ওযু ভঙ্গের কারণ

ওযু ভঙ্গের কারণ
Admin October 15, 2024 445

নামাজের পূর্বশর্ত অজু করা। অজু ছাড়া নামাজ আদায় করলে সেই নামাজ হবে না। আর সুন্দরভাবে অজু করার গুরুত্ব, সওয়াব ও ফজিলত অনেক বেশি। তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার আগে অবশ্যই অজু করার চেষ্টা করবেন। অনেকেই একবার অজু করে এক বা দুই ওয়াক্তের নামাজ পড়েন। এ সময়ে বিভিন্ন কাজ করতে হয়। অনেক সময় এসব কাজের মধ্যে কখন অজু ভেঙে গেছে, সেটা বোঝা যায় না। এ জন্য কী কারণে অজু ভাঙে এবং সেগুলো কী কী, তা জেনে রাখা জরুরি।

মৌলিকভাবে অজু ভঙ্গের কারণ সাতটি

একনজরে দেখে নেওয়া যাক কারণগুলো—

১. পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন—বায়ু, প্রস্রাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাজের জন্য উঠো, তখন স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত করো এবং পদযুগল গিটসহ।

যদি তোমরা অপবিত্র হও, তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্‌ণ হও, অথবা প্রবাসে থাকো অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, অর্থাৎ স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদের অসুবিধায় ফেলতে চান না, কিন্তু তোমাদের পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০৬ )

২. রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া (হেদায়া : ১/১০)। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে যে, আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ত, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ১১০)

৩. মুখ ভরে বমি করা। এ বিষয়ে আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয় অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে বা মজি (সহবাসের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)

৪. থুতুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া। এ বিষয়ে হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি তার থুতুতে রক্ত দেখে, তাহলে থুতুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)

৫. চিত বা কাত হয়ে ঘুমানো। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিত হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙে যাবে, কেননা চিত বা কাত হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়।’ [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০২)

৬. পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে। এ বিষয়ে হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৯৩)

৭. নামাজে উচ্চ স্বরে হাসলে। এ বিষয়ে ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চ স্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। এ ছাড়া হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চ স্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে।’ (সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ৬১২)