photo

Ferdous Ahmed

Bangladeshi film actor
Date of Birth : 07 Jun, 1974
Place of Birth : Titas Upazila
Profession : Actor, Politician
Nationality : Bangladeshi
Social Profiles :
Facebook
ফেরদৌস আহমেদ (Ferdous Ahmed)  (জন্ম ৭ জুন ১৯৭৪) বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে আবির্ভূত একজন জনপ্রিয় বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র নায়ক সালমান শাহর অসমাপ্ত কাজবুকের ভিতর আগুন, এটির পরিচালক ছিলেন ছটকু আহমেদ। তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পরিচালনায় পৃথিবী আমারে চায় না। পাশাপাশি তিনি কলকাতার চলচ্চিত্রেও অভিনয় করছেন। মিট্টি নামে ২০০১ সালে একটি বলিউডের চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। ১৯৯৮ সালে তিনি চলচ্চিত্রকার বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত হঠাৎ বৃষ্টি ছবিতে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশপাশি তিনি মডেলিং, টিভি উপস্থাপনা ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে তার অনবদ্য অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত করে। এগুলো হচ্ছে হঠাৎ বৃষ্টি (১৯৯৮), গঙ্গাযাত্রা (২০০৯), কুসুম কুসুম প্রেম (২০১১), ও এক কাপ চা (২০১৪)। ফেরদৌস অভিনীত সফল চলচ্চিত্রের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টি (১৯৯৮), পৃথিবী আমারে চায় না (১৯৯৮), চুপি চুপি (২০০১), এই মন চায় যে (২০০১), সবার উপরে প্রেম (২০০২), প্রেমের জ্বালা (২০০২), বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ (২০০৩), প্রাণের মানুষ (২০০৩), চন্দ্রকথা (২০০৩), খায়রুন সুন্দরী (২০০৪), দুই নয়নের আলো (২০০৫), ফুলের মত বউ (২০০৬), গোলাপী এখন বিলাতে (২০১০), গেরিলা (২০১১) অন্যতম। এছাড়াও ফেরদৌস আহমেদ চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে, নৃত্য অনুষ্ঠানের প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।

শিক্ষা জীবন
ফেরদৌস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন।

মডেলিং
চলচ্চিত্রে আসার আগে ফেরদৌস র‍্যাম্প মডেল হিসেবে কাজ করেছেন ফ্যাশন সেক্টরে। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের হাত ধরে র‍্যাম্পে তার হাতেখড়ি। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বড় বড় বেশ কিছু ফ্যাশন শোর র্যা ম্পিংয়ে তিনি অংশ নেন। ২০১৫ সালে আরএফএল-এর ব্র্যান্ড এম্বাসেডর হন এবং তিনটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেন।

অভিনয় জীবন
১৯৯৯ - ২০০৫
ফেরদৌস আহমেদ, চলচ্চিত্র জগতে পরিচিত পান ফেরদৌস হিসেবে। তার চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে প্রয়াত নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবু এর হাত ধরে। তখন আমির হোসেন বাবু পরিচালক হিসেবে নাচভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র নাচ ময়ূরী নাচ নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। একসময় তিনি আকর্ষণীয় দৈহিক সৌষ্ঠবের অধিকারী ফেরদৌসকে আবিষ্কার করেন। কিন্তু আমির হোসেন বাবু সেই ছবির কাজ আর শুরু করতে পারেননি। প্রয়াত জননন্দিত অভিনেতা সালমান শাহের এর আকস্মিক মৃত্যুর কারণে তার অভিনীত অসমাপ্ত একটি ছবিতে কাজ করতে ফেরদৌস প্রথম ক্যামেরার সামনে আসেন ১৯৯৭ সালে ছটকু আহমেদ পরিচালিত বুকের ভিতর আগুন ছবির মাধ্যমে। সালমান শাহের মৃত্যুর পর ছটকু আহমেদ ছবির গল্পে কিছুটা পরিবর্তন করে ফেরদৌসকে কাজ করার সুযোগ দেন। এরপর ১৯৯৮ সালে এককভাবে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত পৃথিবী আমারে চায় না ছবির মধ্য দিয়ে। এরপর তিনি ব্যাপকভাবে আলোচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেন ১৯৯৮ সালে ভারতের চলচ্চিত্রকার বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত যৌথ প্রযোজনার ছবি হঠাৎ বৃষ্টি ছবির মাধ্যমে। এই ছবির অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।  এরপর থেকে তিনি একাধারে বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। এছাড়াও মিট্টি নামের একটি বলিউড এর হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০০১ সালে বাসু চ্যাটার্জির পরিচালনায় চুপি চুপি ও ২০০২ সালে দেবাশিষ বিশ্বাসের টক ঝাল মিষ্টি ছবি দুটিতে অভিনয় করেছেন। ২০০৩-এ ঔপন্যাসিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ুন আহমেদের চন্দ্রকথা ছায়াছবিতে অভিনয় করেন। ২০০৪ সালে অভিনয় করেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত ব্যাচেলর ও ও আমজাদ হোসেনের নির্মিত কাল সকালে ছবিতে। ২০০৫ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর সাহিত্যের প্রথম চলচ্চিত্রায়ন মৌসুমী-গুলজার এর মেহের নেগার এবং মতিন রহমান পরিচালিত জাতীয় কবির সাহিত্যের দ্বিতীয় চলচ্চিত্রায়ন রাক্ষুসী ছবিতেও তিনি জ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী রোজিনার বিপরীতে চমৎকার অভিনয় করেছেন।

