
Karamat Ali Jaunpuri
Indian sermonizer
Date of Birth | : | 12 June, 1800 |
Date of Death | : | 30 May, 1873 (Aged 72) |
Place of Birth | : | Jaunpur, India |
Profession | : | Indian Sermonizer |
Nationality | : | Indian |
শাহ কারামত আলী জৌনপুরী (Karamat Ali Jaunpuri) অথবা কেরামত আলী জৌনপুরী, ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দির একজন সমাজ সংস্কারক, হানাফি মাযহাবের অনুসারী ফকিহ ও সৈয়দ আহমদ বরেলবী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তরীকায়ে মুহম্মদীয়ার অন্যতম প্রচারক। তিনি ওয়াজ-নসীহত করে মানুষকে ইসলামি মূল্যবোধের প্রতি আহবান করতেন। তিনি মূলত বাংলা ও আসাম অঞ্চলে ধর্মপ্রচার করেন। তার রচিত বইয়ের সংখ্যা ৪০-এরও বেশি।
জন্ম ও বংশ
মোহম্মদ আলী মোগল সাম্রাজ্যের জৌনপুরের মোল্লাটোলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আবূ ইব্রাহীম শেখ মোহম্মদ ইমাম বখশ ছিলেন জৌনপুর কলেক্টরেটের একজন সেরেস্তাদার এবং শাহ আব্দুল আজীজ মুহদ্দিছে দেহলবীর অন্যতম শাগরেদ। কথিত আছে যে তিনি ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর সিদ্দিকের বংশধর ছিলেন। তিনি ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুন, ১২১৫ হিজরীর ১৮ মুহাররাম জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর তার বাবা তার নাম রেখেছিলেন মোহম্মদ আলী, কথিত আছে পরবর্তীতে তাঁর কারামত দেখে জনসাধারন তাকে কারামত আলী নামে অভিহিত করে। তিনি তাঁর নিজের বইসমূহে নাম লিখতেন ‘আলী জৌনপুরী’ অথবা ‘আলী জৌনপুর মশহুর (খ্যাত) কারামত আলী’।
শিক্ষাজীবন
কারামত আলী জৌনপুরী তার বাবার নিকট প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। অতঃপর মওলানা কুদরতুল্লাহ রুদলবী ও মওলানা আহমদুল্লাহ এনামীর নিকট হাদীছ শরীফ ও অন্যান্য তালীম অর্জন করেন। আঠারো বছর বয়সে কারামত আলী জৌনপুরী সুফিবাদ (আধ্যাত্মিক জ্ঞান) শাস্ত্রে আগ্রহী হয়ে রায়বরেলীতে তরীকায়ে মুহম্মদীয়ার প্রতিষ্ঠাতা হযরত সৈয়দ আহমদ বরেলবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন।
কর্মজীবন
সৈয়দ আহমদ বরেলবী ছিলেন সে যুগের বিখ্যাত মুজাহিদ। কারামত আলীও তার সাথে জিহাদে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু সৈয়দ আহমদ বরেলবী তাকে সশস্ত্র সংগ্রামের বদলে বাংলা ও আসাম অঞ্চলে ওয়াজ-নসীহত ও লেখনীর মাধ্যমে সমাজ সংস্কার ও ধর্মপ্রচারের নির্দেশ দেন। কারণ তৎকালীন সময়ে এসব অঞ্চলের সাধারণ মুসলমানরা ইসলাম ধর্মের আবশ্যকীয় কার্যক্রম যেমন নামাজ, রোজা ভুলে অন্য ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করত। পীরের নির্দেশে কারামত আলী বাংলা ও আসাম অঞ্চলে ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ পুনরুদ্ধারের কাজে লিপ্ত হন। এ দেশের ইসলামি ও আরবী শিক্ষার ক্ষেত্রে তার অনন্য ভূমিকা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাপিডিয়ায় বলা হয়েছে-
"এদেশে আরবি চর্চার ক্ষেত্রে যাঁদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে তাঁদের মধ্যে মওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী অগ্রগণ্য। তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রচারক ও সমাজ সংস্কারক। তাঁর চল্লিশটি গ্রন্থের মধ্যে দাওয়াত মাস্নূনা দোয়া-কালাম সম্পর্কীয় রচনা। আরবি ও উর্দু ভাষায় এটি রচিত। মুলাখ্খাস ও বরাহীন কাত‘ইয়্যা ফী মওলূদি খায়রিল-বরিয়্যা গ্রন্থদ্বয় মওলূদ সম্পর্কে লিখিত এবং নসীমুল-হরমায়ন গ্রন্থে ইসলামী চিন্তাধারা ও তৎসম্পর্কিত মতবিরোধ আলোচিত হয়েছে।।
ভ্রাম্যমাণ মাদ্রসা
কারামত আলী জৌনপুরীর কর্মজীবনের সিংহভাগ সময় ধর্মীয় প্রচারণামূলক কাজের স্বার্থে বাংলা ও আসাম অঞ্চলে নৌভ্রমণ করতে হতো। এ জন্য তিনি একটি ভ্রাম্যমাণ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এ মাদ্রাসাটি ছিল বড় একটি নৌকার মধ্যে। শিক্ষার্থীরা নৌকাতেই থাকতেন, কারামত আলী জৌনপুরী তাদের ব্যয়ভার বহন করতেন এবং নিয়মিত শিক্ষাদান করতেন।
সমকালীন রাজনীতিতে অবস্থান
কারামত আলী হাজী শরীয়তউল্লাহ প্রবর্তিত ফরায়েজি আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। ফরায়েজিরা ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষকে দারুল হরব হওয়ার অজুহাতে জুমা ও ঈদের নামাজ আদায় করত না। পক্ষান্তরে কারামত আলী মনে করতেন ভারতবর্ষ যদিও দারুল ইসলাম নয়, তবে দারুল হরবও নয়। বরং ভারতবর্ষ হচ্ছে দারুল আমান। কারণ ব্রিটিশরা মুসলমানদেরকে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করতে দেয়। এ বিষয়ে তিনি ফরায়েজিদের সাথে বিতর্ক করে তার মত প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন।
Quotes
Total 0 Quotes
Quotes not found.