ছয় দফা গুলো কি কি

Admin
November 29, 2024
280
পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম তাৎপর্য লাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবির মধ্যে। ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে যোগদান করেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেখানে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দফাগুলো হলো
১. পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাধীন সংসদীয় পদ্ধতির সরকার। সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠান।
২. কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে মাত্র দুটি বিষয় থাকবে—প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্য সব বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
৩. সারা দেশে হয় অবাধে বিনিয়োগযোগ্য দুই ধরনের মুদ্রা, না হয় বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে একই ধরনের মুদ্রা প্রচলন করা।
৪. সব ধরনের কর ধার্য করার ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। আঞ্চলিক সরকারের আদায় করা রাজস্বের একটা নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় সরকারকে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
৫. অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার মালিক হবে। এর নির্ধারিত অংশ তারা কেন্দ্রকে দেবে।
৬. অঙ্গরাজ্যগুলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আধা সামরিক বাহিনী গঠন করার ক্ষমতা দেওয়া।
রাজনৈতিক অধিকার লাভ
ছয়দফার অন্যতম দাবি ছিল প্রাদেশিক রাজনৈতিক অধিকার লাভ। প্রদেশের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে এ অঞ্চলে পাকিস্তানি শাসকেরা সরাসরি শোষণ, দমন নিপীড়ন অধিকার হারাতো। ফলে রাজনৈতিক অধিকার অর্জনের জন্য বাংলার মানুষ আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে যার ফল ছিল মহান স্বাধীনতা।
জাতীয়তাবাদের বিকাশ
ছয়দফা বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সংগ্রামী শক্তি যোগায়। এ আন্দোলনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পূর্ণ বিকাশ ঘটে। ছয়দফা কর্মসূচি বাঙালিদের কাছে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে 'মুক্তির সনদ' হিসেবে দেখা দেয়। ইংল্যান্ডের গণতন্ত্র বিকাশে ম্যাগনাকার্টা যে ভূমিকা পালন করেছিল, ছয়দফা দাবিও বাঙালিদের স্বাধিকার অর্জনের ইতিহাসে সে ভূমিকা পালন করেছিল।