ঈদুল আযহা কত তারিখে

ঈদুল আযহা কত তারিখে
Admin February 17, 2024 958
আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজ আমরা আলোচনা করব ঈদুল আযহা কত তারিখে হবে তা নিয়ে। আশা করি সঙ্গেই থাকবেন। ঈদুল আযহা কত তারিখে, ঈদ-উল-আযহা ২০২৪ সালের তারিখ কত? যারা জানতে চান তাদের জন্য এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি আজ এই নিবন্ধটি লিখছি সেই সমস্ত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য যারা ২০২৪ সালের ঈদুল আজহার তারিখ জানতে চান এবং গুগলে সার্চ করতে চান। কারণ আমরা ২০২৪ সালের কোরবানি ঈদের বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

আরবি মাস অনুযায়ী, ১০ই জ্বিলহজ্জ জুন ১৬ তারিখ। সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটি ঘোষণা করেছে যে ১৬ জুন ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। আমরা সাধারণত সৌদি আরব, কাতার, ওমানে পরের দিন ঈদুল আজহা উদযাপন করি। এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত, তাই বাংলাদেশে ঈদুল আজহা ১৭ জুন।

২০২৪ সালের ঈদুল আজহা কত তারিখ?

ঈদুল আজহা হল কোরবানির ঈদ যেখানে মুসলমানরা পশু কোরবানি করে। সৌদি আরবের পরদিন বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়, তাই এ বছর ঈদুল আজহা পালিত হবে ১৭ জুন। ৬ জুন কোরবানি ঈদের তারিখ ঘোষণা করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী এ বছর ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। প্রত্যেক মুসলমান জানেন যে সৌদি আরবে হজের পর হাজিরা পশু কোরবানি করে, তাই আপনার জানা উচিত এই বছর ঈদুল আজহা বা ঈদুল আজহা কখন।

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ঈদুল আজহা কত তারিখ?

সাধারণত আরবি চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঈদুল আজহা পালিত হয়, এ বছর আরবি চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জ্বিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উদযাপিত হবে। আর আরব দেশগুলোতে ইংরেজি জুন মাসের ১৬ তারিখে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। প্রতি বছরের মতো এবারও আরব দেশগুলোর একদিন পর বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ১৭ জুন।

ঈদুল আযহা ২০২৪ কবে?

কুরবানী ঈদ বলতে আমরা বাংলা ভাষায় ছাগলের ঈদ বুঝি। এদেশে সাধারণত পশু কোরবানি হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ বছর কোরবানির তারিখ ঘোষণা করেছে, তাই আপনারা এ বছর কোরবানির ঈদ দেখেননি। আজ ৫ জুন সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটি সৌদি আরবে কোরবানি ঈদের চাঁদ দেখতে পেরেছে, তাই সৌদি আরবে ১৬ জুন ঈদুল আজহা ঘোষণা করা হয়েছে।

বরাবরের মতো এ বছরও আরব দেশগুলোর একদিন পর ১৭ জুন বাংলাদেশে কোরবানি পালিত হবে। বাংলাদেশ সরকার সবসময় সৌদি আরবের পরের দিন ঈদ ঘোষণা করে, তাই আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে এবারের কোরবানি ঈদ বাংলাদেশে ১৭ জুন হবে।

২০২৪ কোরবানি কখন হবে?

ইসলামিক ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ২০২৪ সালের কোরবানি ঈদের তারিখে এই সংখ্যাটি প্রকাশ করেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন চলতি বছরের ১৭ জুন ঈদুল আজহা ঘোষণা করেছে। তাই আপনারা যারা কুরবানী করতে যাচ্ছেন তাদের অবশ্যই আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সময়সূচি অনুযায়ী কুরবানী করতে হবে।

প্রতিটি ঈদ সাধারণ আরবি মাসিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পড়ে যেখান থেকে আমরা ইংরেজি মাসের একটি তারিখ নির্ধারণ করি। সেই তারিখ অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ১৬ জুন এবং বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ১৭ জুন ঈদুল আজহা হবে।

কোরবানি ঈদ কবে?

