে বিশ্বাস না রাখো, তবে তা গ্রহণ করা হবে না যতক্ষণ না তুমি পুনরায় তাকদিরে বিশ্বাস করবে এবং উপলব্ধি করবে যে, যা তোমার ঘটেছে তা ভুলেও তোমাকে এড়িয়ে যাওয়ার ছিল না। আর যা এড়িয়ে গেছে তা কখনো ভুলেও তোমার বেলায় ঘটার ছিল না। আর এ বিশ্বাস ছাড়া তুমি মারা গেলে জাহান্নামে যাবে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৬৯৯)
মুমিন ভাগ্যে সন্তুষ্ট থাকে : ভাগ্যের ভালো ও মন্দের ব্যাপারে মুমিন সন্তুষ্ট থাকে। কখনো তাকে অপছন্দের কোনো বিষয় স্পর্শ করলেও সে তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে না। কেননা আল্লাহর নির্দেশ হলো, ‘তিনি (আল্লাহ) যা করেন সে বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা যাবে না, বরং তাদেরকেই প্রশ্ন করা হবে। ’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ২৩)