মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ

মেট্রোরেল অনুচ্ছেদ
Admin February 02, 2025 147
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আমাদের কমবেশি সকল শিক্ষার্থীদের কেই বাংলা পরীক্ষায় কোন না কোন অনুচ্ছেদ লিখতে হয়। আপনি যদি মেট্রোরেল প্রকল্প অনুচ্ছেদটি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প অনুচ্ছেদটি তুলে ধরেছি। আশা করি অনুচ্ছেদটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি অনুচ্ছেদটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন।চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

মেট্রোরেল প্রকল্প

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ভয়াবহ যানজট ও ট্রাফিক সমস্যা দূর করার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প একটি সময়োচিত ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রায় দেড় কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ঢাকার বিপুল সংখ্যক যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে মেট্রোরেল-এর মতো গণপরিবহনই হতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা। মেট্রোপলিটন রেলের সংক্ষিপ্ত রূপ হলো মেট্রোরেল। এটি একী বিদ্যুৎচালিত পরিবহন। উড়াল সড়কের উপর স্থাপিত রেললাইনের উপর দিয়ে চলবে অধিকতর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ট্রেন। রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য হবে ২০ দশমিক ০১ কিলোমিটার। এ দীর্ঘ রুটে ১৬টি স্টেশন থাকবে। এগুলোর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত থাকবে ৩টি স্টেশন। প্রতিটি ট্রেনে ৬টি করে বগি থাকবে। প্রতিটি কামরা হবে সুপরিসর ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সেখানে যাত্রীদের জন্য থাকবে হবে মদায়ক আসন। উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচল করবে ১৪টি ট্রেন। প্রতিটি ট্রেনে ৯৪২ জন যাত্রী বসে এবং ৫৭৪ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে পারবেন। ঘণ্টায় ৩২ কিলোমিটার গতিতে শেষ গন্তব্যে পৌছতে ট্রেনের সময় লাগবে ৩৮ মিনিট। স্বয়ংক্রিয় কার্ডের মাধ্যমে যাত্রীরা মেশিনে ভাড়া পরিশোধ করবেন। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। তবে এই দেশ টি ঘনবসতিপূর্ণ জনবহুল দেশ হওয়ার কারণে এখানে যানজট একটি বড় সমস্যা। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশে মেগা প্রকল্প গুলোর মধ্যে মেট্রোরেল একটি। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে যানজট মুক্ত করতে সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যা সাধারণ মানুষের জন্য আর্শীবাদ।

মেট্রোরেল একটি বৈদ্যুতিক যান। এই মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য খরচ হয়েছে ২১হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। তার মধ্যে জাইকা দিবে ৭৫% এবং বাকি টা দিবেন সরকার। এটি উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করবে।  তার মধ্যে ১৬টি স্টেশন থাকবে। এই পথটি প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। যেহেতু এটি যানজট রোধ করার জন্য করা হয়েছে সেহেতু এই মেট্রোরেলের পথ হবে উড়ালসড়ক। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশন থাকবে। এই স্টেশন গুলো হলো উত্তরা দক্ষিণ, উত্তরা সেন্টার, পল্লবী, আইটেমটি, মিরপুর-১০, ফার্মগেট, তালতলা, কাজীপাড়া, আগারগাঁও ।

এছাড়াও বিজয় সরণি, সোনারগাঁও, জাতীয় স্টেডিয়াম, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, বাংলাদেশ ব্যাংক এসকল স্টেশন গুলো থাকবে। প্রতিটি ট্রেনে মোট ৬টি করে বগি থাকবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে চলবে ১৪টি ট্রেন। এই ট্রেন টি ১৫০০ জনের মতো যাত্রী বহন করতে পারবে। এই ট্রেনে আসন সংখ্যা রয়েছে ৯৪২ টি এবং ৫৭৪ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রতিটি বগি বেশ প্রশস্ত এবং শীততাপ নিয়ন্ত্রিত । প্রতিটি ট্রেন ৪০মিনিট পর পর ছাড়বে। যার গতি হবে ঘন্টায় ৩২ কিলোমিটার এবং এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশন যেত সময় লাগবে ৩৫ মিনিট। প্রতিটি স্টেশনে ৪০ সেকেন্ড করে থামবে। এই ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০টাকা পর্যন্ত।

