
Santosh Gupta
Bangladeshi journalist and writer
Date of Birth | : | 09 January, 1925 |
Date of Death | : | 06 August, 2004 (Aged 79) |
Place of Birth | : | Runsi, India |
Profession | : | Bangladeshi Journalist, Writer |
Nationality | : | Bangladeshi |
সন্তোষ গুপ্ত (Santosh Gupta) বাংলাদেশের একজন সাংবাদিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট ছিলেন। তিনি দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশকের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। পাঠক মহলে সমাদৃত ছিল সন্তোষ গুপ্তের লেখা ‘অনিরুদ্ধের কলাম’। কবিতা, শিল্পকলা, চিত্রকলা, রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ১৪টি বই লিখেছেন। দেশের সব জাতীয় দৈনিকে তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ, কলাম ও সমালোচনামূলক নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দৈনিক সংবাদের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রাথমিক জীবন
সন্তোষ গুপ্ত ছেলেবেলায় বাবা কাকাকে হারান মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে। তার মা কিরণবালা তাকে অনেক কষ্টে মানুষ করেন। হিন্দু বিধবাদের আচার-আচরণ মানলেও তিনি ছিলেন প্রগতিশীল। স্বামীহারা হবার পর থেকে কিরণবালাকে দীর্ঘকাল একবেলা আহার করতে হয়েছে। হিন্দু বিধবা হিসেবে বিকেলে খই বা রুটি খাওয়ার অবস্থাও তার ছিল না। ১৯৪৪ সালে সন্তোষ গুপ্ত চাকরি পাবার পর তিনি রুটি ও ফলমূল খাবার সুযোগ পেয়েছিলেন। ছেলেবেলায় বই পড়ার প্রচন্ড নেশা ছিল সন্তোষ গুপ্তের। একবার একনাগাড়ে রবীন্দ্রনাথের ৪৪টা কবিতা মুখস্থ বলে তিনি তার শিক্ষক মহেন্দ্রবাবুকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এবং তখন তিনি তাকে উপহার দিয়েছিলেন সঞ্চয়িতা ও চয়নিকা। রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি তিনি ম্যাক্সিম গোর্কী, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, স্বামী বিবেকানন্দ ও কাজী নজরুল ইসলামের রচিত বই পড়েছিলেন। ছয় বছর বয়সে রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি পড়তে শুরু করেন। সেই সময় ঐ অজপাড়াগাঁয়ে মাত্র একটা ইংরেজি টু ইংরেজি অভিধান আর দুটো ঘড়ি থাকলেও এবং এলাকায় সংবাদপত্র আসলেও কারো তেমন পড়ার আগ্রহ ছিল না। এমন অবস্থায় সন্তোষ গুপ্তের লেখাপড়ার তীব্র স্পৃহা সত্যিই বিস্ময়কর ছিল।
কর্মজীবন
সন্তোষ গুপ্ত কর্মজীবন শুরু করেন কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ে আইজি প্রিজন অফিসে ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর দেশভাগের সময় সন্তোষ গুপ্ত অপশন দিলেন পূর্ববঙ্গকে। কারণ তার দেশের বাড়ি ছিল বরিশাল। কলকাতায় থাকতেই সম্পর্ক ছিল কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। ঢাকায় এসেও প্রথম সুযোগেই যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন। কারা বিভাগের আইজির অফিসে সন্তোষ গুপ্তের পোস্টিং হয়েছিল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যেই দমননীতি নেমে আসে কমিউনিস্ট পার্টির ওপর এবং গ্রেপ্তার হন সরদার ফজলুল করিম, রেলশ্রমিক মো. আবদুল বারী, সন্তোষ গুপ্ত এবং তার মা। পার্টির মধ্যে অনুপ্রবেশকারী পুলিশি চরের বিশ্বাসঘাতকতায় সন্তোষ বাবুর বাড়ি যা ছিল ঢাকা জেলার হেড কোয়ার্টার শেষ হয়ে যায়। জেলখানায় তাকে দেখে আইজি প্রিজন ভীষণ অবাক হয়ে বলেন, তোমাকে ভুল করে ধরে এনেছে। আমি তোমার রিলিজের ব্যবস্থা করছি। সন্তোষ গুপ্ত বলেন, ভুল হয়নি; পুলিশ ঠিক লোককেই ধরেছে। এরপরও তিনি তিনবার জেল খাটেন। জেল থেকে বের হওয়ার পর ১৯৫৭ সালে সংবাদে যোগদান করেন। তিনি দৈনিক আজাদেও কাজ করেছেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুবের সামরিক শাসনের শুরুতেই তাকে আবার গ্রফতার করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কলকাতায় ন্যাপের মুখপত্র নতুন বাংলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে সন্তোষ গুপ্ত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সন্তোষ গুপ্ত মৌলিক কবিতা ছাড়াও শেলীর কবিতা আর শেক্সপিয়রের সনেট অনুবাদ করেছেন। অনেকগুলো ১৯৬৪ সালে দাঙ্গার সময় লুট হয়ে যায়।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু এবং পরে ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে জাতীয় চার নেতার হত্যার পর স্বাভাবিকভাবে অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সন্তোষ গুপ্ত। বাংলাদেশের বামপন্থীরা স্ব-উদ্যোগে এগিয়ে আসবেন কামনা করেছেন তিনি। এ প্রশ্নে বামপন্থীদের সংকীর্ণতা দেখলে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। তাই বলে যৌবনের ক্ষুরধার যে বিশ্বাস নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলেন, সেই বিশ্বাস থেকে বিচ্যুত হননি কোনো দিন।
Quotes
Total 0 Quotes
Quotes not found.