photo

Hafiz Uddin Ahmed

Former Member of Jatiya Sangsad
Date of Birth : 29 Oct, 1944
Place of Birth : Bhola, Bangladesh
Profession : Politician
Nationality : Bangladeshi
Social Profiles :
Facebook
হাফিজ উদ্দিন আহমদ (Hafiz Uddin Ahmed) হলেন একজন বাংলাদেশী সামরিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ, ফুটবলার, দৌড়বিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ভোলা-৩ আসন থেকে তিনি পরপর ৬ মেয়েদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান।

জন্ম, শিক্ষা ও ব্যক্তিগত জীবন
হাফিজ উদ্দিন আহম্মদের জন্ম ২৯ অক্টোবর ১৯৩৯ সালে পৈতৃক বাড়ি ভোলার লালমোহনে। তার বাবার নাম আজাহার উদ্দিন আহম্মদ চিকিৎসক ছিলেন যিনি ১৯৬৩ ও ১৯৬৫ সালে দু’বার প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং বিরোধী দলের ডেপুটি নেতা হিসেবেদায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে আওয়ামীলীগের পক্ষ হতে জাতীয়পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। হাফিজ উদ্দিনের মায়ের নাম করিমুন্নেছা। চার ভাই ২ বোনের মধ্যে হাফিজ সবার বড়।

হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ ১৯৫৯ সালে ম্যাট্রিক ও ১৯৬১ সালে আইএ পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৪ সালে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৬৫ সালে এমএ ডিগ্রী অর্জন করেন।

তার স্ত্রীর নাম দিলারা হাফিজ একটি সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। তাদের দুই পুত্র শাহরুখ হাফিজ ও তাহারাত হাফিজ এবং এক কন্যা শামামা শাহরীন।

কর্মজীবন
হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ পড়াশোনা শেষ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে। ১৯৬৮ সালে কমিশন পান এবং প্রথম কর্মরত ছিলেন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ১৯৭১ সালের মার্চে হাফিজ উদ্দিন তার ইউনিটের সঙ্গে যশোরের প্রত্যন্ত এলাকা জগদীশপুরে শীতকালীন প্রশিক্ষণে ছিলেন। ২৫ মার্চের পর তাদের ডেকে পাঠানো হয় এবং ২৯ মার্চ তারা সেনানিবাসে ফেরেন। পরে যোগ দেন যুদ্ধে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ শেষ করে ভারতে যান। তিনি কামালপুর, ধলই বিওপি, কানাইঘাট ও সিলেটের এমসি কলেজের যুদ্ধে বেশ ভূমিকা রাখেন।

স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেই কর্মরত ছিলেন।

তিনি ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের খেলােয়াড় হিসেবে বিভিন্ন দেশ সফর করেন। তিনি ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়কও ছিলেন।

বিভিন্ন প্রতিযােগিতায় ঢাকা মােহামেডান স্পাের্টিং ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় দলের অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৮০ সালে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের নির্বাচিত সহ-সভাপতি ছিলেন। ফিফা’র আপিল ও ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৬৪, ১৯৬৫ এবং ১৯৬৬ এই তিন মৌসুম পূর্ব পাকিস্তানের দ্রুততম মানব ছিলেন। ১০০ ও ২০০ মিটারে রেকর্ড টাইমিংয়ে স্বর্ণ পদক জেতেন।

রাজনৈতিক জীবন
হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির মনোনয়নে ভোলা-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এর পর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-৩ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯২ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ, জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে তিনি ১৯ মার্চ ১৯৯৬ থেকে ২৯ মার্চ ১৯৯৬ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অষ্টম জাতীয় সংসদে খালেদা জিয়ার তৃতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি ১১ অক্টোবর ২০০১ থেকে ২২ মে ২০০৩ সাল পর্যন্ত পাটমন্ত্রী, ২২ মে ২০০৩ থেকে ২৯ অক্টোবর ২০০৬ পর্যন্ত পানিসম্পদমন্ত্রী এবং পরে ২৪ এপ্রিল ২০০৬ থেকে ২৮ অক্টোবর ২০০৬ পর্যন্ত বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ দলনেতা হিসেবে বেশ কয়েকটি সম্মুখযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। এর মধ্যে অন্যতম একটি যুদ্ধ হচ্ছে জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত কামালপুরের যুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ৩১ জুলাই কামালপুরে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। কামালপুর বিওপিতে ভোর সাড়ে তিনটার সময় বি ও ডি দুই কোম্পানি মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে আক্রমণ করেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। দুটি কোম্পানির মধ্যে বি কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন তিনি। ডি কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন সালাহউদ্দিন মমতাজ (বীর উত্তম)। সে সময়ে মাহবুবুর রহমানের (বীর উত্তম) নেতৃত্বে ‘এ’ কোম্পানিকে পাঠানো হয় উঠানিপাড়ায় কাটঅফ পার্টিতে যোগ দিতে। তবে বি ও ডি কোম্পানি এফইউপিতে পৌঁছানোর আগেই আর্টিলারির গোলাবর্ষণ শুরু হয়ে যায় যা এ দুটি কোম্পানি এফইউপিতে পৌঁছার পর শুরু হওয়ার কথা ছিল। এতে মুক্তিযোদ্ধারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন আর তখনই পাকিস্তান সেনাবাহিনী আর্টিলারি ও ভারী মর্টারের সাহায্যে গোলাবর্ষণ শুরু করে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর। পরবর্তীতে হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ ও সালাহউদ্দিন আমাদের দলের মুক্তিযোদ্ধাদের একত্র করে শত্রুদের আক্রমণ শুরু করেন। তুমুল আক্রমণে শত্রুরা পেছনে হটে যায়। তখনও শত্রুরা পেছনে অবস্থান নিয়ে আর্টিলারি ও মর্টারের গোলাবর্ষণ করতে থাকে। শত্রুর গোলাগুলিতে সালাহউদ্দিন মমতাজ শহীদ হন। একটু পর মর্টারের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ। এতে করে দুই কোম্পানীই নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়ে।

Quotes

Total 0 Quotes
Quotes not found.