ক্ষমতা কাকে বলে
-6749c4a474a1c.jpg)
পদার্থবিজ্ঞানে, ক্ষমতা হলো প্রতি একক সময়ে স্থানান্তরিত বা রূপান্তরিত শক্তির পরিমাণ। আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতিতে, ক্ষমতার একক হলো ওয়াট, যা প্রতি সেকেন্ডে এক জুলের সমান। পূর্বে ক্ষমতাকে "কার্যকলাপ"-ও বলা হতো ক্ষমতা একটি স্কেলার রাশি।
ভৌগোলিক উপাদান
একটি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থার ওপর ক্ষমতা অনেকাংশ নির্ভরশীল। রাষ্ট্রের আয়তন যদি বড় হয় তাহলে শক্তি বৃদ্ধি পায়। কারণ বড় রাষ্ট্রকে শত্রুপক্ষ আক্রমণ করলেও সহজে দখল করতে পারে না। এছাড়া ভৌগোলিক অবস্থার মধ্যে জলবায়ু একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ অনুকূল জলবায়ুর জন্য অনেক সময় একটি রাষ্ট্রের কৃষিজ ফসল ভালো উৎপন্ন হয়। যার ফলে উক্ত রাষ্ট্র অর্থৈতিক দিক থেকে শক্তিশালী হয়।
জনসংখ্যা
একটি রাষ্ট্রের ক্ষমতা বা শক্তি অনেকাংশ জনসংখ্যা দ্বারা প্রভাবিত হয়। কারণ জনসংখ্যার ভিত্তিতে মানব সম্পদ গড়ে ওঠে। যদিও জনসংখ্যা বেশি হলেই যে রাষ্ট্র শক্তিশালী হবে এমন কোনো কথা নয়। জাপান কম জনসংখ্যা নিয়েও বর্তমান বিশ্বে একটি শক্তিশালী দেশে পরিণত হয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ
যে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ যত বেশি সেই দেশ তত শক্তিশালী। প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে কয়লা, কৃষিজ সম্পদ, বনজ সম্পদ, জলজ সম্পদ ইত্যাদিকে বোঝায়। প্রাকৃতিক সম্পদ দেশের মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের জোগান, উৎপাদন সামগ্রী প্রভৃতিকে প্রভাবিত করে।
শিল্পোন্নতি
শিল্পায়নকে বর্তমান বিশ্বের উন্নয়নের চাবিকাঠি বলে মনে করা হয়। অর্থাৎ একটি রাষ্ট্রকে শক্তিশালী হতে গেলে তাকে অবশ্যই শিল্পায়নে উন্নত হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পুঁজি, দক্ষ শ্রমিক, উন্নত প্রযুক্তি, প্রাকৃতিক সম্পদ ইত্যাদি।
কূটনীতি
মরগান থাউ- এর মতে, কূটনীতির গুণগত দিকটি হল ক্ষমতার উপাদানগুলোর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন। কূটনীতির ক্ষেত্রে সাফল্য ব্যতীত কোনো রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী হতে পারে না।
সামরিক শক্তি
সামরিকভাবে শক্তিশালী হলে সেই দেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ততই প্রভাবশালী হয়ে থাকে। সামরিক শক্তির গুণগত মানের উপর রাষ্ট্রের ক্ষমতা প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। কোনো দেশ সামরিকভাবে শক্তিশালী হলে তাকে শত্রুপক্ষ আক্রমণ করতে ভয় পায়।
অন্যান্য উপাদান
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ক্ষমতা বা শক্তি আরও বেশ কতগুলো উপাদানের উপর নির্ভর করে। যেমন- রাষ্ট্রের জাতীয় চরিত্র, সরকার, আন্তর্জাতিক মর্যাদা ও অবস্থান, জাতীয় আত্মবিশ্বাস ইত্যাদির ওপর।
মূল্যায়ন
একটি রাষ্ট্রের জাতীয় শক্তি নির্ধারণের ক্ষেত্রে উপরিউক্ত উপাদানগুলো যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ন। তবে একটি রাষ্ট্রের ক্ষমতা শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ অবস্থার ওপর নির্ভর করে না। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্কের উপরও অনেকসময় রাষ্ট্রের জাতীয় শক্তি নির্ভর করে।