অশ্বিন গাথা (Ashvin Gatha) হলেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আন্তর্জাতিক ফটোসাংবাদিক, বিজ্ঞাপন এবং সম্পাদকীয় ফটোগ্রাফার।

অশ্বিন গাথা ১৯৪১ সালের ৫ ডিসেম্বর গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার শৈশবকাল একটি অনাথ আশ্রমে অতিবাহিত করেন যেখান থেকে, ১৪ বছর বয়সে তাকে তার চাচা, একজন পরমাণু বিজ্ঞানী দত্তক নিয়েছিলেন। আশ্বিন ২ বছর বয়সে তার সাথে সিঙ্গাপুরে চলে আসেন। সেখানে, তিনি একটি সংবাদপত্রের প্রতিযোগিতা জিতেছিলেন এবং তার চাচার বাগানে একটি বক্স ব্রাউনি দিয়ে তৈরি করা বিড়াল এবং কিছু হাঁসের ছবি নিয়ে তিনি একটি কাজিনের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন এবং পুরষ্কারের সাথে তিনি তা করতে সক্ষম হন। একটি ব্যবহৃত ১২০ ক্যামেরা কিনুন, তারপরে মামিয়া "পেশাদার" ক্যামেরায় স্নাতক হন। তিনি তার পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও ফটোগ্রাফার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

অশ্বিন মুম্বাই ফিরে আসেন। দিনে ৫ টাকা সামান্য আয় থেকে, তিনি মাসে একটি রঙিন ফিল্ম কেনার জন্য ৪০ শতাংশ সঞ্চয় করেছিলেন। তিনি একটি পোর্টফোলিও একত্রিত করেন এবং ছোট অ্যাসাইনমেন্ট পেতে শুরু করেন। তিনি ইভস উইকলিতে প্রধান ফটোগ্রাফার হিসেবে নিয়োগ পান এবং তার ভাইয়ের মাধ্যমে শোভা দেকে তার সাথে ম্যাগাজিনের একটি প্রচ্ছদ সহ বেশ কিছু ফিচার তৈরি করার জন্য নিয়োগ দেন।

এয়ার ইন্ডিয়া তাকে ভাড়া করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথ দিয়েছিল এবং বিমানে তিনি শিল্প পরিচালক টনি প্যালাডিনোর সাথে দেখা করেছিলেন, যার কাছ থেকে গাথা আরও কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি নিউইয়র্কে দুই বছর বসবাস করেন, বিজ্ঞাপন সংস্থা এবং ফ্যাশন হাউসে কাজ করেন এবং ১৯৬৩  সালের মার্চ ওয়াশিংটন ফর জবস অ্যান্ড ফ্রিডম এবং ১৯৬৯ উডস্টক মিউজিক ফেস্টিভ্যাল কভার করেন। তিনি জাতিসংঘ এবং C.A.R.E এর জন্যও কাজ করেছেন। তাকে দক্ষিণ ভারতে তাদের স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে একটি ফিচার স্টোরি তৈরি করতে পাঠানো হয়েছিল।

তিনি নিউইয়র্কের ফটোগ্রাফি সার্কেলে পরিচিত হয়ে উঠলে, কোডাক কোম্পানি গাথাকে রচেস্টারে তাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য আমন্ত্রণ জানায়, রঙিন ফটোগ্রাফির প্রশিক্ষণ দেয়। তাঁর কাজ শীঘ্রই তাদের ম্যাগাজিন এবং প্রচার সামগ্রীতে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৭০ সালে পপুলার ফটোগ্রাফিতে তার কাজের একটি ফোলিও প্রকাশিত হয়, তারপরে ১৯৭৩ সালের জানুয়ারিতে লে নুভেউ ফটোসিনেমায়। এ সময় তিনি লন্ডনের নৃত্যশিল্পী ফ্লোরার সঙ্গে দেখা করেন। তারা ১৯৭১ সালে বিয়ে করেছিল, তাদের একটি মেয়ে ইয়ান্থে ছিল এবং লন্ডনে থাকতেন। তারা একসাথে নাচ, মাইম এবং ফটোগ্রাফির সমন্বয়ে মাল্টিমিডিয়া শো তৈরি করে; তাদের চলচ্চিত্র "দেবদাসী"-এর জন্য সেটিং ছিল ওড়িশার কোনারকের সূর্য মন্দির। একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে ফ্লোরার কর্মজীবন এবং ফটোগ্রাফার হিসেবে অশ্বিনের কর্মজীবন তাদের আলাদা করে নিয়ে যায় এবং অবশেষে তারা আলাদা হয়ে যায়, তিনি ফ্লোরা দেবীকে তার মঞ্চের নাম হিসেবে গ্রহণ করেন। অশ্বিন ১৭ মার্চ ২০১৫ সুইজারল্যান্ডে মারা যান

১৯৮০ এর দশক থেকে, গাথার প্রদর্শনীগুলি থিমিকভাবে রঙ দ্বারা সংগঠিত হয়েছে এবং ইউরোপ, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রদর্শিত হয়েছে। ১৯৮২ সালের প্রথম দিকে তিনি ফটোগ্রাফারস গ্যালারি এবং বারবিকান আর্ট সেন্টারে একটি গ্রুপ শো ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া: ফটোগ্রাফি ইন ইন্ডিয়া এ অন্তর্ভুক্ত হন। তারপরে, সেপ্টেম্বর/অক্টোবর ১৯৮২ সালে, তিনি জেনেভার কাছে সিওনের গ্যালারী লে ভিউক্স জ্যাকব-এ ফ্লোরার নাচের জন্য একটি প্রদর্শনী এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল-ছবি এবং শব্দের পটভূমি দেখান।

১৯৯০ এর দশক থেকে তিনি গাথা সুইজারল্যান্ডে অবস্থান করেন, অনুষ্ঠানে ভারতে ফিরে আসেন, যেখানে ১৯৯৫ সালে তিনি মুহিলে পারিখ সেন্টার, মুম্বাইতে একটি কর্মশালা উপস্থাপন করেন।

পিরামল আর্ট গ্যালারির কিউরেটর মুকেশ পারপিয়ানি, ২০০৯ সালের একটি প্রদর্শনী যাতে গাথা অন্তর্ভুক্ত ছিল, তাকে প্রফুল্ল প্যাটেল, এ এল সাইদ, আর আর ভরদ্বাজ, জ্যোতি ভাট, টি কাশিন, তরপদ ব্যানার্জী, প্রাণলাল প্যাটেলের মধ্যে ভারতীয় ফটোগ্রাফির অন্যতম গডফাদার বলে অভিহিত করেছেন। এবং জন আইজ্যাক।