দুই অক্ষরের পাখির নাম

Admin
February 28, 2025
220
জীববিজ্ঞানীদের কাছে এই পাখি সিট্টাসিনি হিসেবেও পরিচিত। সিট্টাসিনি নানা রকমের হয়ে থাকে। নানা রকমের সিট্টাসিনিকে ৮৬টি গণে এবং ৩৭২টি প্রজাতিতে বিন্যস্ত করা হয়েছে।। জীববিদ্যার শ্রেণীর অনুযায়ী সিট্টাসিনি সিট্টাসিফর্মিস বর্গের অন্তর্ভুক্ত।
বাংলাদেশে পোষা হিসেবে জনপ্রিয় পাখির তালিকা
বাংলাদেশে পোষা পাখি হিসেবে যেসব প্রজাতির পাখি পরিচিত, তাদের মধ্যে কিছু খুবই জনপ্রিয়। চলুন, এই পাখিগুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত জানি:
১. টিয়া
বিশেষত্ব: টিয়া পাখি বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় পোষা পাখি। এই পাখিরা খুব বুদ্ধিমান এবং মানুষের কণ্ঠস্বর নকল করতে পারে। টিয়া পাখির রঙিন পালক এবং চঞ্চল স্বভাব অনেক পাখি প্রেমীকে আকৃষ্ট করে। একটি টিয়া পাখি ঘরের পরিবেশকে সরব এবং আনন্দময় করে তোলে।
নাম প্রস্তাবনা:
টিয়া পাখির আরেকটি চমৎকার গুণ হলো, এরা খুবই সামাজিক প্রাণী। যদি আপনি তাদের পর্যাপ্ত সময় দেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন, তাহলে তারা আপনার প্রতি একটি গভীর স্নেহবোধ তৈরি করতে পারে। টিয়া পাখির এই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ তাদেরকে অনেকের ঘরের প্রিয় সদস্যে পরিণত করেছে।
২. ময়না
বিশেষত্ব: ময়না পাখি মানুষের কথা অনুকরণ করতে পারে এবং খুবই সামাজিক। এটি বাংলাদেশে পোষা পাখি হিসেবে বেশ পরিচিত।
নাম প্রস্তাবনা:
ময়না পাখি পালনে আপনি একটি মজার এবং আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন। এই পাখিরা খুবই জ্ঞানী এবং তারা মানুষের কণ্ঠস্বর এবং শব্দ অনুকরণ করে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এটি একটি অনন্য অভিজ্ঞতা, যা অন্য কোনো পোষা প্রাণীর সাথে তুলনা করা যায় না।
৩. কবুতর
বিশেষত্ব: কবুতর বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রচলিত পোষা পাখি। এরা সহজেই পালনযোগ্য এবং তাদের বিভিন্ন রঙ ও বৈচিত্র্যের কারণে অনেকের পছন্দ।
নাম প্রস্তাবনা: “পায়রা”, “ধবল”, “মুক্তা”।
বাংলাদেশের অনেক বাড়িতে কবুতর পালন করা হয়। এরা শুধু পোষা পাখি নয়, অনেক সময় প্রতিযোগিতার জন্যও পালন করা হয়। কবুতরের আরেকটি উল্লেখযোগ্য গুণ হলো, তারা খুবই বিশ্বস্ত এবং তারা সহজেই তাদের পথ চিনতে পারে।
৪. বাজ
বিশেষত্ব: বাজ পাখি বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে পোষা পাখি হিসেবে পালিত হয়, বিশেষ করে যারা শিকার করতে আগ্রহী তারাই বাজ পাখি পোষে থাকে। বাজ পাখির প্রখর দৃষ্টি এবং শিকারি মনোভাব তাদের অনন্য করে তোলে। এ পাখি সাধারণত ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫৫ কি:মি: বেগে আকাশে উড়ে বেড়ায় এবং শিকারের সময় এদের গতিবেগ হয় ঘন্টায় প্রায় ১১২ কি:মি: প্রায়।
নাম প্রস্তাবনা: “বাজ”, “দুর্জয়”, “বীর”।
বাজ পাখি সাধারণত শক্তিশালী এবং বীরত্বের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। এই পাখিগুলোকে পালন করতে হলে আপনার বিশেষ জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও যত্ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা সুস্থ এবং সজীব থাকে।
৫. বুলবুলি
