Surah Kahf

Admin
November 19, 2024
369
আল কাহফ ( আরবি:سورة الكهف) হল মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১৮ তম সূরা৷ এর আয়াত সংখ্যা ১১০ টি ও রূকুর সংখ্যা ১২ টি। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরায় কুরাইশদের তিনটি প্রশ্ন উল্লেখ করে সেসবের উত্তর দেওয়া হয়েছে।
এই সুরায় হজরত মুসা, হজরত খিজির ও জুলকারনাইনের ঘটনাও বর্ণনা করা হয়েছে। এ সুরার আলোচনার মূল বিষয় হল আসহাবে কাহফ বা কয়েকজন দুনিয়াত্যাগী গুহাবাসী মুমিনের ঘটনা।
সুরা কাহাফ এর শানে নুযুল
ইমাম ইবনে জরীর তাবারী হজরত ইবনে-আব্বাসের রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেন যখন মক্কায় রসূলুল্লাহ্ -এর নবুওয়তের চর্চা শুরু হয় এবং কোরাইশরা তাতে বিব্রত বোধ করতে থাকে, তখন তারা নজর ইবনে হারেস ও ওকবা ইবনে আবী মুয়ী'তকে মদীনার ইহুদি পণ্ডিতদের কাছে প্রেরণ করে।
রাসূলুল্লাহ্ সম্পর্কে তারা কি বলে, জানার জন্যে। ইহুদি পন্ডিতরা তাদেরকে বলে দেয় যে, তোমরা তাকে তিনটি প্রশ্ন করো। তিনি এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলে বুঝে নেবে যে, তিনি আল্লাহ্র রসূল। অন্যথায় বোঝবে, তিনি একজন বাগাড়ম্বরকারী রসূল নন।
এক. তাঁকে ঐসব যুবকের অবস্থা জিজ্ঞাসা কর, যারা প্রাচীনকালে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাদের ঘটনা কি? কেননা, এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা।
দুই. তাঁকে সে ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস কর, যে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম এবং সারা বিশ্ব সফর করেছিল। তার ঘটনা কি?
তিন. তাঁকে রুহূ সম্পর্কে প্রশ্ন কর যে, এটা কি?
উভয় কোরাইশী মক্কায় ফিরে এসে ভ্রাতৃসমাজকে বলল আমরা একটি চূড়ান্ত ফয়সালার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফিরে এসেছি। অতঃপর তারা তাদেরকে ইহুদি আলেমদের কাহিনি শুনিয়ে দিল। কোরাইশরা রসূলুল্লাহ্ -এর কাছে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে হাজির হল।
তিনি শুনে বললেন আগামীকাল উত্তর দেব। কিন্তু তিনি ইনশাআল্লাহ্ বলতে ভুলে গেলেন। কোরাইশরা ফিরে গেল। রসূলুল্লাহ্ ওহির আলোকে জওয়াব দেবার জন্যে আল্লাহ্র তরফ থেকে ওহি আসর অপেক্ষায় রইলেন।
কিন্তু ওয়াদা অনুযায়ী পর দিবস পর্যন্ত ওহি আগমন করল না; বরং পনেরো দিন এ অবস্থায় কেটে গেল। ইতিমধ্যে জিবরাঈলও এলেন না এবং কোন ওহীও নাজিল হল না। অবস্থাদৃষ্টে কোরাইশরা ঠাট্টা-বিদ্রুপ আরম্ভ করে দিল। এতে রসূলুল্লাহ্ খুবই দুঃখিত ও চিন্তিত হলেন।
