অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী
Admin March 01, 2025 145
অস্ট্রেলিয়া—প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উন্নতমানের শিক্ষা ও বহুত্ববাদী সংস্কৃতির দেশ। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ করেন: কেউ উচ্চশিক্ষা, কেউ বা পর্যটন, আবার কেউ কর্মসংস্থানের জন্য। তবে এই ভ্রমণের প্রথম ধাপ হলো সঠিক ভিসা নির্বাচন ও আবেদন করা। আর ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো “অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী“। অনেকেই জানতে চান, “কত টাকা ফি লাগবে?”, “ভিসার ধরনভেদে ফি-এর পরিমাণ কেমন?”, “সাম্প্রতিক সময়ে কোনো পরিবর্তন আছে কি?”—এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমরা হাজির হয়েছি এই নিবন্ধে।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী

এখানে আপনি জানতে পারবেন অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ভিসার ধরন, কত ফি দিতে হবে, কীভাবে আবেদন করবেন, কী কী কাগজপত্র লাগবে এবং ভ্রমণ-উদ্দেশ্য অনুযায়ী কোন ভিসাটি আপনার জন্য সর্বোত্তম হতে পারে। পাশাপাশি আমরা সর্বশেষ আপডেটও তুলে ধরবো। লক্ষ্য একটাই—অস্ট্রেলিয়া ভিসার খুঁটিনাটি তথ্য এক জায়গায় পেতে যেন আপনাকে আর ভিন্ন কোনো রিসোর্সে ছুটতে না হয়। আসুন, শুরু করা যাক।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা প্রসেসিং এর জন্য যা যা দরকার-

১। পাসপোর্ট (নূন্যতম ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে)।
২। ব্যাংক ব্যালেন্স নূন্যতম ৫লক্ষ টাকা (জনপ্রতি) সহ বিগত ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটম্যান্ট ও সলভেন্সী সার্টিফিকেট ।
৩। ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ইংরেজীতে অনুবাদসহ নোটারী কপি, কোম্পানী প্যাড ও ভিজিটিং কার্ড ইংরেজিতে।
৪। চাকরিজীবীদের জন্য অফিস থেকে এনওসি লেটার, ভিজিটিং কার্ড ও অফিসের আইডি কার্ডের কপি, স্যালারি অ্যাকাউন্ট স্টেটম্যান্ট এবং সলভেন্সী অথবা পে স্লিপ।
৫। ছবি ১ কপি 35x45mm সাইজ রঙ্গিন, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড, ম্যাট প্রিন্ট।
৬। ন্যাশনাল আইডি কার্ড- এনআইডি (যদি থাকে)।
৭। টি আই এন (টিন) সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।
৮। এসেট ডকুমেন্টস (বাড়ি, ফ্লাট, গাড়ি, ফিক্সড ডিপোজিট-এফডিআর ইত্যাদি, যদি থাকে)।
৯। স্পাউস থাকলে তার পাসপোর্ট / ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি এবং ম্যারিজ সার্টিফিকেট।
১০। সন্তান থাকলে তাদের পাসপোর্ট/ জন্ম সনদ/ ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি। অধ্যয়নরত হলে স্কুল/কলেজ/ভার্সিটি আইডি কার্ড কপি।

অস্ট্রেলিয়ার ভিসার প্রাথমিক ধারণা

অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে আপনাকে প্রথমেই বুঝতে হবে, ভিসা বলতে কেবল এক ধরনের ডকুমেন্টকে বোঝায় না। আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও সময়কাল অনুযায়ী ভিসার ধরন এবং সেই অনুযায়ী ভিসা ফি নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, কেউ হয়তো মাত্র ২-৩ সপ্তাহের জন্য পর্যটক ভিসা নেবেন, আবার কেউ দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষার্থী ভিসা বা ওয়ার্ক ভিসা নিতে পারেন। তাই “অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী” নির্দিষ্ট কোনো এক অঙ্কের বিষয় নয়; বরং ভিসার ধরন ও আবেদনের সময়কাল ইত্যাদির ওপর খরচ ভিন্ন হতে পারে।

