photo

Abdul Quader Molla

politician
Date of Birth : 14 Aug, 1948
Date of Death : 12 Dec, 2013
Place of Birth : Faridpur
Profession : Politician
Nationality : Bangladeshi

আব্দুল কাদের মোল্লা (১৪ আগস্ট ১৯৪৮ – ১২ ডিসেম্বর ২০১৩) ছিলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের  সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ও সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামিক রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল   নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। তিনি জামায়াতে ইসলামী  সমর্থনে ১৯৮৬ ও ১৯৯৬ সালে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে দুইবার সংসদ নির্বাচনকরে পরাজিত হন।

২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি   কাদের মোল্লাকে মানবতাবিরোধী ও  জন্য আনীত ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে দোষী সাব্যস্ত করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্বাধীনতাবিরোধী বাহিনী   সদস্য মোল্লাকে ৩৪৪ জন নিরীহ ব্যক্তি হত্যা  ও অন্যান্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। 

এই রায়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকার শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে। গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। এর ফলশ্রুতিতে ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ শুরু হয়  এবং এর অনুসরণে একসময় দেশটির অনেক স্থানেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের আরো একটি দাবি ছিল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রেখে ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস (সংশোধন) বিল, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। ৩ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ তার সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে এবং ৪ঠা মার্চ কাদের মোল্লার পক্ষ থেকে রায়ের বিরুদ্ধে তাকে খালাস দেওয়ার জন্য আপিল করা হয়। ১লা এপ্রিল আপিলের শুনানি শুরু হয় এবং শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালত মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন করাদণ্ডের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ডাদেশের নির্দেশ দেন।  উল্লেখ্য, এটিই মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দণ্ডের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে করা আপিলের প্রথম রায়। 

প্রারম্ভিক জীবন 

আব্দুল কাদের মোল্লা ১৯৪৮ সালে ফরিদপুরের আমিরাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আমিরাবাদ ফজলুল হক ইনস্টিটিউট থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ১৯৬৬ সালেফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নের সময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র রাজনৈতিক শাখা  যোগ দেন এবং পরবর্তীতে কলেজ শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৮ সালে তিনি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং একই বছর স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন করার জন্য ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তিনি ইসলামি ছাত্র সংঘের  শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। 

তবে ফাঁসির রায় বাস্তবায়নের আগের দিন তার সন্তানদের দাবি অনুসারে, কাদের মোল্লা ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। 

রাজনৈতিক জীবন 

১৯৭১ সালে জামায়াত নেতারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে কারণ তারা বিশ্বাস করত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশকে ভাগ করে আলাদা করলে এটি   বিরুদ্ধে যাবে। সুতরাং   সদস্য হিসেবে কাদের মোল্লা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আধাসামরিক বাহিনী   যোগ দেন। কিন্তু বাংলাদেশ যুদ্ধে জয় লাভ করে স্বাধীনতা অর্জন করে ও নতুন সরকার রাজনীতি থেকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৭৫ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি   সেনাবাহিনীর একদল সদস্যের হাতে নিহত হওয়ার পর, নতুন সরকার জামায়াতকে পুনরায় রাজনীতি করার অনুমতি প্রদান করে। কাদের মোল্লা দলে সক্রিয় হতে থাকেন। তিনি দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন  তার জনপরিচিতির জন্য তিনি বাংলাদেশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন। 

গ্রেফতার 

২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর কাদের মোল্লাসহ কয়েকজন জামায়াত নেতার বিরোদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়। ২০০৮ সালে তার বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় আরো একটি মামলা হয়। ১৩ জুলাই, ২০১০ তারিখে কাদের মোল্লাকে পল্লবী থানা এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। 

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল তার বিরোদ্ধে যুদ্ধাপরাধ অভিযোগের তদন্ত শুরু করে এবং ২০১১ সালের ১ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের এবং সর্বোপরি মানবতাবীরোধী অপরাধের অভিযোগ আনে রাষ্ট্রপক্ষ। ২৮শে ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নেন এবং ২০১২ সালের ২৮শে মে ট্রাইব্যুনাল-২ খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী ছয়টি অভিযোগের বিচারকাজ শুরুর নির্দেশ দেন। 

যুদ্ধাপরাধের বিচার 

১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার বিষয়ে ২০০৯ সালের ২৯শে জানুয়ারি  একটি প্রস্তাব পাশ হয়। সংসদে গৃহীত প্রস্তাবের বাস্তবায়নে সরকার বিদ্যমান   অনুযায়ী অভিযুক্তদের তদন্ত এবং বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত ঘোষণাটি আসে ২০০৯ সালের ২৫শে মার্চ। 

২০১০ সালে মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শুরু হয় এবং ২০১২ সালের মে মাসে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়।  কাদের মোল্লাকে ১৯৭১ সালে   সময় পাকিস্তানি বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সহায়তা, ধর্ষণ ও ঢাকার মিরপুর এলাকায় গণহত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার আলবদর বাহিনীর সদস্য হিসেবে তার বিরুদ্ধে ৩৪৪ জন নিরীহ মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগসমূহ রাষ্ট্রপক্ষ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের যেসব অভিযোগ আনেন সেগুলো হলো[১১][১৭], ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল তার নির্দেশে মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীরা মিরপুরে কবি মেহেরুননিসা, তার মা এবং দুই ভাইকে তাদের নিজ বাসায় হত্যা করেন। ২৯ মার্চ আরামবাগ থেকে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে অপহরণ করে নিয়ে যান এবং পাম্পহাউস জল্লাদখানায় জবাই করে হত্যা করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে কেরানীগঞ্জের ভাওয়াল খানবাড়ি এবং ঘাটারচরে শতাধিক গ্রামবাসীকে হত্যা করেন। রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশন এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে মিরপুরের আলোকদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৩৪৪ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করেন। ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীরা মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় গিয়ে লস্করের স্ত্রী, দুই মেয়ে, দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করেন এবং তাতে লস্করের ১১ বছরের এক মেয়ে ধর্ষণের শিকার হন। যেখানে কাদের মোল্লা নেতৃত্ব দেন। আদালতের রায়[উৎস সম্পাদনা]


রাষ্ট্রপক্ষ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের যেসব অভিযোগ আনেন সেগুলো হলো 

  • ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল তার নির্দেশে মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
  • ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীরা মিরপুরে কবি মেহেরুননিসা, তার মা এবং দুই ভাইকে তাদের নিজ বাসায় হত্যা করেন।
  • ২৯ মার্চ আরামবাগ থেকে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে অপহরণ করে নিয়ে যান এবং পাম্পহাউস জল্লাদখানায় জবাই করে হত্যা করেন।
  • ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা  বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে কেরানীগঞ্জের ভাওয়াল খানবাড়ি এবং ঘাটারচরে শতাধিক গ্রামবাসীকে হত্যা করেন। রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশন এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি।
  • ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে মিরপুরের আলোকদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৩৪৪ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করেন।
  • ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীরা মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় গিয়ে লস্করের স্ত্রী, দুই মেয়ে, দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করেন এবং তাতে লস্করের ১১ বছরের এক মেয়ে ধর্ষণের শিকার হন। যেখানে কাদের মোল্লা নেতৃত্ব দেন।


 

 

 

Quotes

Total 0 Quotes
Quotes not found.