তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে
-674d9ec07cab8.jpg)
Admin
December 02, 2024
312
দুটি পরমাণু যখন সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয় অণুতে পরিণত হয় তখন অণুর পরমাণুগুলো বন্ধনের ইলেকট্রন দুটিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। বন্ধনে উৎপন্ন এ আকর্ষণ কে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলা হয়। তড়িৎ ঋণাত্মকতা একটি পর্যায়বৃত্ত ধর্ম, যা পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়। একই পর্যায়ে বাম থেকে ডান দিকে গেলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বৃদ্ধি পায় এবং ডান দিক থেকে বাম দিকে আসলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান হ্রাস পায়। অর্থাৎ পরমাণুর আকার বৃদ্ধি পেলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান হ্রাস পায় এবং বিপরীত অর্থে পরমাণুর আকার যত বেশি হ্রাস পায় তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান তত বৃদ্ধি পায়।
উদাহরণ:
তৃতীয় পর্যায়ে মৌল গুলোর মাঝে সোডিয়াম পরমাণুর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান সবচেয়ে কম এবং সর্বশেষ ক্লোরিন এর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান সবচেয়ে বেশি এবং এর মূল কারণ পারমাণবিক ব্যাসার্ধ।আমরা সকলে জানি যে সোডিয়াম পরমাণুর পারমাণবিক ব্যাসার্ধ তৃতীয় পর্যায়ের মৌল গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। এবং অপরদিকে ক্লোরিন পরমাণুর পারমাণবিক ব্যাসার্ধ তৃতীয় পর্যায়ের মৌল গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম বা ছোট। তড়িৎ ঋণাত্মকতা কাকে বলে এর উত্তর আশা করি আপনি পেয়ে গিয়েছেন। মৌলের পর্যাবৃত্ত ধর্ম অনুযায়ী বলা যায় সোডিয়াম ক্রোমানোর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান সবচেয়ে কম এবং ক্লোরিন পরমাণুর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান সবচেয়ে বেশি।
তড়িৎ ঋণাত্মকতা বলতে কোন মৌল ওপর আরেকটি মৌলের সাথে সমযোজী বন্ধনে যুক্ত হওয়ার মধ্যে আকর্ষণ জনিত বলকে বোঝানো হয়।
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, যে মৌলের পারমাণবিক আকার যত বেশি, সে মৌলটি তত তাড়াতাড়ি ইলেকট্রন ত্যাগ বা ভাগাভাগি করতে পারবে।
অপরদিকে যে পরমাণুর পারমাণবিক আকার সবচেয়ে কম, সে পরমাণু হতে ইলেকট্রন অপসারণ করতে বা প্রবেশ করাতে বেশি শক্তির প্রয়োজন হবে।
আর বেশি শক্তি প্রয়োজন হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে মৌল গুলোর মধ্যকার আকর্ষণ জনিত বল।
মৌল গুলোর মধ্যকার আকর্ষণ জনিত বল বৃদ্ধি হওয়ার কারণে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বৃদ্ধি পায় এবং ফলস্বরূপ কম পারমাণবিক ব্যাসার্ধ যুক্ত মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বেশি।
তড়িৎ ঋণাত্মকতার উপর নিয়ামকের প্রভাব:
নিয়ামতের প্রভাবের কারণে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান পরিবর্তন হয় এবং একে তড়িৎ ঋণাত্মকতার উপর নিয়ামকের প্রভাব বলা হয়। অর্থাৎ যে সকল কারণে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান পরিবর্তন হয়, সেই কারণ গুলো নিয়ামক বলে।
তড়িৎ ঋণাত্মকতার ক্ষেত্রে আমরা দুই ধরনের নিয়ামকের প্রভাব লক্ষ্য করতে পারি। যেমন:
পারমাণবিক আকার বা পারমাণবিক ব্যাসার্ধ:
পরমাণুর ইলেকট্রনের চার্জ:
পারমাণবিক আকার বা পারমাণবিক ব্যাসার্ধ:
পারমাণবিক আকার বা পারমাণবিক ব্যাসার্ধ:
তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান পরিবর্তন হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় নিয়ামক হচ্ছে পারমাণবিক আকার বা ব্যাসার্ধ। আমরা পূর্বে জেনেছি যে পারমাণবিক আকার বৃদ্ধি পেলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান হ্রাস পায় এবং পারমাণবিক আকার হ্রাস পেলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বৃদ্ধি পায়।আর এক্ষেত্রে এটি প্রমাণিত হয় যে পারমাণবিক আকার বা ব্যাসার্ধ হচ্ছে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান পরিবর্তনের জন্য একটি বড় নিয়ামক।পারমাণবিক আকার বৃদ্ধির ফলে এদের মধ্যকার আকর্ষণ জনিত বল হ্রাস পায় এবং এর ফলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান হ্রাস পায়।এর বিপরীতে দিকে পারমানবিক আকার হ্রাস পাওয়ার ফলে এদের মধ্যকার আকর্ষণ জনিত বল বৃদ্ধি পায় এবং আকর্ষণ জড়িত বল বৃদ্ধির ফলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বৃদ্ধি পায়। পারমাণবিক আকার বা পারমাণবিক ব্যাসার্ধ হচ্ছে তড়িৎ ঋণাত্মকতার একটি নিয়ামক, যার মাধ্যমে কোন মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান হ্রাস বা বৃদ্ধি পায়।
পরমাণুর ইলেকট্রনের চার্জ:
তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান পরিবর্তন হওয়ার ক্ষেত্রে পরমাণুর ইলেকট্রনের চার্জ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।কোন মৌলের পরমাণুতে উপস্থিত ইলেকট্রন সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।পরমাণুতে উপস্থিত ইলেকট্রন এবং প্রোটন সংখ্যার বৃদ্ধির ফলে এদের মধ্যকার আকর্ষণ জনিত বল বৃদ্ধি পায়। আমরা সকলে জানি যে পরমাণুতে উপস্থিত ইলেকট্রন এবং প্রোটন পরস্পরকে তড়িৎ চুম্বকীয় বল দ্বারা আকর্ষণ করে থাকে।
ঠিক এই কারণে পরমাণুর আকার হ্রাস পায় এবং আমরা জানি আকার হ্রাস পাওয়ার ফলে তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বৃদ্ধি পায়।সুতরাং বলা যায় যে পরমাণুর ইলেকট্রনের চার্জ হচ্ছে তড়িৎ ঋণাত্মকতার আরো একটি বড় নিয়ামক।যেহেতু ইলেকট্রন চার্জ এর উপর ভিত্তি করে পরমাণুর আকার বা ব্যাসার্ধ পরিবর্তন হয় তাই ইলেকট্রনের চার্জ বা পরমাণুতে উপস্থিতি ইলেকট্রনের চার্জ হচ্ছে মূল তড়িৎ ঋণাত্মকতার নিয়ামক।