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চাঁদ দেখা কমিটি ৬ জুন এক বৈঠকে বাংলাদেশের আকাশে কোরবানি ঈদের চাঁদ দেখেছে। সে অনুযায়ী ১৭ জুন বাংলাদেশে কোরবানি ঈদ হবে। তাই আপনারা যারা এ বছর কোরবানির পরিকল্পনা করছেন তারা এখনই প্রস্তুতি নিন কারণ আগামী ১৭ জুন হবে বাংলাদেশের কোরবানি ঈদ। অনেকেই প্রশ্ন করেন কোরবানির ঈদ কবে, সেই প্রশ্নের উত্তর হলো এবারের কোরবানির ঈদ হবে ১৭ জুন।

হাজীদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা

সকল হাজী হজ করতে সৌদি আরবে যাবেন, তারা তো অবশ্যই কুরবানী দিবেন। তাহলে কোরবানি করা সকল হাজীদের কাছে অনুরোধ থাকবে যথাযথভাবে পশু কোরবানি করার জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন তোমার প্রিয় জিনিস আমার নামে কোরবানি কর। সুতরাং তোমরা যারা কোরবানি কর, অন্তর থেকে কোরবানি কর এবং যা তোমাদের কাছে প্রিয় তা কোরবানি কর। সকল বাংলাদেশী মুসলিম ভাই-বোন যারা পশু কোরবানি দেবেন তাদের অবশ্যই আগে থেকে কিনে নিয়ে নিজ হাতে যত্ন নিতে হবে।

তাহলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হবেন, সেই পশুর প্রতি আপনার ভালোবাসা বাড়বে এবং পশুটি আপনার প্রিয় বস্তুতে পরিণত হবে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ পশু জবাই করা হয়, তাই যারা জবাই করা হয় তাদের অবশ্যই পশুর চামড়া ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। এই চামড়া বিক্রির টাকা গরীবদের হক, তাই আপনি গরীবদের হক আদায় করবেন।

ঈদুল আযহার তারিখ যে ভাবে নির্ধারণ করা হয়

হ্যাঁ, হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে ঈদুল আজহার কুরবানি জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিন ধরে চলে। এই তিন দিনকে বলা হয় “ইয়াওমুল আযহা” বা “ঈদের দিন”। ঈদুল আজহার কুরবানি করা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ইবাদত।

হিজরি চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সর্বোচ্চ ৭০ দিন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে ঈদুল ফিতর হয়েছিল ২ মে এবং ঈদুল আজহা হয়েছিল ২৯ জুন। এই দুই ঈদের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৭০ দিন।

মুমিনের জীবনে কোরবানি এবং ঈদুল আজহার গুরুত্ব

ঈদুল আজহা এবং কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসব মুমিনদের জীবনে অনেক গুরুত্ব বহন করে।

মুমিনের জীবনের একমাত্র আরাধনা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। কোরবানি প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কোরবানি করার মাধ্যমে মুমিনরা তাদের সম্পদ, জান-মাল, ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা সবকিছু আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে। এটি মুমিনদের অন্তরের কৃপণতা ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে এবং তাদেরকে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ভক্তিশীল করে তোলে।

কোরবানির ঈদ-পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)এর অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তার প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)কে কোরবানি করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু আল্লাহর রহমতে শেষ মুহূর্তে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি করা হয়। এই ঘটনা থেকে মুমিনরা শিক্ষা লাভ করে যে, আল্লাহর জন্য সবকিছুই ত্যাগ করা যায়।

ঈদ সম্পর্কে বর্ণিত হাদিস

رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ الْمَدِينَةَ وَلَهُمْ يَوْمَانِ يَلْعَبُونَ فِيهِمَا، فَقَالَ: مَا هَذَانِ الْيَوْمَانِ؟ قَالُوا: كُنّا نَلْعَبُ فِيهِمَا فِي الْجَاهِلِيّةِ، فَقَالَ رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: إِنّ اللّهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا: يَوْمَ الْأَضْحَى، وَيَوْمَ الْفِطْرِ.

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হিজরত করে মদীনায় আসলেন তখন মদীনাবাসীর দুটি উৎসবের দিবস ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি দিবস কী? (কী হিসেবে তোমরা এ দু’দিন উৎসব পালন কর?) তারা বলল, জাহেলিয়াত তথা ইসলামপূর্ব যুগে আমরা এ দিনদুটিতে উৎসব পালন করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে এ দুটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন- ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিত্র। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৩৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১৫৫৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২০০৬ 

ঈদুল আজহার কুরবানি করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী হল:

  • মুসলমান হওয়া
  • পূর্ণবয়স্ক হওয়া
  • বালেগ হওয়া
  • সুস্থ হওয়া
  • স্বাধীন হওয়া
  • নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া
  • নিসাব পরিমাণ সম্পদ হল, যার মূল্য সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বারো মণ রূপা বা এর সমপরিমাণ সম্পদ।
যে ব্যক্তি কুরবানি করবে, তার জন্য ঈদুল আজহার দিন সূর্য উদয় হওয়ার পর থেকে ঈদুল আজহার দিন সূর্যাস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কুরবানি করা বৈধ।