২০০৬ - ২০১০
২০০৬ সালে জনপ্রিয় অভিনেত্রী কবরী পরিচালিত প্রথম ছবি আয়না-তেও তিনি অভিনয় করেছেন। একই বছর চলচ্চিত্রকার দিদারুল আলম বদলের প্রযোজনায় দুটি ছবিতে তিনি কাজ করেছেন। প্রথমটি হুমায়ুন আহমেদ-এর জনপ্রিয় উপন্যাস নন্দিত নরকে অবলম্বনে একই শিরোনামে নির্মিত চলচ্চিত্র নন্দিত নরকে, এটি পরিচালনা করেছেন বেলাল আহমেদ। দ্বিতীয়টি দিদারুল আলম বাদলের নিজের পরিচালনায় না বোলনা, এটিতে তিনি প্রথম ও শেষ অংশে একটি বিশেষ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ২০০৭-এ বহুল আলোচিত গ্রাম বাংলার পটভূমিতে নির্মিত খায়রুন সুন্দরী চলচ্চিত্র অসাধারণ ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করে, এটি পরিচালনা করেছেন এ কে সোহেল। ২০০৮-এ খ্যাতনামা চলচ্চিত্রকার আবু সাইয়ীদ এর রূপান্তর চলচ্চিত্রে তিনি অসাধারণ অভিনয় করেন। ২০০৯-এ সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড এর গঙ্গাযাত্রা ছবিতে একজন ডোমের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এর শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার লাভ করেন (যৌথভাবে চঞ্চল চৌধুরী'র সাথে মনপুরা ছবির জন্য) এবং ওয়াকিল আহমেদের কে আমি চলচ্চিত্রে একটি আইটেম গানে অভিনয় করেন। ২০১০ সালে তিনি বেশ কয়েকটি আলোচিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেন-এর গোলাপী এখন বিলাতে, খিজির হায়াৎ খান পরচালিত ক্রীড়া ভিত্তিক চলচ্চিত্র জাগো অন্যতম।