পনেরো দিন পর জিবরাইল সূরা কাহফ নিয়ে অবতার করলেন। এতে ওহির বিলম্বের কারণও বর্ণনা করে দেয়া হল যে, ভবিষ্যতে কোন কাজ করার ওয়াদা করা হলে ইনশাআল্লাহ্ বলা উচিত।
১. আলহামদুলিল্লা-হিল্লাজিআনজালা ‘আলা-‘আবদিহিল কিতা-বা ওয়ালাম ইয়াজ‘আল্লাহু ‘ইওয়াজা-।
২. কাইয়িমাল লিইউনজিরা বা’ছান শাদিদাম মিল্লাদুনহু ওয়া ইউবাশশিরাল মু’মিনিনাল্লাজিনা ইয়া‘মালুনাসসা-লিহা-তি আন্না লাহুম আজরান হাছানা-।
৩. মা-কিসিনা ফিহি আবাদা-।
৪. ওয়া ইউনজিরাল্লাজিনা কা-লুত্তাখাযাল্লা-হু ওয়ালাদা-।
৫. মা-লাহুম বিহি মিন ‘ইলমিওঁ ওয়ালা-লিআ-বাইহিম কাবুরাত কালিমাতান তাখরুজু মিন আফওয়া-হিহিম ইয়ঁইয়াকুলুনা ইল্লা-কাজিবা-।
৬. ফালা‘আল্লাকা বা-খি‘উন্নাফছাকা ‘আলা আ-ছা-রিহিম ইল্লাম ইউ’মিনু বিহা-জাল হাদিছিআছাফা-।
৭. ইন্না-জা‘আলনা-মা-‘আলাল আরদি জিনাতাল্লাহা- লিনাবলুওয়াহুম আইয়ুহুম আহছানু ‘আমালা-।
৮. ওয়া ইন্না-লাজা-‘ইলুনা মা-‘আলাইহা-সা‘ঈদান জুরুজা-।
৯. আম হাছিবতা আন্না আসহা-বাল কাহফি ওয়ার রাকিমি কা-নুমিন আ-য়া-তিনা‘আজাবা-।
১০. ইয আওয়াল ফিতইয়াতুইলাল কাহফি ফাকা-লুরাব্বানাআ-তিনা-মিল্লাদুনকা রাহমাতাওঁ ওয়া হাইয়ি’ লানা-মিন আমরিনা-রাশাদা-।
১১. ফাদারাবনা-‘আলাআ-জা-নিহিম ফিল কাহফি ছিনিনা ‘আদাদা-।
১২. ছু ম্মা বা‘আছনা-হুম লিনা‘লামা আইয়ুল হিজবাইনি আহসা-লিমা-লাবিছুদ্মআমাদা-
১৩. নাহনুনাকুসসু‘আলাইকা নাবাআহুম বিলহাক্কি ইন্নাহুম ফিতইয়াতুন আ-মানু বিরাব্বিহিম ওয়াজিদনা-হুম হুদা-।
১৪. ওয়া রাবাতনা-‘আলা-কুলুবিহিম ইজ কা-মুফাকা-লুরাব্বুনা-রাব্বুছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিলান নাদ‘উওয়া মিন দুনিহিইলা-হাল লাকাদ কুলনাইজান শাতাতা-।
১৫. হাউলাই কাওমুনাত্তাখাজুমিন দু নিহিআ-লিহাতাল লাওলা-ইয়া’তুনা ‘আলাইহিম বিছুলতা-নিম বাইয়িনিন ফামান আজলামুমিম্মানিফতারা-‘আলাল্লা-হি কাজিবা-।
১৬. ওয়া ইজি‘তাঝালতুমুহুম ওয়ামা-ইয়া‘বুদুনা ইল্লাল্লা-হা ফা’ঊইলাল কাহফি ইয়ানশুরুলাকুম রাব্বুকুম মির রাহমাতিহি ওয়া ইউহাইয়ি’ লাকুম মিন আমরিকুম মিরফাকা-।
১৭. ওয়া তারাশশামছা ইজা-তালা‘আততাঝা-ওয়ারু ‘আন কাহফিহিম যা-তাল ইয়ামিনি ওয়া ইজা-গারাবাত তাকরিদুহুম যা-তাশশিমা-লি ওয়া হুম ফি ফাজওয়াতিম মিনহু জালিকা মিন আ-য়া-তিল্লা-হি মাইঁ ইয়াহদিল্লা-হু ফাহুওয়াল মুহতাদি ওয়া মাই ইউদলিল ফালান তাজিদা লাহুত্তয়ালিইইয়াম মুরশিদা-।
১৮. ওয়া তাহছাবুহুম আইকা-যাওঁ ওয়া হুম রুকুদুওঁ ওয়া নুকালিলবুহুম যা-তাল ইয়ামিনি ওয়া যা-তাশশিমা-লি ওয়াকালবুহুম বা-ছিতু ন জিরা-‘আইহি বিল ওয়াসিদি লাবিততালা‘তা ‘আলাইহিম লাওয়াল্লাইতা মিনহুম ফিরা-রাওঁ ওয়ালামুলি’তা মিনহুম রু‘বা-।