ভিসার গুরুত্ব

আইনি অনুমোদন: অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুমোদন থাকতে হবে। মেয়াদ ও বিধিনিষেধ: ভিসার ধরন অনুযায়ী আপনার থাকার সময়সীমা ও কাজ বা পড়াশোনার সুযোগ নির্ধারিত হবে। ফি-এর পরিবর্তনশীলতা: অস্ট্রেলিয়া সরকার সময়ে সময়ে ভিসা ফি হালনাগাদ করে। তাই আগের বছরের তথ্য দেখে সিদ্ধান্ত না নিয়ে, সদ্যতম (আপডেটেড) তথ্য সংগ্রহ করা আবশ্যক।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের খুঁটিনাটি

পাসপোর্ট: বৈধতা আবেদনকৃত ভিসার মেয়াদের চেয়ে অন্তত ৬ মাস বেশি থাকতে হবে।
ব্যাংক স্টেটমেন্ট: কমপক্ষে ৬ মাসের, যেখানে পর্যাপ্ত ব্যালান্স ও লেনদেনের তথ্য দৃশ্যমান।
অনুমোদন পত্র: স্পনসর বা চাকরিদাতা থেকে অফার লেটার, COE (উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে) ইত্যাদি।
ইংরেজিতে অনুবাদ: জন্মসনদ, এনআইডি, শিক্ষাগত সনদ, বিবাহ সনদযদি এগুলো বাংলায় থাকে, তাহলে ইংরেজিতে অনুবাদ ও নোটারি করতে হবে।
মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট: নির্ধারিত চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে হেলথ পরীক্ষার ফলাফল।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স: আবেদনকারীকে অপরাধমুক্ত প্রমাণ করার জন্য অপরিহার্য।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী – একটি সারসংক্ষেপ

১. ট্যুরিস্ট ভিসা
মোটামুটি ফি: ১৫০–৩৮০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (AUD) এর মধ্যে।
নির্ভর করে: আপনি কত সময়ের জন্য ভিসা চাইছেন (৩/৬/১২ মাস)।
একবার বা একাধিকবার প্রবেশের সুযোগ (Single/Multiple Entry)।
 স্টুডেন্ট ভিসা
মোটামুটি ফি: ৬৫০–৭৫০ AUD এর আশেপাশে শুরু, তবে নতুন শিক্ষাবর্ষে সামান্য বাড়তে পারে (২০২৫ আপডেট অনুযায়ী প্রায় ৭০০–৭৮০ AUD)।
পারিবারিক সদস্য থাকলে: অতিরিক্ত প্রতি সদস্যের জন্য পৃথক ফি প্রযোজ্য।
 স্কিলড ওয়ার্ক ভিসা
প্রাথমিক ফি: প্রায় ৪,০০০–৫,০০০ AUD (প্রধান আবেদনকারী)
পারিবারিক সদস্য বা সঙ্গী যুক্ত হলে: যুক্ত ফি আরোপিত হয়।
এই ভিসার ফি তুলনামূলকভাবে বেশি, কারণ এটি সরাসরি স্থায়ী বসবাসের পথে নিয়ে যেতে পারে।
 পার্টনার বা স্পাউস ভিসা
আনুমানিক ফি: ৭,৮৫০–৮,০০০ AUD পর্যন্ত হতে পারে (প্রধান আবেদনকারী)।
স্পাউস ভিসার ফি সাধারণত অনেক বেশি; এটি দুই ধাপে (প্রথমে অস্থায়ী ও পরে স্থায়ী) হতে পারে।
৫। টেম্পোরারি গ্রাজুয়েট ভিসা
আনুমানিক ফি: ১,৭০০–১,৮০০ AUD
স্টুডেন্ট ভিসা শেষ হওয়ার পর যারা অস্ট্রেলিয়ায় থেকে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য।