photo

Sri Aurobindo

Writer
Date of Birth : 15 Aug, 1872
Date of Death : 05 Dec, 1950
Place of Birth : Kolkata
Profession : Writer
Nationality : Indian
শ্রীঅরবিন্দ (জন্মগত নাম: অরবিন্দ অ্যাক্রয়েড ঘোষ; ১৫ অগস্ট, ১৮৭২ – ৫ ডিসেম্বর, ১৯৫০) ছিলেন একজন ভারতীয় দার্শনিক, যোগী, কবি ও জাতীয়তাবাদী। সাংবাদিক হিসেবে তিনি বন্দে মাতরম্‌ প্রভৃতি সংবাদপত্র সম্পাদনা করেন। তিনি ভারতকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯১০ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের এক প্রভাবশালী নেতা। তারপর তিনি এক আধ্যাত্মিক সংস্কারকে পরিণত হন এবং মানব-প্রগতি ও আধ্যাত্মিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির কথা প্রচার করেন।

ইংল্যান্ডের কেমব্রিজের কিং'স কলেজে অরবিন্দ ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস অধ্যয়ন করেন। ভারতে প্রত্যাবর্তনের পর বরোদার দেশীয় রাজ্যের মহারাজের অধীনে তিনি একাধিক অসামরিক পরিষেবা কার্যে অংশগ্রহণ করেন। এই সময় তিনি ক্রমশই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জাতীয়তাবাদী রাজনীতি এবং বাংলায় অনুশীলন সমিতির ক্রমবর্ধমান বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। একটি শুনানির মামলা চলাকালীন একাধিক বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় এই সংগঠন জড়িয়ে পড়লে অরবিন্দও গ্রেফতার হন। এই সময় তাঁর বিরুদ্ধে আলিপুর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনীত হয়। যদিও ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে নিবন্ধ রচনার অভিযোগেই কেবল তাঁকে দোষীসাব্যস্ত ও কারারুদ্ধ করা যেত। মামলা চলাকালীন নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী নামে এক রাজসাক্ষী নিহত হওয়ার পর প্রমাণাভাবে অরবিন্দ মুক্তি পান। জেলে বন্দী থাকার সময় অরবিন্দ অতীন্দ্রিয় ও আধ্যাত্মিক কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। মুক্তিলাভের পর তিনি পন্ডিচেরি চলে যান এবং রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে আধ্যাত্মিক সাধনায় মনোনিবেশ করেন।

পন্ডিচেরিতে অরবিন্দ অধ্যাত্ম-সাধনার যে বিশেষ প্রক্রিয়াটির বিকাশ ঘটান তার নাম তিনি দেন যোগ সমন্বয়। তাঁর অন্তর্দৃষ্টির মূল বক্তব্যটি ছিল মানব জীবনের বিবর্তন ঘটে এক দিব্য দেহে এক দিব্য জীবনলাভে। তিনি এমন এক আধ্যাত্মিক উপলব্ধিতে বিশ্বাস করতেন, যা শুধুমাত্র মোক্ষলাভই ঘটায় না, বরং মানব প্রকৃতির রূপান্তর ঘটিয়ে মর্ত্যেই এক দিব্য জীবনকে সম্ভব করে তোলে। ১৯২৬ সালে নিজের আধ্যাত্মিক সহকারী মিরা আলফাসার (যিনি "শ্রীমা" নামে অভিহিতা হতেন) সাহায্যে শ্রীঅরবিন্দ আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়।

অরবিন্দের প্রধান সাহিত্যকৃতিগুলি হল দ্য লাইফ ডিভাইন (যে গ্রন্থে যোগ সমন্বয়ের দার্শনিক দিকগুলি আলোচিত হয়েছে); সিন্থেসিস অফ যোগ (যে গ্রন্থে যোগ সমন্বয়ের নীতি ও পদ্ধতি আলোচিত হয়েছে); এবং সাবিত্রী: আ লেজেন্ড অ্যান্ড আ সিম্বল (মহাকাব্য)।