১৯. ওয়া কাযা-লিকা বা‘আছনা-হুম লিইয়াতাছাআলুবাইনাহুম কা-লা কাইলুম মিনহুম কাম লাবিছতুম কা-লুলাবিছনা-ইয়াওমান আও বা‘দা ইয়াওমিন কালুরাব্বুকুম আ‘লামুবিমা-লাবিছতুম ফাব‘আছূআহাদাকুম বিওয়ারিকিকুম হাযিহিইলাল মাদীনাতি ফালইয়ানজু র আইয়ুহাআঝকা-তা‘আ-মান ফালইয়া’তিকুম বিরিঝকিম মিনহু ওয়াল ইয়াতালাততাফ ওয়ালা-ইউশ‘ইরান্না বিকুম আহাদা-।
২০. ইন্নাহুম ইয়ঁ ইয়াজহারু‘আলাইকুম ইয়ারজুমুকুম আও ইউ‘ঈদুকুম ফি মিল্লাতিহিম ওয়ালান তুফলিহুইযান আবাদা-।
২১. ওয়া কাযা-লিকা আ‘ছারনা-‘আলাইহিম লিইয়া‘লামুআন্না-ওয়া‘দাল্লা-হি হাক্কুওঁ ওয়া আন্নাছছা-‘আতা লা-রাইবা ফিহা- ইয ইয়াতানা -ঝা‘ঊনা বাইনাহুম আমরাহুম ফাকালুবনু‘আলাইহিম বুনইয়া-নার রাব্বুহুম আ‘লামুবিহিম কা-লাল্লাযীনা গালাবূ ‘আলাআমরিহিম লানাত্তাখিজান্না ‘আলাইহিম মাছজিদা-।
২২. ছাইয়াকুলুনা ছালা-ছাতুর রা-বি‘উহুম কালবুহুম ওয়া ইয়াকুলুনা খামছাতুন ছা-দিছুহুম কালবুহুম রাজমাম বিলগাইবি ওয়া ইয়াকুলুনা ছাব‘আতুওঁ ওয়া ছা-মিনুহুম কালবুহুম কোর রাববীআ‘লামুবি‘ইদ্দাতিহিম মা-ইয়া‘লামুহুম ইল্লা-কালিলুন ফালা-তুমারি ফিহিম ইল্লা-মিরাআন যা-হিরাওঁ ওয়ালা-তাছতাফতি ফিহিম মিনহুম আহাদা-।
২৩. ওয়ালা-তাকুলান্না লিশাইয়িন ইন্নি ফা-‘ইলুন জা-লিকা গাদা-।
২৪. ইল্লাআইঁ ইয়াশাআল্লা-হু ওয়াজকোর রাব্বাকা ইজা-নাসিতা ওয়াকুল ‘আছাআইঁ ইয়াহদিয়ানি রাববী লিআকরাবা মিন হা-জা-রাশাদা-।
২৫. ওয়া লাবিছুফি কাহফিহিম ছালা-ছা মিআতিন ছিনিনা ওয়াঝদা-দুতিছ‘আ-।
২৬. কুল্লিলা-হু আ‘লামুবিমা-লাবিছূ লাহুগাইবুছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি আবসির বিহি ওয়া আছমি‘ মা-লাহুম মিন দু নিহি মিওঁ ওয়ালিইয়িওঁ ওয়ালা-ইউশরিকুফি হুকমিহিআহাদা-।
২৭. ওয়াতলুমাঊহিয়া ইলাইকা মিন কিতা-বি রাব্বিকা লা-মুবাদ্দিলা লিকালিমা-তিহি ওয়া লান তাজিদা মিন দু নিহি মুলতাহাদা-।
২৮. ওয়াসবির নাফছাকা মা‘আল্লাযীনা ইয়াদ‘ঊনা রাব্বাহুম বিলগাদা-তি ওয়াল ‘আশিইয়ি ইউরিদু না ওয়াজহাহুওয়ালা-তা‘দুআইনা-কা ‘আনহুম তুরিদুঝীনাতাল হায়াতিদদুনইয়া- ওয়ালা তুতি‘ মান আগফালনা-কালবাহু‘আন যিকরিনা-ওয়াত্তাবা‘আ হাওয়া-হু ওয়া কা-না আমরুহুফুরুতা-।
২৯. ওয়া কুল্লি হাক্কুমির রাব্বিকুম ফামান শাআ ফালইউ’মিওঁ ওয়ামান শাআ ফালইয়াকফুর ইন্নাআ‘তাদনা-লিজ্জা-লিমীনা না-রান আহা-তা বিহিম ছুরাদিকুহা- ওয়াইয়ঁইয়াছতাগীছূইউগা-ছূবিমাইন কালমুহলি ইয়াশবিল উজূহা বি’ছাশ শারা-বু ওয়া ছাআত মুরতাফাকা-।
৩০. ইন্নাল্লাজিনা আ-মানুওয়া‘আমিলুসসা-লিহা-তি ইন্না-লা-নুদী‘উ আজরা মান আহছানা ‘আমালা-।
৩১. উলাইকা লাহুমজান্না-তু‘আদনিন তাজরি মিন তাহতিহিমুল আনহা-রু ইউহাল্লাওনা ফিহামিন আছা-বিরা মিন যাহাবিওঁ ওয়া ইয়ালবাছূনা ছিয়াবান খুদরাম মিন ছুনদুছিওঁ ওয়া ইছতাবরাকিম মুত্তাকিঈনা ফিহা-‘আলাল আরাইকি নি‘মাছছাওয়া-বু ওয়া হাছুনাত মুরতাফাকা-।
