Ziaur Rahman
Bangladeshi Prime Minister
Date of Birth | : | 01 December, 1936 |
Date of Death | : | 01 March, 1981 (Aged 44) |
Place of Birth | : | Bogura |
Profession | : | Bangladeshi Prime Minister |
Nationality | : | Bangladeshi |
জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman) (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সমর্থনে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় সংবিধান লঙ্ঘন, শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের অভিযোগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তার বীর উত্তম খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তার খেতাব বাতিল করা হয়নি।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নির্মমভাবে নিহত হন। ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলা পরিচালিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জরিপে ২০ জন শ্রেষ্ঠ বাঙালির মধ্যে জিয়াউর রহমানের নাম ১৯ নম্বরে উঠে আসে।
প্রাথমিক জীবন
জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশের বগুড়া জেলার নশিপুর ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। জন্ম ও শৈশবে তার ডাক নাম ছিলো কমল। তার পিতার নাম ছিল মনসুর রহমান এবং মাতার নাম ছিল জাহানারা খাতুন ওরফে রানী। পাঁচ ভাইদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ছিলেন দ্বিতীয়। তার পিতা কলকাতা শহরে এক সরকারি দপ্তরে রসায়নবিদ রূপে কর্মরত ছিলেন। তার শৈশবের কিছুকাল বগুড়ার গ্রামে ও কিছুকাল কলকাতা নগরীতে অতিবাহিত হয়। ভারতবর্ষ বিভাগের পর তার পিতা পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি নগরীতে চলে যান। তখন জিয়া কলকাতার হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন এবং করাচি একাডেমি স্কুলে ভর্তি হন। ঐ বিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৫২ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন এবং তারপর ১৯৫৩ সালে করাচিতে ডি.জে. কলেজে ভর্তি হন। শিক্ষাজীবনে উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাগ্রহণ করায় তিনি বাংলায় কথা বলতে পারলেও সাবলিলভাবে বাংলা লিখতে ও পড়তে পারতেন না। ১৯৫৩ সালেই তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার ক্যাডেট রূপে যোগদান করেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে জিয়া
১৯৫৩ সালে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কাকুলস্থিত পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদবীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন প্রাপ্ত হন। সামরিক বাহিনীতে তিনি একজন সুদক্ষ ছত্রীসেনা ও কমান্ডো হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেন এবং স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স কোর্সে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। করাচিতে দুই বছর কর্মরত থাকার পর ১৯৫৭ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে স্থানান্তরিত হয়ে আসেন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ঐ সময়ই ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের দিনাজপুর শহরের বালিকা, খালেদা খানমের সঙ্গে জিয়াউর রহমান বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে খেমকারান সেক্টরে তিনি অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। যুদ্ধে দুর্ধর্ষ সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য যেসব কোম্পানি সর্বাধিক বীরত্বসূচক পুরস্কার লাভ করে, জিয়াউর রহমানের কোম্পানি ছিল এদের অন্যতম। এই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য পাকিস্তান সরকার জিয়াউর রহমানকে হিলাল-ই-জুরাত খেতাবে ভূষিত করে। এছাড়াও জিয়াউর রহমানের ইউনিট এই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য দুটি সিতারা-ই-জুরাত এবং নয়টি তামঘা-ই-জুরাত পদক লাভ করে। ১৯৬৬ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে পেশাদার ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগ লাভ করেন। সে বছরই তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটার স্টাফ কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে তিনি মেজর পদবীতে জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পদের দায়িত্ব লাভ করেন। এডভান্সড মিলিটারি এন্ড কমান্ড ট্রেনিং কোর্সে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানিতে যান এবং কয়েক মাস ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাথেও কাজ করেন। ১৯৭০ সালে একজন মেজর হিসেবে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং চট্টগ্রামে নবগঠিত অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পদের দায়িত্ব লাভ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর হামলা চালায়। সে রাতে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে পূর্ব পাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হন।গ্রেফতার হবার পূর্বে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে শেখ মুজিবের আদেশে আত্মগোপনে চলে যান। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকায় পশ্চিম পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের পর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করেন।
Quotes
Total 2 Quotes
আমি, মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমাণ্ডার-ইন-চিফ, শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি - জিয়াউর রহমান
যে সব রাজনৈতিক নেতারা জনগনের কল্যানে নিজেদের নিয়োজিত না করে শুধু বিলাস বহুল জীবন যাপন করে তাদের জন্য রাজনীতি করাকে আমি কঠিন করে তুলব - জিয়াউর রহমান