জীবনী
শৈশব
অরবিন্দ ঘোষ জন্মগ্রহণ করেন কলকাতায় ৷ তিনি অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার কোন্নগর এর প্রাচীন ঘোষবংশের সন্তান৷ তাঁর বাবা কৃষ্ণধন ঘোষ ছিলেন তৎকালীন বাংলার রংপুর জেলার জেলা সার্জন। মা স্বর্ণলতা দেবী, ব্রাহ্ম ধর্ম অনুসারী ও সমাজ সংস্কারক রাজনারায়ণ বসুর কন্যা। সংস্কৃতে "অরবিন্দ" শব্দের অর্থ "পদ্ম"। বিলেতে থাকাকালীন সময়ে অরবিন্দ নিজের নাম "Aaravind", বারোদায় থাকতে "Aravind" বা "Arvind" এবং বাংলায় আসার পর "Aurobindo" হিসেবে বানান করতেন। পারিবারিক পদবির বানান ইংরেজিতে সাধারণত "Ghose" হলেও অরবিন্দ নিজে "Ghosh" ব্যবহার করেছেন।

রংপুরে তার বাবা ১৮৭১ এর অক্টোবর থেকে কর্মরত ছিলেন, অরবিন্দ রংপুরে জীবনের প্রথম পাঁচ বছর পার করেন। ড ঘোষ এর আগে বিলেতের কিংস কলেজে চিকিৎসা শাস্ত্রে লেখাপড়া করেন। তিনি সন্তানদের ইংরেজি পন্থায় এবং ভারতীয় প্রভাবমুক্ত শিক্ষাদানের মনোভাব পোষণ করতেন। তাই ১৮৭৭ সালে দুই অগ্রজ সহোদর মনমোহন ঘোষ এবং বিনয়ভূষণ ঘোষ সহ অরবিন্দকে দার্জিলিংয়ের লোরেটো কনভেন্টে পাঠান হয়।

বিলেত
লোরেট কনভেন্টে দুই বছর লেখাপড়ার পর ১৮৭৯ সালে দুই সহোদর সহ অরবিন্দকে বিলেতের ম্যাঞ্চেস্টার শহরে পাঠান হয় ইউরোপীয় শিক্ষালাভের জন্য। জনৈক রেভারেন্ড এবং শ্রীমতি ড্রিয়ুইটের তত্ত্বাবধানে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। রেভারেন্ড ড্রিয়ুইট ছিলেন অ্যাংলিকান যাজক, রংপুরের ব্রিটিশ বন্ধুদের মাধ্যমে যার সাথে ড ঘোষের পরিচয় ছিল। ড্রিয়ুইট পরিবার তিন ভাইকে ব্যক্তিগত ভাবে শিক্ষাদান করেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ভারত ও তার সংস্কৃতির কোনরকম উল্লেখ না করার অনুরোধ ছিল।

১৮৮৪ সালে অরবিন্দ লন্ডনের সেইন্ট পলস স্কুলে ভর্তি হন। এখান থেকে গ্রীক, লাতিন এবং শেষ তিন বছরে সাহিত্য বিশেষত ইংরেজি কবিতা অধ্যয়ন করেন। ড কে,ডি, ঘোষ ভেবেছিলেন, তার তিন পুত্রই সম্মানসূচক ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করবেন, কিন্তু ১৮৮৯ সালে দেখা গেল একমাত্র সবার ছোট অরবিন্দই বাবার আশা পূরণ করতে পারবেন, বাকি ভাইয়েরা ইতিমধ্যেই ভিন্ন দিকে নিজ নিজ ভবিষ্যতের পথ বেছে নিয়েছেন। আইসিএস কর্মকর্তা হওয়ার জন্য ছাত্রদেরকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করতে হত এবং ইংরেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বছর অধ্যয়নের অভিজ্ঞতাও প্রয়োজন ছিল। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে বৃত্তি অর্জন ছাড়া ইংরেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা অরবিন্দের পক্ষে সম্ভব ছিলনা। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কিংস কলেজের বৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করায় তা সম্ভবপর হয়ে ওঠে। তিনি কয়েক মাস পর আইসিএস এর লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেন ২৫০ প্রতিযোগীর মাঝে ১১তম স্থান অধিকার করেন। He spent the next two years at the King's College.

