photo

Tajuddin Ahmad

Former Prime Minister of Bangladesh
Date of Birth : 23 Jul, 1925
Date of Death : 03 Nov, 1975
Place of Birth : Dardaria in Kapasia thana of Gazipur District, Bangladesh
Profession : Prime Minister, Bangladeshi Politician, Politician
Nationality : Bangladeshi, Pakistani

Tajuddin Ahmad (তাজউদ্দীন আহমদের) was a Bangladeshi politician and statesman. He led the Provisional Government of Bangladesh as its prime minister during the Bangladesh Liberation War in 1971 and is regarded as one of the most instrumental figures in the birth of Bangladesh.

১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই আজকের এই দিনে তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর থেকে ভাষার অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্ত ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তরুণ তাজউদ্দীন সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির আবদুল মান্নানকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে এমএলএ নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক ও সমাজ সেবা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশ নেন এবং কারাবরণ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।

তাজউদ্দীন আহমদ (১৯২৫-১৯৭৫) খ্রিষ্টাব্দ
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা।

১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুলাই, গাজীপুর জেলার অন্তর্গত কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৌলভী মোঃ ইয়াসিন খান এবং মাতা মেহেরুননেসা খান। ৪ ভাই, ৬ বোনের ভিতর চতুর্থ তাজউদ্দীন আহমদ।

শৈশবে পিতার কাছে আরবি শেখেন। এরপর বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের ভূলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এই বিদ্যালয় থেকে তৃতীয় শ্রেণি পাশ করে, চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন কাপাসিয়া মাইনর ইংলিশ স্কুলে। বাড়ি থেকে এই স্কুলটি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ছিল। এরপর ভর্তি হন  কালিগঞ্জ সেন্ট নিকোলাস ইনস্টিটিউশন। এরপর কিছুদিন ঢাকার মুসলিম বয়েজ হাই স্কুল লেখাপড়া করেন। সর্বশেষে সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে ভর্তি হন।

  • ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন।
  • ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে আই পাশ করেন। এই পরীক্ষায় তিনি অবিভক্ত বাংলার সম্মিলিত মেধা তালিকায় যথাক্রমে দ্বাদশ ও চতুর্থ স্থান (ঢাকা বোর্ড ) লাভ করেন।
  • ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জানুয়ারি গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।
  • ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ এবং ১৩ মার্চ সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ধর্মঘট-কর্মসূচী ও বৈঠক করেন। ২৪শে মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতারাসহ তিনি বৈঠক করেন।
  • ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে জুন প্রতিষ্ঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। এই দল প্রতিষ্ঠার তিন অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। এই বৎসরে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন-এর সাথে তাঁর বিবাহ হয়।
  • ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ (সম্মান) ডিগ্রী লাভ করেন।
  • ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের তিনি সদস্য।
  • ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী হিসেবে মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত করে পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন।
  • ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এল.এল.বি. ডিগ্রীর জন্য পরীক্ষা দেন এবং পাস করেন। এই বৎসরেই তিনি প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
  • ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই বৎসরের ৬ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে যে সর্বদলীয় নেতৃসম্মেলনে শেখ মুজিবর রহমান ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন, সেই সম্মেলনে শেখ মুজিবর রহমান-এর সাথে তিনিও যোগদান করেন। সম্মেলনের বিষয় নির্বাচনী কমিটিতে তাজউদ্দীন ছিলেন অন্যতম সদস্য। এই বছরের ৮ মে তিনি দেশরক্ষা আইনে গ্রেফতার হন।
  • ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে জেলে থাকা অবস্থাতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় নির্বাচিত হন। ৬৯’এর গণঅভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে জেল থেকে মুক্তি পান।
  • ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এই বছরের সাধারণ নির্বাচনের জন্য গঠিত আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভের পরও ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করায় শেখ মুজিবর রহমান-এর  ডাকে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়।
  • ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১ লা মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের বৈঠকে যোগদানের জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ঢাকায় আসার কথা ছিল। উল্লেখ্য, জাতীয় পরিষদের দিন ধার্য ছিল ৩রা মার্চ (বুধবার, ১৮ ফাল্গুন ১৩৭৭ বঙ্গাব্দ)। তাই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা শাসনতন্ত্র প্রণয়নের বিল চূড়ান্ত করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এই সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন
  • ১-৭ই মার্চের সরকারি প্রেসনোটে প্রকাশিত '১৭২ জন নিহত ও ৩৫৮ জন আহত হয়েছে' সংবাদের প্রতিবাদ করে- ৮ই মাত্চ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ- একে মিথ্যাচার বলে অভিহিত করেন। উল্লেখ্য এই সময়ের ভিতরে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ হতাহত হয়েছিল। এইদিন রাতে ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু'র ভাষণের ব্যাখ্যা দেন। এই ব্যাখ্যায় তিনি বলেন- এতে বলা হয়, ব্যাংকসমূহ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের ভেতরে নগদ জমা, বেতন ও মজুরী প্রদান, এক হাজার টাকা পর্যন্ত প্রদান এবং আন্তঃব্যাংক ক্লিয়ারেন্স ও নগদ লেনদেন করতে পারবে। বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় বিভাগগুলো খোলা থাকবে। সার সরবরাহ ও পাওয়ার পাম্পের ডিজেল সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। পোস্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক খোলা থাকবে। পানি ও গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে সামরিক শাসন কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত প্রেসনোটের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, প্রেসনোটে হতাহতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমিয়ে বলা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ক্ষেত্রেই গুলিবর্ষণ করা হয়েছে বলে কথিত বক্তব্য সত্যের অপলাপ। নিজেদের অধিকারের স্বপক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভরত নিরস্ত্র বেসামরিক অধিবাসীদের ওপরই নিশ্চিতভাবে গুলি চালানো হয়েছে। পুলিশ ও ইপিআর গুলিবর্ষণ করেছে বলে যে প্রচারণা করা হয়েছে তা বাঙালিদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।

    ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চ লাইট-এর মাধ্যমে গণহত্যা শুরু করে। এই সময় শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। এই সূত্রে শুরু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

আত্মরক্ষার জন্য ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় তিনি ফরিদপুর কুষ্টিয়া পথে পশ্চিম বাংলার সীমান্তে পৌঁছান। ৩১শে মার্চ তিনি ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে সাথে নিয়ে মেহেরপুর সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পদার্পণ করেন। এই সময়  মেহেরপুরের মহকুমা শাসক তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী তাঁকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেন। এই সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মহাপরিদর্শক গোলক মজুমদার তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে যথোপযুক্ত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। সীমান্তের ওপারে তখন বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্য, বাঙালি পুলিশ, আনসারের সদস্যরা জড় হয়েছিল। এঁদের নিয়ে তিনি মুক্তিফৌজ গঠনের উদ্যোগ নেন। এক্ষেত্রে তিনি বিএসএফ এর সাহায্য চাইলে, তৎকালীন বিএসএফ প্রধান তাকে বলেন যে, মুক্তি সেনা প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রপ্রদানের জন্য ভারত সরকারের কোন নির্দেশ নেই। এরপর তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী'র সাথে দেখা করার জন্য দিল্লী যান। দিল্লীতে তাঁর সাথে ভারত সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়। এসময় তিনি উপলব্ধি করেন যে, ভারত সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পেতে হলে একটি সরকারী বৈধতা বা স্বীকৃতি থাকা প্রয়োজন। তখনই তিনি প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করেন। এরপর ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করে জানান যে, পাকিস্তানী আক্রমণ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ২৫/২৬ মার্চেই বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করে সরকার গঠন করা হয়েছে। শেখ মুজিব সেই স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রেসিডেন্ট এবং মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকে যোগদানকারী সকল প্রবীণ সহকর্মীই মন্ত্রীসভার সদস্য। মুজিবের গ্রেফতার ছাড়া তখন পর্যন্ত দলের অন্যান্য প্রবীণ নেতা-কর্মীর খবর অজানা থাকায় সমাবেত দলীয় প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শক্রমে দিল্লির উক্ত সভায় তাজউদ্দীন নিজেকে প্রধানমন্ত্রীরূপে তুলে ধরেন। ঐ বৈঠকে তাজউদ্দীন আহমদ ইন্দিরা গান্ধীর কাছে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের জন্য অনুরোধ করেন। ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, উপযুক্ত সময়ে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হবে। এভাবেই অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের ধারণার সূচনা। ৪ঠা এপ্রিল দিল্লীতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাজউদ্দীনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়।

১০ই এপ্রিল নির্বাচিত সাংসদগণ আগরতলায় একত্রিত হয়ে এক সর্বসস্মত সিদ্ধান্তে সরকার গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এই সরকার স্বাধীন সার্বভৌম "গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার"। স্বাধীনতার সনদ (Charter of Independence) বলে এই সরকারের কার্যকারিতা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত হয়। ১১ এপ্রিল তাজউদ্দীন বেতারে ভাষণ দেন।

এরই সূত্র ধরে ১৭ই এপ্রিল ৭১ মেহেরপুর মহকুমার ভবেরপাড়া গ্রামে বৈদ্যনাথ তলায় "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার" আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির এই সরকারের মন্ত্রী পরিষদ সদস্যদের শপথ পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পীকার অধ্যাপক ইউসুফ আলী। মন্ত্রী পরিষদে প্রধানমন্ত্রী হন তাজউদ্দিন আহমেদ (প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত)।