৩২. ওয়াদরিব লাহুম মাছালার রাজুলাইনি যা‘আলনা-লিআহাদিহিমা-জান্নাতাইনি মিন আ‘নাবিওঁ ওয়া হাফাফনা-হুমা বিনাখলিওঁ ওয়াযা‘আলনা-বাইনাহুমা-ঝার‘আ-।
৩৩. কিলতাল জান্নাতাইনি আ-তাত উকুলাহা-ওয়ালাম তাজলিম মিনহু শাইআওঁ ওয়া ফাজ্জারনাখিলা-লাহুমা-নাহারা-।
৩৪. ওয়া কা-না লাহুছামারুন , ফাকা-লা লিসা-হিবিহি ওয়াহুওয়া ইউহা-বিরুহুআনা আকছারু মিনকা মা-লাওঁ ওয়া আ‘আঝঝুনাফারা-।
৩৫. ওয়া দাখালা জান্নাতাহুওয়াহুওয়া যা-লিমুল লিনাফছিহি কা-লা মাআজুন্নুআন তাবীদা হা-যিহিআবাদা-।
৩৬. ওয়ামাআজুন্নুছছা-‘আতা কাইমাতাওঁ ওয়ালাইর রুদিততুইলা-রাববী লাআজিদান্না খাইরাম মিনহা-মুনকালাবা-।
৩৭. কা-লা লাহুসা-হিবুহুওয়া হুওয়া ইউহা-বিরুহআকাফারতা বিল্লাজি খালাকাকা মিন তুরা-বিন ছু ম্মা মিন নুতফাতিন ছুম্মা ছাওওয়া-কা রাজুলা-।
৩৯. ওয়ালাওলাইযদাখালতা জান্নাতাকা কুলতা মা-শাআল্লা-হু লা-কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহি ইন তারানি আনা আকাল্লা মিনকা মা-লাওঁ ওয়া ওয়ালাদা-।
৪০. ফা‘আছা-রাববীআই ইউ’তিয়ানি খাইরাম মিন জান্নাতিকা ওয়া ইউরছিলা ‘আলাইহা-হুছবানাম মিনাছছামাই ফাতুসবিহা সা‘ঈদান ঝালাকা-।
৪১. আও ইউসবিহা মাউহা-গাওরান ফালান তাছতাতী‘আ লাহুতালাবা-।
৪২. ওয়া উহিতাবিছামারিহি ফাআছবাহা ইউকালিলবুকাফফাইহি ‘আলা-মাআনফাকা ফিহা-ওয়াহিয়া খা-বিয়াতুন ‘আলা-‘উরুশিহা-ওয়া ইয়াকু লুইয়া-লাইতানী লাম উশরিক বিরাববীআহাদা-।
৪৩. ওয়ালাম তাকুল লাহুফিয়াতুইঁ ইয়ানসুরুনাহুমিন দুনিল্লা-হি ওয়ামা-কা-না মুনতাসিরা-।
৪৪. হুনা-লিকাল ওয়ালা-ইয়াতুলিল্লা-হিল হাক্কি হুওয়া খাইরুন ছাওয়া-বাওঁ ওয়া খাইরুন ‘উকবা-।
৪৫. ওয়াদরিব লাহুম মাছালাল হায়া-তিদদুনইয়া-কামাইন আনঝালনা-হু মিনাছ ছামাই ফাখতালাতা বিহি নাবা-তুল আরদিফাআসবাহা হাশীমান তাযরুহুর রিয়া-হু ওয়া কানাল্লা-হু ‘আলা-কুল্লি শাইয়িম মুকতাদিরা-।
৪৬. আলমা-লুওয়াল বানুনা ঝিনাতুল হায়া-তিদদুনইয়া- ওয়াল বা-কিয়া-তুসসা-লিহাতুখাইরুন ‘ইনদা রাব্বিকা ছাওয়া-বাওঁ ওয়া খাইরুন আমালা-।
৪৭. ওয়া ইয়াওমা নুছাইয়িরুল জিবা-লা ওয়া তারাল আরদা বা-রিঝাতাওঁ ওয়া হাশারনা-হুম ফালাম নুগা-দির মিনহুম আহাদা-।
৪৮. ওয়া ‘উরিদু ‘আলা-রাব্বিকা সাফফাল লাকাদ জি’তুমুনা-কামা-খালাকনা-কুম আওওয়ালা মাররাতিম বাল ঝা‘আমতুম আল্লান নাজ‘আলা লাকুম মাও‘ইদা-।
৪৯. ওয়া উদি‘আল কিতা-বুফাতারাল মুজরিমিনা মুশফিমিনা মিম্মা-ফিহি ওয়া ইকুলুনা ইয়াওয়াইলাতানা-মা-লি হা-যাল কিতা-বি লা-ইউগা-দিরু সাগিরাতাওঁ ওয়ালা-কাবিরাতান ইল্লাআহসা-হা- ওয়া ওয়াযাদুমা-‘আমিলুহা-দিরা- ওয়ালা-ইয়াজলিমু রাব্বুকা আহাদা-।
