photo

Rashid Choudhury

Bangladeshi artist and sculptor
Date of Birth : 01 Apr, 1932
Date of Death : 12 Dec, 1986
Place of Birth : Faridpur District
Profession : Bangladeshi Artist And Sculptor
Nationality : Bangladeshi
রশিদ হোসেন চৌধুরী (Rashid Choudhury), যিনি রশিদ চৌধুরী নামে পরিচিত, (১ এপ্রিল ১৯৩২–১২ ডিসেম্বর ১৯৮৬) ছিলেন বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, লেখক এবং অধ্যাপক। বাংলাদেশে শিল্পচর্চার ক্ষেত্রে জয়নুল আবেদীন প্রবর্তিত উত্তর-উপনিবেশিক পর্বে সৃজনশীল ও মৌলিকত্বে তিনি ছিলেন সর্বজন প্রশংসিত ব্যক্তিত্ব। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যেও অন্যতম এবং পঞ্চাশের দশকে বাংলাদেশের আধুনিক শিল্প-আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে স্বকীয় শিল্পচর্চার সূচনা করেছিলেন।

ভারত উপমহাদেশে, বিংশ শতাব্দীর তাপিশ্রী শিল্পী হিসেবে তিনি অন্যতম অগ্রগামী। এ-মাধ্যমেই তিনি সর্বাধিক মৌলিক এবং আধুনিক শিল্পধারার চর্চাকারী হিসেবে অগ্রগণ্য। তাপিশ্রীর পাশাপাশি প্রচলিত তেলরঙ ছাড়াও তিনি কাজ করেছেন টেম্পেরা, গুয়াশ এবং জলরঙ ইত্যাদি অপ্রচলিত মাধ্যমসমূহে। দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি এবং রাষ্ট্রীয় ও সাধারণ ভবনসমূহে তাপিশ্রী মাধ্যমে বহুসংখ্যক কাজ করেছেন তিনি। এই তাপিশ্রী শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৭ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক এবং ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়।

রশিদ বিশ্বশিল্পের প্রাণকেন্দ্র মাদ্রিদ এবং প্যারিসে শিল্প বিষয়ক শিক্ষা গ্রহণ করায় তার শিল্পকর্মে পশ্চিমা আধুনিক শিল্পের আঙ্গিক এবং প্রাচ্যের দেশজ ঐতিহাসিক শিল্পের অবয়ব ও বর্ণের উল্লেখযোগ্য সমন্বয় ঘটেছে। তৎকালীন সময়ে ঢাকায় রঙের খুব আক্রা থাকলেও রং ব্যবহারে তার কার্পণ্য ছিল না। তার শিল্পদর্শনে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আধুনিক শিল্পের দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। বাংলাদেশে শিল্প আন্দোলনের পাশাপাশি শিল্প-শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলার পেছনেও রয়েছে তার বিশেষ অবদান। তার অনেক শিল্পকর্ম বর্তমানে দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং ব্যক্তিগত সংগ্রহে সংরক্ষিত রয়েছে।

জীবনী
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
রশিদ হোসেন চৌধুরী ১৯৩২ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে বাংলাদেশ) ফরিদপুর জেলার (বর্তমানে রাজবাড়ি) রতনদিয়া গ্রামের একটি জমিদার পরিবারে জন্ম নেন। তার পিতা খানবাহাদুর ইউসুফ হোসেন চৌধুরী এবং মাতা শিরিন নেসা চৌধুরাণী। শৈশবেই তাদের পরিবার স্থানান্তরিত হয়ে নিকটবর্তী বর্তমান রতনদিয়া গ্রামে চলে যায়। তার ডাকনাম কনক। তিনি নয় ভাই এবং চার বোনের একজন। তার বড় চাচা খান বাহাদুর আলীমুজ্জামান চৌধুরী তৎকালীন ফরিদপুর জেলা বোর্ডের সভাপতি ছিলেন এবং তার নামেই ফরিদপুরে আলীমুজ্জামান সেতু এবং আলীমুজ্জামান হলের নামকরণ করা হয়। তার দাদা ফয়েজবক্স ছিলেন জমিদার, তবে সরকারি আইনে সেই জমিদারি প্রথার বিলুপ্তি ঘটলে রশিদের পিতা ওকালতি পেশা বেছে নেন।

তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের শুরু হয় গ্রামের তৎকালীন পাঠশালায়। পরবর্তীকালে তিনি স্থানীয় রজনীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়, আলীমুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলকাতার পার্ক সার্কাস হাই স্কুল থেকে শিক্ষাগ্রহণ শেষে ১৯৪৯ সালে প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিকুলেশন (বর্তমানে এসএসসি) পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। সে সময়ে তাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল এনামুল হক চৌধুরীর, যার সাথে পরিচয় ছিল শিল্পী জয়নুল আবেদীন ও কামরুল হাসানের। রশিদের ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহ দেখে তাকে তৎকালীন ঢাকা সরকারি আর্ট কলেজে (বর্তমানে চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তির পরামর্শ দেন এনামুল হক। পরবর্তীকালে রশিদ ঢাকা সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন, কিন্তু অনুত্তীর্ণ হন। এরপর কিছু সময় তিনি শিল্পী জয়নুল আবেদীনের তত্ত্বাবধানে অধ্যয়নরত ছিলেন। এবং প্রায় ছয় মাস অপেক্ষার পর যোগ্যতা প্রমাণ করা সাপেক্ষে ১৯৪৯ সালে জয়নুল তাকে ঢাকা সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দেন। রশিদ ছিলেন আর্ট কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী; তার সহপাঠীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন চিত্রশিল্পী আবদুর রাজ্জাক, কাইয়ুম চৌধুরী, মুর্তজা বশীর প্রমুখ। ১৯৫৪ সালে তিনি এই ইনিস্টিটিউট থেকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। একই বছর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ মিউজিয়ামে টিচার্স ট্রেনিং সার্টিফিকেট কোর্সের অর্ন্তভুক্ত শিল্প-সমঝদারি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৭ সালে এক বছরের বৃত্তি লাভের পর মাদ্রিদের সেনত্রাল এসকুয়েলা দেস বেলেস-আরতেস দে সান ফেরনান্দো থেকে ভাস্কর্য বিভাগে এবং ১৯৬০ থেকে ১৯৬৪ সালে চার বছরের বৃত্তি লাভের পর প্যারিসের আকাদেমি অব জুলিয়ান অ্যান্ড বোজ আর্টস থেকে ফ্রেস্কো, ভাস্কর্য ও তাপিশ্রী বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন তিনি। এ-সময়ে তিনি বিখ্যাত শিল্পী জঁ ওজাম্-এর অধিনে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে ১৯৭৫ সালে, মার্কিন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত লিডারশিপ গ্র্যান্ট পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষাসফরে যান।

১৯৬০-এর দশকে
১৯৬০-এর দশকে, ফরাসি সরকারের নিকট থেকে স্নাতকোত্তর বৃত্তি লাভ করে চার বছরের জন্যে তিনি প্যারিসের আকাদেমি অব জুলিয়ান অ্যান্ড বোজ আর্টসে চলে যান। সেখানে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পর দেশে ফিরে এসে ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা শুরু করেন। একই বছর তিনিই সর্বপ্রথম ঢাকায় স্থাপন করেন তাপিশ্রী কারখানা।

১৯৭০-এর দশকে
১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রকাশিত পঞ্জিকায় "জোবরা গ্রামের বটতলা থেকে দেখা বিশ্ববিদ্যালয়" শিরোনামে রশিদ চৌধুরীর একটি স্কেচ প্রকাশিত হয়। স্কেচটি তৎকালীন চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক আবহের ঐতিহাসিক এবং নান্দনিক সাক্ষর বহন করে।

