কম্পিউটার কি? কম্পিউটার কাকে বলে?

Admin
February 16, 2024
699
কম্পিউটার (Computer) শব্দটি গ্রিক (compute) শব্দ থেকে এসেছে। Compute শব্দের অর্থ হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র।
কিন্তু এখন আর কম্পিউটারকে শুধু গণনাকারী যন্ত্র বলা যায় না। কম্পিউটার এমন যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করে। সভ্যতার বিকাশ এবং বর্তমানে তার দ্রুত অগ্রগতির মূলে রয়েছে গণিত ও কম্পিউটারের প্রবল প্রভাব।
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম কম্পিউটার আসে ১৯৬৪ সালে। পাকিস্তান পরমাণু শক্তি কমিশনের পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা-তে ১৯৬৪ সালে স্থাপিত হয় বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) প্রথম কম্পিউটার। এটি ছিল আইবিএম (International Business Machines - IBM) কোম্পানির 1620 সিরিজের একটি মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)। যন্ত্রটির প্রধান ব্যবহার ছিল জটিল গবেষণা কাজে গাণিতিক হিসাব সম্পন্নকরণ। এটি ছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম কম্পিউটার।
কম্পিউটার কাকে বলে?
কম্পিউটার (Computer) একটি ইলেকট্রনিক বর্তনী ও যান্ত্রিক সরঞ্জামের সমন্বয়ে সংগঠিত প্রোগ্রাম নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যা ডেটা গ্রহণ করে, প্রক্রিয়াকরণ করে, ফলাফল সংরক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে ফলাফল প্রদান করে।
অর্থাৎ কম্পিউটার (Computer) এমন এক ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যা ইনপুট হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডেটাসমূহ কেন্দ্রিয় প্রক্রিয়াকরণ অংশের সাহায্যে প্রক্রিয়াকরণ করে আউটপুট হার্ডওয়্যার সমূহের মাধ্যমে ফলাফল প্রদান করে।
অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুসারে, 'কম্পিউটার হলো হিসাব-নিকাশ করা অথবা অন্য কোনো যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যা তথ্য সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ এবং উৎপাদন করে।' (Electronic device for storing, analysing and producing information for making calculations, or controlling machines.)
আসলে কম্পিউটার হচ্ছে একটি ইলেকট্রনিকস যন্ত্র, যা সংরক্ষিত প্রোগ্রামের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের কার্যাবলি সম্পাদন করতে পারে। যেমন কম্পিউটার দিয়ে গাণিতিক হিসাব যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করা যায়; এমনকি যুক্তি এবং সিদ্ধান্তমূলক কাজও করা যায়। এছাড়া আমরা কম্পিউটারের সাহায্যে গান দেখতে ও শুনতে পারি এবং বিভিন্ন ধরনের গেমসও খেলতে পারি। গবেষণামূলক কাজ থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, এমনকি ব্যক্তিগত কাজেও কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
কম্পিউটারের জনক কে?
হাওয়ার্ড অ্যাইকন হচ্ছেন কম্পিউটার এর জনক কারণ তিনি সর্বপ্রথম কম্পিউটার আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তীতে চার্লস ব্যাবেজ যিনি ১৮১০ সালে প্রথম যান্ত্রিক উপায় ব্যবহার করে সংখ্যা ও সারণী গণনা করার মাধ্যমে কম্পিউটারের আধুনিক ভার্সন তৈরি করেন এজন্য আধুনিক কম্পিউটারের জনক হিসাবে চার্লস ব্যবেজ কেই স্বীকৃতি দেয়া হয়।
আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে?
আধুনিক কম্পিউটারের জনক হলো বিজ্ঞানী চার্লজ ব্যাবেজ (Charles Babbage)। চার্লজ ব্যাবেজ সর্বপ্রথম ১৮১০ সালে যান্ত্রিক উপায়ের মাধ্যমে সংখ্যা ও সারণী গণনা করার জন্য একটি যন্ত্র আবিষ্কারের বিষয় চিন্তা করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৮৩০ সালে তার কল্পিত যন্ত্রটি আবিষ্কার করেন। সেই সময় তার আবিস্কারিত যন্ত্রটি কোন প্রকার বুদ্ধিমত্তা ছাড়া শুধু মাত্র গণনার কাজ করতে পারত। মূলত তার আবিস্কারিত যন্ত্রটিকেই আধুনিক কম্পিউটরের প্রথম সংস্করণ হিসেবে গণ্য করা হয় । কিন্তু তার আর্থিক সামার্থ না থাকায় তিনি এই যন্ত্রটি পরিপূর্ণ ভাবে তৈরি করে যেতে পারে নি। তার আবিষ্কারকৃত যন্ত্রটি অনেকটা আধুনিক কম্পিউটার এর সাথে মিলে যায় বিধায় তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক হিসেবে গন্য করা হয়।
ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক কে?
জন ভন নিউম্যান (John von Neumann) একজন হাঙ্গেরীয় বংশদূত ও মার্কিন গণিতবিদ ছিলেন। জন ভন নিউম্যান (John von Neumann) কে ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক বলা হয়। জন ভন নিউম্যান (John von Neumann) কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় অপারেটর তত্ত্ব ব্যবহারের অগ্রদূত সেটতত্ত্ব, জ্যামিতি, প্রবাহী গতিবিদ্যা, অর্থনীতি, যোগাশ্রয়ী প্রোগ্রামিং, কম্পিউটার বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান সহ আরো অনেক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তার এই অসামান্য অবদানের জন্য আধুনিক কম্পিউটারের মূল স্থাপত্যকে তাঁর নাম অনুসারে ভন নিউম্যান স্থাপত্য বলা হয়।
সুপার কম্পিউটারের জনক কে?
কন্ট্রোল ড্যাটা কর্পোরেশন (সিডিসি) এর সেইমার ক্রে ১৯৬০ সালের দিকে সর্বপ্রথম সুপার কম্পিউটারের একটি ডিজাইন তৈরি করেন এবং তা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরেন। তাই সেইমার ক্রে হচ্ছেন সুপার কম্পিউটারের জনক।
কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যাবহার হয়?
নিচে কম্পিউটার এর কিছু ব্যাবহার দেয়া হলোঃ
- ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখা-লেখির জন্য।
- অফিসের যাবতীয় ব্যবস্থা।
- চিকিৎসা ও শিক্ষাক্ষেত্রে।
- গবেষণা মুলক কাজে।
- একস্থান থেকে অন্যস্থানে সংবাদ প্রেরণের জন্য।
- যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এর জন্য।
- শিল্পক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের কাজে।
- মুদ্রণশিল্পে প্রকাশনার কাজে।
- ব্যাংকিংয়ের কাজে।
- ব্যবসায়-বাণিজ্যের কাজে।
- কল-কারখানার কাজে।
- প্রকাশনার কাজে।
- সংবাদপত্র।
- টেলি কমিউনিকেশনের কাজে।
- চিকিৎসাবিজ্ঞানে।
- মহাকাশ গবেষণার কাজে।
- বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ।
- শিক্ষার কাজে।
- আবহাওয়ার কাজে।
- আধুনিক সামরিক বাহিনীতে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কম্পিউটার ব্যাবহার হয়।
- বিনোদনের জন্য যেমন ,টিভি দেখা, ভিডিও দেখা, গান বাজানো, উপস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যাবহার হয়।