বিশেষত্ব: বুলবুলি পাখি তার মধুর গানের জন্য পরিচিত। এটি সহজেই খাঁচায় পালন করা যায় এবং বাংলাদেশের অনেক বাড়িতে এই পাখি পোষা হয়। বুলবুলির মিষ্টি সুর আপনার মনকে আনন্দে ভরে দেবে এবং আপনার ঘরকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলবে।
নাম প্রস্তাবনা: “সুমি”, “গুগলি”, “পিউ”।
বুলবুলি পাখি খুবই বন্ধুসুলভ এবং তাদের গান শুনে আপনি কখনো একা অনুভব করবেন না। তারা আপনার সাথে একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে পারে এবং প্রতিদিন সকালে তাদের গান দিয়ে আপনাকে শুভ সকাল জানাবে।
৬. ঘুঘু
বিশেষত্ব: ঘুঘু পাখি কবুতরের মতোই পোষা পাখি হিসেবে জনপ্রিয়। এরা শান্ত প্রকৃতির এবং সহজেই খাঁচায় পালন করা যায়। ঘুঘু পাখির শান্ত ও কোমল স্বভাব তাদের পোষা প্রাণী হিসেবে আদর্শ করে তোলে।
নাম প্রস্তাবনা: “ফিরোজা”, “নীলিমা”, “শুভ্রা”।
ঘুঘু পাখি সাধারণত শান্তিপ্রিয় এবং এদের কণ্ঠ খুবই মনোরম। তারা সহজেই নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে এবং তাদের সঠিক যত্ন নিলে অনেক দিন পর্যন্ত আপনাকে সঙ্গ দিতে পারে।
৭. কাকাতুয়া
বিশেষত্ব: কাকাতুয়া পাখি বাংলাদেশের অনেক পাখি প্রেমীদের মধ্যে জনপ্রিয়। তাদের উজ্জ্বল রঙ এবং খুশিময় স্বভাবের কারণে এরা প্রিয় পোষা পাখি। কাকাতুয়া পাখি আপনার সাথে খুব সহজেই বন্ধুত্ব স্থাপন করতে পারে।
নাম প্রস্তাবনা: “পিকু”, “রাঙ্গা”, “কিকি”।
কাকাতুয়া পাখি পালনে আপনি একটি জীবন্ত এবং রঙিন সঙ্গী পাবেন। তারা আপনার সাথে খেলা করতে ভালোবাসে এবং তাদের উজ্জ্বল রঙ আপনার ঘরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। তাদের মনোমুগ্ধকর আচরণ এবং বুদ্ধিমত্তা আপনার মনকে আনন্দিত করবে।
৮. লাভবার্ড
বিশেষত্ব: লাভবার্ড ছোট আকারের হলেও অত্যন্ত সুন্দর ও বন্ধুসুলভ পাখি। এদের সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় পালন করা হয় এবং বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। লাভবার্ড তাদের মিষ্টি আচরণ এবং প্রাকৃতিক স্নেহময় আচরণের জন্য বিখ্যাত।
নাম প্রস্তাবনা: “পল্লবী”, “পারি”, “মিতালী”।
লাভবার্ড নামেই বোঝা যায়, এরা খুবই স্নেহময় এবং একে অপরের সাথে গভীর বন্ধুত্ব স্থাপন করতে ভালোবাসে। যদি আপনি এক জোড়া লাভবার্ড পালন করেন, তাহলে আপনি তাদের মধ্যে প্রাকৃতিক স্নেহের অভিব্যক্তি দেখে মুগ্ধ হবেন।
৯. কানারি
বিশেষত্ব: কানারি পাখি তার মিষ্টি গানের জন্য পরিচিত। এদের সুন্দর রঙ এবং গায়নশৈলী অনেক পাখি প্রেমীকে আকর্ষণ করে। একটি কানারি পাখি আপনার ঘরের জন্য একটি জীবন্ত এবং সুরেলা সংযোজন হবে।
নাম প্রস্তাবনা: “পিউ”, “ঝুমা”, “সুমি”।
কানারি পাখি ছোট এবং সহজেই পালনযোগ্য। তাদের সুমধুর সঙ্গীত আপনার বাড়ির পরিবেশকে আরও আনন্দময় করে তুলবে। এরা আপনার সাথে একটি সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে পারে এবং আপনার প্রতিদিনের জীবনে সুর যোগ করতে পারে।
উপসংহার
বাংলাদেশে পোষা পাখি হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পালিত হয়। উপরের তালিকায় উল্লেখিত পাখিগুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয় এবং সহজেই পালনের যোগ্য। সঠিক নাম নির্বাচন এবং যত্নের মাধ্যমে আপনি আপনার পোষা পাখিকে সুস্থ ও সুখী রাখতে পারেন। পোষা পাখির পরিচর্যা একটি বড় দায়িত্ব এবং এদের প্রতি আপনার ভালোবাসা ও যত্ন তাদের দীর্ঘস্থায়ী সুখের জন্য অপরিহার্য।