১৯৭১ সালে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে পারিবারিক নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হওয়ায় ৪ এপ্রিল রশিদ তার স্ত্রী অ্যানি এবং কন্যা রোজা ও রীতাকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে একটি মার্কিন জাহাজে পাঠিয়ে দেন ফ্রান্সের প্যারিসের উদ্দেশ্যে। প্যারিসে অ্যানির পৈতৃক বাড়ি অবস্থিত। রশিদ এসময় চরম একাকীত্বের কারণে কাব্যচর্চা শুরু করেন। রঙ-তুলি ছেড়ে ব্যক্তিগত ডায়েরি ভরে তুললেন নানা ধরনের লেখাযোখায়। প্রায় ছয় মাস ধরে স্ত্রী ও কন্যাদের ত্যাগ করে যুদ্ধ শেষ হবার তিন মাস পূর্বে ১৯৭১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি প্যারিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে পৌঁছানোর পর তিনি ফরাসি সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এসময় পাকিস্তান সরকার কর্তৃক তাকে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এ-বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে তখনকার অনুভূতি একটি টুকরো কাগজে ব্যক্ত করেন:

সরকারি রেডিও ও কাগজের মাধ্যমে রক্তপিপাসু জেনারেল ইয়াহিয়া খান বাঙালি প্রীতির তুচ্ছ নিদর্শনস্বরূপ কয়েকজন বাঙালি কবি, শিল্পী ও সাহিত্যিককে স্বর্ণপদকসহ পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন। জেনে মর্মাহত হলাম আমার নামও সেখানে ছিল। অথচ, হয়তো ঐ সময় তাদেরই হাতে বাংলার কোনো গ্রাম দাউদাউ করে জ্বলছে, নির্মম অত্যাচারের অসহ্য যন্ত্রণায় বাংলার মা-বোনেরা কান্নায় ভেঙে পড়ছে কিংবা জালিমদের মেশিনগানের মুখে হয়তো বাঙালির জীবন নিঃশেষ হচ্ছে। ... বাংলার শিল্পীর সম্মান, বাঙালির হাত থেকেই গ্রহণযোগ্য। তোমার কোনো অধিকার নেই সম্মাননার। তোমার স্বর্ণপদক তোমার মুখে ছুঁড়ে আজ একমাত্র তোমার ধ্বংস কামনা করে বাঙালি। সফল হোক জয় বাংলার।
–রশিদ চৌধুরী

