-65216e694ca88.jpg)
Tipu Sultan (Journalist)
Bangladeshi Journalist
Date of Birth | : | 07 January, 1973 (Age 52) |
Place of Birth | : | Dhaka, Bangladesh |
Profession | : | Journalist |
Nationality | : | Bangladeshi |
টিপু সুলতান (Tipu Sultan) একজন বাংলাদেশী অনুসন্ধানী সাংবাদিক যিনি ২০০২ সালে সিপিজে ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড পান। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি স্থানীয় রাজনীতিবিদ কর্তৃক হামলা-মামলার শিকার হন। যা দেশি-বিদেশী মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়। বাংলাদেশের নির্যাতিত সাংবাদিক হিসেবে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন।
২০০১-এ হামলা মামলা
২০০১ সালের জানুয়ারীতে টিপু সুলতান ফেনী জেলায় কাজ করছিলেন যেখানে তিনি ওমরপুরের সুলতানা মেমোরিয়াল জুনিয়র গার্লস স্কুল-এ একটি অগ্নিনির্বাপক হামলার অনুসন্ধান করেছিলেন। তিনি স্কুলটির ওপর ওই বছরের ১৭ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশে প্রকাশ করেন। এ প্রতিবেদনে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও তৎকালিন আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারীর নাম প্রকাশ পায়। জয়নাল হাজারীর স্থানীয় ডাকনাম "ফেনীর গডফাদার" বা ফেনীর শীর্ষসন্ত্রাসী।
স্কুল ধ্বংসের প্রতিবেদনের ৮ দিন পর ২৫ জানুয়ারি, প্রায় ১৫ জন মুখোশধারীর একটি দল টিপু সুলতানকে অপহরণ করে। লাঠি-সোটা, ক্রিকেট ব্যাট এবং রড দিয়ে তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়।হামলাকারীরা তার হাত-পা জোরপূর্বক ভেঙ্গে দেয়। আক্রমণকারী বিশেষ করে তার ডান হাতের উপর লক্ষ্য করে মারধর করে। যা তিনি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরিতে ব্যবহার করতেন। টিপুর মতে, তার আক্রমণকারীরা তাকে বলেছিল, "এটা হাজারীর আদেশ।" মারধর করার পর, অচেতন হয়ে পড়লে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়া হয়।
পরদিন টিপুকে নিরাপত্তা ও চিকিৎসা প্রদানের অংশ হিসেবে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে পঙ্গু হাস্পাতালের মেডিকেল কর্মীরা জয়নাল হাজারীর হুমকির ভয়ে টিপুর চিকিৎসা প্রদান থেকে বিরত থাকে। পরে তার চিকিৎসা সম্পন্ন হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর বাংলাদেশি সাংবাদিকদের একটি দল টিপুর পক্ষ থেকে একটি আন্তর্জাতিক প্রচারণা চালান এবং উন্নত চিকিৎসার জন্যে ব্যাংকক, থাইল্যান্ডে স্থানান্তর করেন। এ প্রচারণা শেষে পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ করে তাকে বুমুংগ্রাদ হাসপাতালে অর্থোপেডিক সার্জন দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা হয়। সেখানে তিনি এক বছরের মধ্যে তার ডান হাতের ব্যবহার-ক্ষমতা পুনরায় ফিরে পান।
যদিও টিপু সুলতান তার আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার চেষ্টা করেন, তবে আদালতের আদেশের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করতে অস্বীকার করে। প্রথমদিকে পুলিশ জয়নাল হাজারী এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগটি অস্বীকার করে। ২০০১ সালের শেষের দিকে সরকার পরিবর্তনের পর পুলিশ এই হামলার তদন্ত শুরু করে। ১৬ এপ্রিল ২০০৩ সালে আক্রমণের আঠারো মাস পর হাজারীসহ তার ১২জন সন্ত্রাসীকে হামলকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। পরে ১৩ জন সন্দেহভাজন থেকে ৮জনকে গ্রেফতার করা হয়। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০০১-এ হাজারীসহ তার দল আওয়ামী লীগ বেশিরভাগ আসনে হেরে গিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়। পরে হাজারী ভিন্ন একটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন। ২০০৩ সালে তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের আদালত কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেয়। পরে তাকে পলাতক আসামী দেখিয়ে তিনি ভারতে পালিয়ে যান প্রচার হয়।
বিধান মজুমদার সুমন নামে এক আসামী এ হামলায় জড়িত থাকার দায়ে গ্রেফতার হয়। ওইসময় টিপু ও তার পরিবারকে হুমকি দেয়া হয় যে তারা যদি মামলাটি চালিয়ে যায় তবে তাদের হত্যা করা হবে; ফলে এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে তারা "জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে" চিঠি প্রেরণ করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহ্বান জানায়। টিপুর সহকর্মী বখতিয়ার ইসলাম মুন্নাকেও মামলার সাক্ষী হিসেবে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। মামলার শুনানির দিনগুলোতে মুন্না হত্যাকাণ্ডের দুটি বিষয়ের ওপর স্বাক্ষ্য দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তার বাড়িতে প্রবেশের কাছাকাছি একটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। মুন্না মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন, যদিও বোমাটি কেবল তার বাড়ির সামনের রাস্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরে তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার প্রস্তাব থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন। হাজারিকে গ্রেফতার করা হলেও রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় তাকে রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তি দেয়া হয়।
কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) অনুসারে, টিপু সুলতানের উপর আক্রমণ জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিবাদসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়।
কর্মজীবন
২০০৩ সাল নাগাদ টিপু সুলতান চিকিৎসা শেষে ঢাকায় চলে আসেন এবং বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলোতে অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি এ দৈনিকের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পুরস্কার
২০০২ সালের নভেম্বরে সুলতান সিপিজে ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ফ্রিডম পুরস্কার লাভ করেন, যা "সাহসী সাংবাদিকতার বার্ষিক স্বীকৃতি" স্বরূপ প্রদান করা হয়। তিনি ২০০১ রিপোর্টারস স্যানস ফ্রন্টিয়ার্স - ফান্ডেশন ডি ফ্রান্স অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনিত হন, যা পরবর্তীতে ইরানের রেজা আলিজানি পান।
Quotes
Total 0 Quotes
Quotes not found.