২০১১ - ২০১৫
২০১১ সালে মুক্তি পায় নাসির উদ্দিন ইউসুফ এর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র গেরিলা, মুশফিকুর রহমান গুলজার পরিচালিত কুসুম কুসুম প্রেম এবং শাহীন-সুমন এর কে আপন কে পর ছবিতে বিশেষ অতিথি একটি গানে দৃশ্যে এবং ভারতীয় বাংলা ফাইটার  ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। কুসুম কুসুম প্রেম ছায়াছবিতে অভিনয় করে অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার মনোনীত হন। ২০১২ সালে নিজের প্রথম প্রযোজনায় নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল পরিচালিত এক কাপ চা এবং দ্বিতীয়টি বাসু চ্যাটার্জি পরিচালনায় হঠাৎ সেদিন-এ অভিনয় করেন। ২০১২ সালে খোকাবাবু নামের ভারতীয় ছবিতেও তিনি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত এমনোতো প্রেম হয় এবং জাকির হোসেন রাজুর যুগে যুগে তুমি আমারই ছবিতে অভিনয় করেন।  হঠাৎ সেদিন ২০১২ সালে মুক্তি পেলেও এক কাপ চা নির্মাণ বিলম্বের কারণে ২০১৪ সালে মুক্তি পায়। এই ছায়াছবির জন্য পান তার অভিনয় জীবনের চতুর্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।  এছাড়া একই বছর মুক্তি পায় মুরাদ পারভেজ পরিচালিত বৃহন্নলা, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত গল্প অতৃপ্ত কামনা অবলম্বনে প্রিয়া তুমি সুখী হও ও চার অক্ষরের ভালবাসা। বৃহন্নলা ছায়াছবির জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার-এর তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী হিসেবে মনোনীত হন। ২০১৫ সালে অভিনয় করেন মানিক মানবিকের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ছায়াছবি শোভনের স্বাধীনতা, প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত শেষ চলচ্চিত্র দুই বেয়াইয়ের কীর্তি, নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ রচিত উপন্যাস অবলম্বনে মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ছায়াছবি অনিল বাগচীর একদিন  ও ডঃ অরূপরতন চৌধুরী পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র স্বর্গ থেকে নরক-এ।

২০১৬ - বর্তমান
২০১৬ সালে মুক্তি পায় মেহের আফরোজ শাওন পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র কৃষ্ণপক্ষ, মুশফিকুর রহমান গুলজার পরিচালিত মন জানেনা মনের ঠিকানা। এছাড়া অভিনয় করেন ইন্দো-বাংলা যৌথ প্রযোজনার ছায়াছবি বাদশা - দ্য ডনতে। এতে আরও অভিনয় করছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা জিৎ ও বাংলাদেশী নুসরাত ফারিয়া মাজহার। এছাড়া অভিনয় করবেন মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ভালবাসবোই তো ও কতদিন দেখিনি তোমায় চলচ্চিত্রে। দুই ছায়াছবিতেই তার বিপরীতে থাকবেন শাবনূর। ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা পরিচালিত রঙ কেন বিশ্ব রঙ।মুক্তির অপেক্ষায় জিএম ফুরুখ পরিচালিত যদি একটু সময় পেতাম চলচ্চিত্র ও শুদ্ধমান চৈতন পরিচালিত দামপাড়া চলচ্চিত্র।

পারিবারিক জীবন
ফেরদৌস ২০০৩ সালে ৯ ডিসেম্বর তানিয়া ফেরদৌসকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান। ছেলে নুজহাত ফেরদৌস ও মেয়ে নুজরান ফেরদৌস।

চলচ্চিত্রের তালিকা
মূল নিবন্ধ: ফেরদৌস আহমেদ অভিনীত চলচ্চিত্র
  • প্রযোজক
  • হঠাৎ সেদিন (২০১২)
  • এক কাপ চা (২০১৪)
  • টেলিভিশন
  • টেলিভিশন উপস্থাপক
  • মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার - ২০০৯
  • পুরস্কার ও সম্মাননা
  • জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

  • বিজয়ী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - হঠাৎ বৃষ্টি (১৯৯৮)
  • বিজয়ী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - গঙ্গাযাত্রা (যৌথভাবে চঞ্চল চৌধুরী'র সাথে মনপুরা ছবির জন্য) (২০০৯)
  • বিজয়ী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - কুসুম কুসুম প্রেম (২০১১)
  • বিজয়ী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - এক কাপ চা (২০১৪)
  • বাচসাস পুরস্কার
  • বিজয়ী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - গঙ্গাযাত্রা (২০০৯)
  • মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার
  • মনোনীত: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (পুরুষ) (দর্শক জরিপ) - গেরিলা (২০১১)
  • মনোনীত: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (পুরুষ) (দর্শক জরিপ) - হঠাৎ সেদিন (২০১২)
  • মনোনীত: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (পুরুষ) (দর্শক জরিপ) - বৃহন্নলা (২০১৪)

Quotes

Total 0 Quotes
Quotes not found.