১৯৭২ সালে যুদ্ধ শেষ হবার পর রশিদ চৌধুরী প্যারিস ত্যাগ করে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর সে বছরই বেসরকারি উদ্যোগে চট্টগ্রামে শিল্প-প্রদর্শনকেন্দ্র হিসেবে সর্বপ্রথম একটি 'কলাভবন' প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তিনি, যা বর্তমানে জেলা শিল্পকলা একাডেমি হিসেবে পরিচিত। একই বছর ফরাসি মনীষী আঁদ্রে মালরো চট্টগ্রামের দাম পাড়া, মোহাম্মদ আলী সড়কে অবস্থিত বর্তমান জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে এর উদ্বোধন করেন। এই কলাভবনই পরবর্তীকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী অধিভুক্ত ও নিয়ন্ত্রিত জেলাভিত্তিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচালিত হতে শুরু করে। ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম চারুকলা মহাবিদ্যালয় (বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠায় মুখ্য উদ্যোক্তা হিসেবে রশিদ চৌধুরীর ভূমিকা ছিল অন্যতম। এরপর তিনি বিভিন্ন স্থাপনা-ভবনসমূহে তাপিশ্রী এবং ফ্রেস্কোর কাজ শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি গণভবনের সার্বিক সজ্জার কাজ শুরু করলেও তা অসমাপ্ত থেকে যায়। ১৯৭৫ সালে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অবস্থিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কার্যালয়ে এবং ১৯৭৬ সালে ঢাকায় অবস্থিত ৩২ তলা বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের প্রধান কার্যালয়ে তাপিশ্রীর কাজ করেন। ১৯৭৭ সালে চারুকলায় বিশেষ করে তাপিশ্রী শিল্পে সৃজনক্ষমতার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাকে জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক প্রদান করা হয়। তিনি চারুকলা বিষয়ে একুশে পদক বিজয়ী সর্বপ্রথম চিত্রশিল্পী। ১৯৭৮ সালে সৌদি আরবের, জেদ্দায় ইসলামিক ব্যাংক ভবনে তাপিশ্রীর কাজ করেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকায় ব্যাংক অব ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ইন্টারন্যাশনালে তাপিশ্রী ও তৈলচিত্রের কাজ শুরু করেন তিনি, এবং ১৯৭৯ সালে একই ব্যাংকের চট্টগ্রাম ভবনে তাপিশ্রীর কাজ সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন
১৯৫৮ সালে গভর্নমেন্ট আর্ট ইনস্টিটিউটে (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। দুই বছর পর, ১৯৬০ সালে, রশিদ চৌধুরী আর্ট ইনস্টিটিউটে অধ্যাপনার চাকরি ত্যাগ করেন। এরপর ১৯৬৪ সালে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতার মাধ্যমে পুনরায় তার কর্মজীবনের শুরু হয়। একই বছর, ১৯৬৪ সালে ঢাকায় তিনি ঢাকায় বাংলাদেশের সর্বপ্রথম তাপিশ্রী কারখানা স্থাপন করেন। ১৯৬৫ সালে ঢাকার সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে প্রাচ্যকলা বিষয়ের প্রথম শিক্ষক হিসেবে তিনি যোগদান করেন। এ সময় ফরাসি ভাস্কর সুচরিতা অ্যানিকে বিয়ে করার কারণে ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের বিধান অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশী স্ত্রী-গ্রহণ নিষিদ্ধ থাকায় তিনি অধ্যাপনার চাকরি থেকে বহিষ্কৃত হন। এদিকে ১৯৬৮ সালে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চারুকলা শিক্ষাদানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগ চালু করা হয়। সে বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের প্রথম অধ্যাপক ও সভাপতি হিসেবে যোগদান করেন তিনি। চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজ (বর্তমানে চারুকলা অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠায়ও তিনি ছিলেন প্রধান উদ্যোক্তা। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সালে, তিনি চিত্রকলা বিষয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক পদে অত্র ইনিষ্টিটিউটে যোগদান করেন। এছাড়াও তিনি চারুকলা বিভাগের পাশাপাশি বাংলা বিভাগেও যুক্ত ছিলেন। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭০ সালে তিনি চারুকলা বিভাগের প্রথম প্রধান হিসেবে যোগ দেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠাকালে প্রথম ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ত্যাগ করার পর তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে চলে আসেন এবং ঢাকার মিরপুরে তাপিশ্রী কারখানা গড়ে তোলেন। ১৯৮৪ সালে তিনি তাপিশ্রী পল্লীর খসড়া প্রণয়ন করেন।

ব্যক্তিগত জীবন
রশিদ চৌধুরী ব্যক্তিগত জীবনে দুইটি বিয়ে করেন। প্রথমে ১৯৬২ সালে, প্যারিসের আকাডেমি অব জুলিয়ান অ্যান্ড বোজ আর্টসে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণকালীন সময়ে ফরাসি ভাস্কর সুচরিতা অ্যানির সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের দুই মেয়ে, রোজা চৌধুরী এবং রীতা চৌধুরী। ১৯৭৭ সালে, সুচরিতা অ্যানির সাথে বিচ্ছেদের পর তিনি চট্টগ্রামের বাঙালি মেয়ে জান্নাতকে বিয়ে করেন।

মৃত্যু
মাদ্রিদে প্রবাসকালে রশিদ চৌধুরী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফলপ্রসূত ১৯৮৪ সালের দিকে তিনি ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন চিকিৎসাা গ্রহণের পরও বিশেষ উন্নতি ঘটেনি তার। অবশেষে ১৯৮৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ৫৪ বছর বয়সে ঢাকায় মৃত্যু বরণ করেন শিল্পী রশিদ চৌধুরী৷ মৃত্যুঅব্দি তার জীবনদর্শন ছিল স্প্যানিশ চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসোর উক্তি শিল্পকর্ম হচ্ছে প্রেম।

Quotes

Total 0 Quotes
Quotes not found.