৫০. ওয়া ইজকুলনা-লিল মালাইকাতিছ জু দুলিআ-দামা ফাছাজাদু ইল্লাইবলিছা কানা মিনাল জিন্নি ফাফাছাকা ‘আন আমরি রাব্বিহি আফাতাত্তাখিযূনাহুওয়া যুররিইইয়াতাহুআওলিয়াআ মিন দু নি ওয়া হুম লাকুম ‘আদুওউম বি’ছা লিজ্জালিমিনা বাদালা-।
৫১. মাআশহাততুহুম খালকাছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিওয়ালা-খালকা আনফুছিহিম ওয়ামা-কুনতুমুত্তাখিযাল মুদিল্লিনা ‘আদুদা-।
৫২. ওয়া ইয়াওমা ইয়াকু লুনা-দুশুরাকাইয়াল্লাজিনা ঝা‘আমতুম ফাদা‘আওহুম ফালাম ইয়াছতাজিবুলাহুম ওয়া যা‘আলনা-বাইনাহুম মাওবিকা-।
৫৩. ওয়া রাআল মুজরিমুনান্না-রা ফাযাননুআন্নাহুম মুওয়া-কি‘ঊহা-ওয়ালাম ইয়াজিদু‘আনহা- মাসরিফা-।
৫৪. ওয়া লাকাদ সাররাফনা-ফি হা-যাল কোরআ-নি লিন্না-ছি মিন কুল্লি মাছালিওঁ ওয়া কানাল ইনছা-নুআকছারা শাইয়িন যাদালা-।
৫৫. ওয়ামা-মানা‘আন্না-ছা আইঁ ইউ’মিনু ইয যাআহুমুল হুদা ওয়াইয়াছতাগফিরুরাব্বাহুম ইল্লাআন তা’তিয়াহুম ছুন্নাতুল আওওয়ালিনা আও ইয়া’তিয়াহুমুল ‘আযা-বুকুবুলা-।
সুরা কাহফ নাযিল হওয়ার শানে নুযূল
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, কুরাইশরা নাযার ইবনে হারিস ও উকবাহ ইবনে মুঈতকে মদিনার ইয়াহুদী আলেমদের নিকট পাঠিয়ে দেয় এবং তাদেরকে বলে, তোমরা তাদের (ইয়াহুদিদের) কাছে গিয়ে তাদের সামনে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সমস্ত অবস্থা বর্ণনা করবে।
কারণ, তারাই প্রথম (আল্লাহর পক্ষ থেকে) কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিল। পুর্ববর্তী নবীগণ সম্পর্কে তাদের জ্ঞান সবচেয়ে বেশি। সুতরাং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তাদের মতামত কি তা তাদের জিজ্ঞেস করবে।
এই দুইজন তখন মদিনার ইয়াহুদি আলেমদের সাথে স্বাক্ষাৎ করে এবং তাদের সামনে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রচার করা কথা ও তাঁর গুণাবলি বর্ণনা করে।
ইয়াহুদীরা কুরাইশদের বলে, দেখ! আমরা তোমাদের একটি চূড়ান্ত মীমাংসা হয় এমন কথা বলছি। তোমরা মক্কায় ফিরে গিয়ে তাঁকে (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে) তিনটি প্রশ্ন করবে।
যদি তিনি উত্তর দিতে পারেন, তাহলে তিনি যে সত্য নবী এতে কোন সন্দেহ নেই। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন, তাহলে তাঁর মিথ্যাবাদী হওয়া সম্পর্কে কোন সন্দেহ থাকবে না। তখন তোমরা তাঁর ব্যাপারে যা ইচ্ছা করতে পারো।
প্রশ্ন তিনটি :
এক. তোমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করবে, পুর্বযুগে যেই যুবকগণ বেড়িয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের ঘটনা বর্ণনা করুন। এটা তো একটা বিস্ময়কর ঘটনা!