দুই বছর প্রবেশনের শেষ দিকে অরবিন্দ নিশ্চিত হন যে ব্রিটিশদের সেবা করার ইচ্ছা তার নেই, অতএব, আইসিএস পরীক্ষার অংশ অশ্বারোহণ পরীক্ষায় হাজির না হয়ে অকৃতকার্য হন। একই সময়ে বারোদার মহারাজ ৩য় সায়াজিরাও গায়কোয়াড় বিলেত ভ্রমণ করছিলেন। স্যার হেনরি কটনের ভাই জেমস কটন, যিনি কিছুদিন বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর এবং সাউথ কেন্সিংটন লিবারেল ক্লাবের সচিব ছিলেন, অরবিন্দ ও তার বাবার পূর্ব পরিচিতির সুবাদে বারোদা স্টেস সার্ভিসে অরবিন্দের চাকুরির ব্যবস্থা করেন এবং যুবরাজের সাথে অরবিন্দের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন। অরবিন্দ বিলেত ছেড়ে ভারত অভিমুখে যাত্রা করেন ১৮৯৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ভারতে অপেক্ষারত অরবিন্দর বাবা বোম্বের এজেন্টের কাছ থেকে ভুল সংবাদ পান, পর্তুগালের উপকূলে অরবিন্দর জাহাজডুবি ঘটেছে। ড: ঘোষ আগেই অসুস্থ ছিলেন, এই দুঃসংবাদের ধাক্কা সামলাতে না পেরে মৃত্যুবরণ করেন।

বারোদা
বারোদায় অরবিন্দ স্টেস সার্ভিসে যোগদান করেন সার্ভিস এন্ড সেটলমেন্ট বিভাগে, পরে কোষাগার হয়ে অবশেষে সচিবালয়ে গায়কোয়াড়ের জন্য বক্তৃতা লেখার কাজে নিযুক্ত হন। বারোদায় অরবিন্দ ভারতীয় সংস্কৃতির উপর গভীর অধ্যয়ন শুরু করেন, নিজ ঊদ্যোগে সংস্কৃত, হিন্দি এবং বাংলা, বিলেতের শিক্ষায় যেসব থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। অধ্যয়নে বেশি মনোযোগী হওয়ায় অন্যান্য কাজে সময়ানুবর্তিতার অভাব দেখা দেয় এবং ফলস্বরূপ পরবর্তীতে তাকে বারোদা কলেজে ফরাসি ভাষার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। সেখানে অল্পদিনেই তিনি জনপ্রিয়তা পান অপ্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতির কারণে। পরবর্তীতে কলেজের উপাধ্যক্ষের পদেও আরোহণ করেন। তিনি বারোদা থেকেই তার প্রথম কাব্য সঙ্কলন "The Rishi" প্রকাশ করেন। একই সময়ে তিনি ব্রিটিশবিরোধী সক্রিয় রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বারোদা স্টেটে অধিকৃত পদের কারণে পর্দার আড়াল থেকেই কাজ করা শুরু করেন। বাংলা ও মধ্য প্রদেশে ভ্রমণ করে বিপ্লবী দলগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করেন। লোকমান্য তিলক এবং ভগিনী নিবেদিতার সাথেও যোগাযোগ স্থাপিত হয়। বাঘা যতীন হিসেবে পরিচিত যতীনাথ ব্যানার্জীর জন্য তিনি বারোদার সেনাবিভাগে সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন এবং পরবর্তীতে তাকে বাংলার অন্যান্য বিপ্লবী দলগুলোকে সংগঠিত করার কাজে পাঠান।

Quotes

Total 0 Quotes
Quotes not found.