১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর তাজউদ্দিন আহমেদ ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। কিন্তু ভারতের সীমান্তে পৌঁছে বলেন, একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অন্য দেশে তিনি কোন প্রটোকল ও আমন্ত্রণ ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন না। এটা করলেও তার দেশের জন্য অসম্মানজনক। এরপর ভারতীয় বাহিনী তাকে গার্ড অফ অর্নার দিয়ে ভারতে নিয়ে যায়।

স্বাধীনতা যুদ্ধের অবশিষ্ট দিনগুলোতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ২২শে ডিসেম্বর তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ বাংলাদেশ সরকারের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। শেখ মুজিবর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসলে তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর শেখ মুজিবর রহমান প্রধান মন্ত্রী হলে, তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ঢাকা-২২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় বাজেট পেশ করেন, প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।

১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের সমাপনী অধিবেশনের বক্তৃতায় তিনি দল, সরকার এবং নেতা ও কর্মীদের মাঝে দূরত্ব দূর করে, সংগঠন এবং সরকারের মাঝে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর সাথে তাজউদ্দীনের কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ ৩০ বছরের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহকর্মীকে ভুল বুঝেন। এই ভুল বুঝাবুঝি থেকেই, ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে অক্টোবর তাজউদ্দীন মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগষ্ট সামরিক অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবর রহমান নিহত হন। ২৩ আগষ্ট সামরিক আইনের অধীনে তাজউদ্দীন আহমদ-সহ ২০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাজউদ্দীন আহমদেক তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। ৩রা নভেম্বরে কারাগারের ভিতরে তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মোঃ মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে জেলহত্যা নামে কুখ্যাত হয়ে আছে।

স্ত্রী : সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন। 
সন্তান : ৪টি।

  • শারমিন আহমদ রিতি (বড় মেয়ে)
  • সিমিন হোসেন রিমি (মেজো মেয়ে বিশিষ্ট লেখিকা ও কলামিস্ট এবং গাজীপুর-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য
  • মাহজাবিন আহমদ মিমি (কনিষ্ঠা মেয়ে)।
  • তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ, কনিষ্ঠ পুত্র। গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে আসীন অবস্থায় পদত্যাগ করেন ও ৭ জুলাই, ২০১২ইং তারিখে তাঁর আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়।

Quotes

Total 15 Quotes
শিক্ষা গ্রহণ করে যদি আমরা বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে না পারি সে শিক্ষার কোন মূল্য নাই। - তাজউদ্দীন আহমদ
লেখাপড়া জানতে হয় নিজের বিবেককে শান দেওয়ার জন্যে। শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র চাকরি নয়। শিক্ষা দিয়ে বিবেককে উন্নত করা- এই ব্রত নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। - তাজউদ্দীন আহমদ
যত সুন্দর ভাষা ও শব্দ দিয়ে সংবিধান লেখা হোক না কেন, জাতির জীবনে তা প্রয়োগ না হলে সেটা অর্থহীন হয়ে পড়বে। - তাজউদ্দীন আহমদ
ভিতরে ইঁদুর রেখে বাইরে মাটি দিলে সমস্যার সমাধান হবে না। - তাজউদ্দীন আহমদ
কৃষকরা জাতির সম্পদ; আমরা তাদের জন্য গর্ববোধ করি। - তাজউদ্দীন আহমদ
বক্তৃতা কমাতে হবে। এখন ভেবে দেখতে হবে বক্তৃতায় যা বলা হয়েছে তা করা হয়েছে কিনা। - তাজউদ্দীন আহমদ
ঘুম পাড়ানিয়া গান আমাদের গাইলে চলবে না, যে গান আমাদের কঠোর পরিশ্রম করার জন্য জাগিয়ে রাখবে, সে গান আমাদের গাইতে হবে। - তাজউদ্দীন আহমদ
আমাদের বুদ্ধিজীবীরা দেশের সত্যিকার সমস্যা তুলে ধরবেন এবং সমাধানের ইঙ্গিত প্রদর্শন করবেন,এটাই কামনা করি। অন্ধভাবে আমাদের শুধু প্রশংসা করলেই চলবে না। - তাজউদ্দীন আহমদ
দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যারা বড় বড় কথা বলেন, দুর্নীতিবাজ ধরা পড়লে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদের অনেকেই ওকালতি করে। এমনিভাবে প্রত্যেক দুর্নীতিপরায়ণই যদি কারো না কারো ভাই ও খালু হয়, তাহলে সরকার কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে? - তাজউদ্দীন আহমদ
দেশের কাছে কিছু চাওয়ার আগে দেশকে আপনি কতটুকু দিয়েছেন, তা বিচার করুন। - তাজউদ্দীন আহমদ