দুই. তারপর তাঁকে ঐ ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে, যিনি সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি পূর্ব প্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে এসেছিলেন।
তিন. আর তাঁকে তোমরা রুহ (আত্মার) অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে।
যদি তিনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারেন তোমরা তাঁকে নবী বলে স্বীকার করে তাঁর অনুসরণ করবে। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন তাহলে যানবে যে, তিনি মিথ্যাবাদী। সুতরাং যা ইচ্ছা তাই করবে।
এরা দুজন মক্কায় ফিরে গিয়ে কুরাইশদের বললো, চূড়ান্ত ফয়সালার কথা ইহুদী আলেমগণ বলে দিয়েছেন।
সুতরাং, চল আমরা তাকে প্রশ্নগুলি করি। অতঃপর তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আগমন করে তাঁকে ওই তিনটি প্রশ্ন করলে তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা আগামী কাল এসো, আমি তোমাদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিব।
কিন্তু তিনি “ইনশা আল্লাহ (যদি আল্লাহ চান)” এই কথা বলতে ভুলে যান। এরপর পনের দিন অতিবাহিত হয়ে যায় কিন্তু তাঁর কাছে না কোন ওহি আসে, আর না আল্লাহ তাআ’লার পক্ষ থেকে তাঁকে এ প্রশ্নগুলির জবাব যানিয়ে দেয়া হয়।
এর ফলে মক্কাবাসী সন্দেহ করতে থাকে এবং পরস্পর বলাবলি করা শুরু করে, দেখ! একদিনের ওয়াদা ছিল। অথচ আজ পনের দিন কেটে গেল, তবুও সে কোন জবাব দিতে পারল না!
এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বিগুণ দুঃখে জর্জরিত হতে লাগলেন। এক তো কুরাইশদের জবাব দিতে না পারায় তাদের কথা শুনতে হচ্ছে, দ্বিতীয়ত ওহি আসা বন্ধ রয়েছে। এরপর জিবরাঈল (আঃ) আগমন করেন এবং সুরা কাহফ অবতীর্ন হয়।
এতে “ইন শা আল্লাহ” না বলায় তাঁকে ভবিষ্যতে কোন কাজ করবো বলার পূর্বে “ইন শা আল্লাহ” বলার গুরুত্ব সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হয়, ঐ যুবকদের ঘটনা বর্ননা করা হয়, ঐ ভ্রমনকারিদের বর্ননা দেয়া হয় এবং রুহের ব্যাপারেও জবাব দেয়া হয়।
সুরা কাহাফ সম্পর্কে কতিপয় বিষয়াবলি
এক. সুরা কাহফ এর প্রথম ১০ আয়াত যে মুখস্ত করবে তাকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করা হবে। সহিহ মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ।
দুই. জুমুয়াহর দিনে (অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর থেকে শুক্রবার মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মাঝে) সুরা কাহফ তেলাওয়াত করলে দুই জুমুয়াহর মধ্যবর্তী সময় বান্দার জন্য নুরান্বিত বা আলোকিত হয়ে থাকে। হাকিম, ইমাম বুখারি ও মুসলিম হাদিসটিকে ‘সহিহ’ সাব্যস্ত করেছেন, যদিও তাঁদের কিতাবে উল্লেখ করেননি।
তিন. সুরা নাজিল হওয়ার ঘটনা থেকে শিক্ষাঃ “ইনশা আল্লাহ” বলার গুরুত্ব!