রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়

রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়
Admin November 26, 2024 1389

বিজ্ঞান শব্দের অর্থ বিশেষ জ্ঞান। এই জ্ঞান হতে পারে কোনো বিষয়ে গবেষণালব্ধ বা শৃঙ্খলাবদ্ধ জ্ঞান, যেমনঃ পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান প্রভৃতি। আবার হতে পারে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে সুসংবদ্ধ জ্ঞান, যেমনঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি প্রভৃতি। আবার হতে পারে ধর্ম বিষয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞান, যেমনঃ ধর্মবিজ্ঞান (কুরআন, হাদীস প্রভৃতি)। কিংবা হতে পারে সংগীত বিষয়ক বিশেষ জ্ঞান, যেমনঃ সঙ্গীতবিজ্ঞান। কিংবা মন বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান, যেমনঃ মনোবিজ্ঞান। অথবা সমাজ বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান, যেমনঃ সমাজবিজ্ঞান। মোটকথাঃ যেই শাস্ত্র পাঠ করলে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান লাভ করা যায়, সেটাই বিজ্ঞান। রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়লে রাষ্ট্রের উৎপত্তি, বিকাশ ও পরিচালনা বিষয়ক বিশেষ জ্ঞান লাভ করা যায়, তাই এটাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলা হয়।


সপক্ষে যুক্তি

ইংরেজ দার্শনিক টমাস হবস, ফরাসিচিন্তা নায়ক ভ্লতেয়ার, ইংরেজ চিন্তাবিদ বেন্থাম ও হার্বাট স্পেনসার প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের পর্যায়ে উন্নিত করেছেন। এদের যুক্তি গুলি হল –

১. সুসংবদ্ধ জ্ঞান অর্জন 
অন্যান্য বিজ্ঞানের মতো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পর্যবেক্ষন অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে নাগরিকদের আচার-আচরন সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করা যায়।

২. ধারাবাহিকতা
রাষ্ট্রবিজ্ঞান জন্মলগ্ন থেকে অনেক স্তর অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে। বিষয়বস্তুর এই ধারাবাহিকতার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাকিয়াভেলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলেছেন।

৩. বিজ্ঞান বিশ্লেষণ মূলক
বিজ্ঞানের অনেক কিছুই বিশ্লেষণ মূলক অর্থাৎ যুক্তি নির্ভর। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকেও বিশ্লেষণ করা যায় তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলতে বাধা নেই।

৪. সাধারণ সূত্র প্রতিষ্ঠা
যে নিয়ম বা সূত্রগুলি রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে প্রযুক্ত হতে পারে তা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জ্ঞান থেকেই প্রতিষ্ঠা করা যায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লর্ড ব্রাইস বলেছেন – “মানুষের আচার-আচরণ জটিল হলেও তার মধ্যে একটা সামঞ্জস্য লক্ষ করা যায়”।

৫. তত্ত্ব ও তথ্যের গুরুত্ব 
সমাজ বিজ্ঞানের একটি বিশেষ স্তরে রাষ্ট্র কেন জন্মলাভ করেছিল তা শুধু তত্ত্বের সাহায্যে গ্রহণ করা হয়নি, ঐতিহাসিক সাক্ষ প্রামানের ও সাহায্য গ্রহণ করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে কার্ল মার্কস ও এঙ্গেলস-এর ঐতিহাসিক চিন্তা ভাবনা গুরুত্বপূর্ন।