অরবিট কাকে বলে

অরবিট কাকে বলে
Admin December 02, 2024 782
নিউক্লিয়াসের চারদিকে ইলেকট্রন আবর্তনের সর্বাধিক সম্ভাব্য অঞ্চলকে অরবিটাল বলে। পরমাণুতে নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ইলেকট্রন আবর্তনের জন্য কতগুলো নির্দিষ্ট শক্তি বিশিষ্ট কক্ষপথ রয়েছে তাদের প্রধান শক্তিস্তর বলা হয়, এ শক্তিস্তরই অরবিট বলা হয়।

অরবিট কাকে বলে

নিউক্লিয়াসের চারদিকে যে সুনির্দিষ্ট বৃত্তাকার কক্ষপথে ইলেকট্রন সমূহ আবর্তন করে, সেই বৃত্তাকার কক্ষপথকে অরবিট বলে। এই অরবিট হচ্ছে ইলেকট্রন আবর্তনের স্থান যেখানে পরমাণুতে উপস্থিত ইলেকট্রন গুলো পর্যায়ক্রমে আবর্তন করে থাকে।
একটি ইলেকট্রন পরমাণুর বিভিন্ন শক্তিস্তরে পরিভ্রমণ করে থাকে এবং সেই সাথে প্রয়োজন অনুযায়ী এই শক্তিস্তর থেকে স্থানান্তরিত করে থাকে।

আর ইলেকট্রন যে অঞ্চলে পরিভ্রমণ করে থাকে সেই অঞ্চলের নামে হচ্ছে অরবিট এবং ইলেকট্রনের জন্য অরবিট অনেক বেশি দরকার।
এই অরবিট এর কারণে ইলেকট্রন গুলো নিজে কক্ষপথ থেকে কখনো ছিটকে পালায় না বা সরে যায় না এবং সঠিকভাবে পরিভ্রমণ করে। আর পরমাণুর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য এবং চার্জ নিরপেক্ষ রাখার জন্য ইলেকট্রনকে পরিভ্রমণ করতে হবে যা অরবিট এর মাধ্যমে সঠিকভাবে হয়।
যদি অরবিট না থাকে তাহলে নির্দিষ্ট কোন অবস্থান থাকবে না ইলেকট্রনের যে অবস্থানে ইলেকট্রন সমূহ সর্বদা পরিভ্রমণ করবে নিউক্লিয়াসের ঘিরে।

যখন এরকম কোন নির্দিষ্ট স্থান থাকবে না ইলেকট্রন পরিভ্রমণের তখন পরমাণুর ইলেকট্রন গুলো ছিটকে অন্য স্থানে সরে বা পালিয়ে যাবে।
আর যখন ইলেকট্রন সরে যাবে অরবিট না থাকার কারণে তখন শুধুমাত্র পরমাণুর নিউক্লিয়াস থাকবে যা পরমাণুর অস্তিত্ব বিলীন করতে পারে।
ইহার দ্বারা এটি স্পষ্ট যে পরমাণুর ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসের মাঝে সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য অবশ্যই অরবিট অনেক বেশি দরকার।

পরমাণুতে অরবিটের অবস্থান

পরমাণুতে অরবিটের অবস্থান হচ্ছে নিউক্লিয়াসের বাইরে অর্থাৎ অরবিট হচ্ছে পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের দিকের অংশ। পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের দিকে অংশ হচ্ছে অরবিট এবং এখানেই ইলেকট্রন অবস্থান করে। অরবিটের পর অরবিট পর্যায়ক্রমে ইলেকট্রন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বাড়তে থাকে এবং অবশেষে পরমাণুর গঠন সম্পন্ন হয়।

বৃত্তাকার কিংবা উপবৃত্তাকার আকৃতির হয় পরমাণুর উপস্থিত নিউক্লিয়াসের আশেপাশে যে আবরণ রয়েছে সে আবরণী হচ্ছে অরবিট।
এ আবরণের মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রন পরিভ্রমণ করে থাকে এবং নিজ কক্ষপথ থেকে সরে যায় না, যা পরমাণুর অস্তিত্ব ধরে রাখে।
শুধুমাত্র নিউক্লিয়াস যারা কখনো একটি পরমাণু আমরা কল্পনা করতে পারব না কেননা পরমানু বা পদার্থের কিছু ক্ষুদ্রতম কণা রয়েছে। যে ক্ষুদ্রতম কণা গুলো দ্বারা পরমাণু সম্পূর্ণরূপে আধান নিরপেক্ষ হয় এবং সেই সাথে পরস্পরের সাথে যুক্ত হতে পারে এবং এর জন্য দরকার হবে সকল পরমাণুর কণার।
যদি লক্ষ্য করি, অরবিট না থাকার কারণে পরমাণুগুলো সম্পূর্ণরূপে ইলেকট্রন নিরপেক্ষ হবে এবং ফলস্বরূপ পরমাণু গুলো যুক্ত হতে পারবে না।

অরবিটের বৈশিষ্ট্য

অরবিট কাকে বলে এবং পরমাণুর মধ্যে অরবিট এর অবস্থান কোথায় এ বিষয় সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য জ্ঞান ইতিমধ্যে অর্জন করেছি। তবে এই অরবিট এর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা অর্বেদ নিজের কাজ সম্পন্ন করে থাকে এবং ইলেকট্রন কে পরিভ্রমন করতে সাহায্য করে।

আমরা এখানে বা এই পোস্টে যেহেতু অরবিট সম্পর্কে বিশেষ ধারণা অর্জন করতে এসেছি সেহেতু আমাদের এর বৈশিষ্ট্য দেখে নিতে হবে।
আমরা দেখে নেই, যে সকল বৈশিষ্ট্য দ্বারা অরবিট নিজের অবস্থান তৈরি করে এবং ইলেকট্রন কে পরিভ্রমণ করতে সাহায্য করে।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু বিশেষ অরবিটের বৈশিষ্ট্য সমূহের নিচে উল্লেখ করা হলো:

১ অরবিট হচ্ছে পরমাণুর প্রধান কক্ষপথ, যেটা সব সময় স্থির থাকে।
২ অরবিট হচ্ছে ইলেকট্রনের অবস্থান, যেখানে ইলেকট্রন সমূহ পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়।
৩ অরবিট কে প্রধান কক্ষপথ বলা হয়, যার মান K, L, M, N দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
৪ অরবিট সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও হ্রাস পায়।
৫ অরবিট হচ্ছে পরমাণু প্রধান অংশ যেখানে ঋণাত্মক চার্জ অবস্থান করে।

এগুলো হলো অরবিটের কিছু বৈশিষ্ট্য সমূহ এবং এই বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা আমরা অরবিটের মূল কাজ ও অবস্থান জানতে পারি। তবে এটি মনে রাখবেন যে 
 অরবিট ও অরবিটাল এই দুটির মধ্যে রয়েছে অনেক বেশি পার্থক্য এবং এরা কখনোই একই ধরনের উপাদান নয় কোনো পরমাণুর।
সুতরাং, অরবিট হচ্ছে নিউক্লিয়াস ঘিরে একটি আবরণ যে আবরণের মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রন গুলো পরিভ্রমণ করে থাকে নিউক্লিয়াসকে ঘিরে।