এই ট্রেনটি সকল ঢাকাবাসীর সুবিধা কথা ভেবে তৈরি করা হয়েছে। শহরের বাসিন্দাদের জন্য একটি দ্রুত পরিবহন গামী যান। এটি শুধু ট্রাফিক সমস্যার সমাধান করবে তাই নয় বায়ু ও শব্দ দূষণ কমাতেও সাহায্য করবে। এমনকি হাজার হাজার মানুষের কর্ম সংস্থান হবে। এটি শুধু শহরের বাসিন্দাদের উপকারে আসবে তাই নয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

মেট্রোরেল সম্পর্কে অনুচ্ছেদ (সহজ ভাষায়)

মেট্রোরেল প্রকল্প ঢাকায় যানজটের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এই প্রকল্পের আওতায় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত একটি আধুনিক উড়াল রেলপথ নির্মাণ করা হয়, যার দৈর্ঘ্য প্রাথমিকভাবে ২১.২৬ কিলোমিটার। মেট্রোরেল ট্রেনগুলো প্রতি ৪ মিনিট পরপর চল এবং গতিসীমা ঘণ্টায় ১০০ কিমি। মেট্রোরেলের নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করা হয় ২৬ জুন ২০১৬ সালে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ছিল ৩৩ হাজার ৪৭১.৯৯ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে বাংলাদেশ সরকার, জাইকা এবং চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটির পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে দিল্লি মেট্রোরেল কর্পোরেশন। প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশন চালু হয়েছে। পুরো প্রকল্পে মোট ২৪টি ট্রেন চলে, প্রতিটি ট্রেনের ৬টি বগি। এসব বগি প্রশস্ত এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, যাতে যাত্রীরা আরামদায়ক পরিবেশে ভ্রমণ করতে পারেন। নারীদের জন্য বিশেষ বগি এবং স্বয়ংক্রিয় টিকিটিং সিস্টেমও রয়েছে। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো ৩ তলা বিশিষ্ট এবং প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ১৮০ মিটার। এই প্রকল্প ঢাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থার একটি নতুন যুগের সূচনা করছে, যা শহরের যানজট কমিয়ে সাধারণ মানুষের যাতায়াতকে আরও সহজ ও সুবিধাজনক করে তুলছে।

মেট্রোরেল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য

  • ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প এর সর্বপ্রথম কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে।
  • ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের ক্ষেত্রে মোট ঋণের পরিমাণ হল, ১৬, ৫৯৫ কোটি টাকা।
  • সর্বপ্রথম ঢাকা মেট্রোরেল এর সেবা চালু করা হয়েছিল, ঢাকা উত্তরা থেকে ঢাকা মতিঝিল পর্যন্ত।
  • প্রথম স্তরের দিকে ঢাকা মেট্রো রেল এর মধ্যে মোট ট্রেন এর সংখ্যা হবে ২৪ টি।
  • বাংলাদেশ মেট্রোরেল প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট এর পরিমাণ হলো ২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
  • ঢাকা মেট্রোরেল এর ফলে রাস্তাঘাটে যানজট এর দুর্ভোগ কমে আসবে এবং দুর্ঘটনার পরিমাণ হ্রাস পাবে।
  • ঢাকা মেট্রোরেল এর প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঋণ প্রদানকারী সংস্থার নাম হল, “জাইকা”।
  • ঢাকা মেট্রোরেল এর প্রতি এক ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করার সক্ষমতা রয়েছে।
  • ঢাকার মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন শহরে ১৬ টি পয়েন্ট এর মধ্যে মেট্রোরেল স্টেশন থাকবে।
  • এই মেট্রোরেল এর সম্পূর্ণ কার্যক্রম ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।