
Sanjib Chandra Chattopadhyay
Writer
Date of Birth | : | 27 June, 1834 |
Date of Death | : | 08 April, 1899 (Aged 64) |
Place of Birth | : | Calcutta |
Profession | : | Writer |
Nationality | : | Indian |
সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৪ - ৮ এপ্রিল ১৮৮৯) একজন বাঙালি লেখক ছিলেন। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার ছোট ভাই।
প্রথম জীবন
বাংলা ভাষার উইকিসংকলনে এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত মৌলিক রচনা রয়েছে: সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী
সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৩৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার নৈহাটি শহরের নিকটস্থ কাঁটালপাড়া গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ডেপুটি কালেক্টর যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় পুত্র ছিলেন সঞ্জীবচন্দ্র।
শৈশবে গ্রাম্য পাঠ্যশালায় শিক্ষালাভ করে সঞ্জীবচন্দ্র মেদিনীপুরে স্কুলে ভর্তি হন। পিতার কর্মসূত্রের বদলির কারণে সঞ্জীবচন্দ্রকে দুই বার হুগলী কলেজ ও মেদিনীপুরের স্কুলে ভর্তি হতে হয়। এরপর তিনি ব্যারাকপুরের সরকারী জেলা কলেজে জুনিয়ার স্কলারশিপ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ভর্তি হলেন, কিন্তু অসুস্থতার জন্য পরীক্ষায় বসতে অক্ষম হলে কলেজ ত্যাগ করেন।
কর্ম জীবন
কলেজ ত্যাগ করার পর যাদবচন্দ্র বর্ধমান কমিশনারের অফিসে অল্প-মাইনের কেরানির চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। এরপর তিনি চাকরি ছেড়ে অনুজ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শে প্রেসিডেন্সি কলেজে আইনবিভাগে ভর্তি হন, কিন্তু পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হন। কিছুদিন পরে যাদবচন্দ্র মাসে তার জন্য আড়াইশো টাকা মাইনের হুগলী জেলার আয়কর বিভাগের পর্যবেক্ষকের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, কিন্তু কয়েক বছর পর পদটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে সঞ্জীবচন্দ্র বেঙ্গল রায়টস:দেয়ার রাইটস অ্যান্ড লায়াবিলিটিজ নামক একটি ইংরেজি প্রবন্ধ রচনা করেন। বইটি ইংরেজ শাসকমহলে এতটাই প্রভাব বিস্তার করল যে, সঞ্জীবচন্দ্রকে কৃষ্ণনগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পদ দেওয়া হল। এরপর তিনি পালামৌ, যশোর, আলিপুর হয়ে পাবনায় বদলি হন। সেখানে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ার কারণে তার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি যায়। কিন্তু সরকার তাকে স্পেশাল সাব রেজিস্ট্রারের পদে নিযুক্ত করলে বারাসত, হুগলী, বর্ধমান ও যশোরে তার বদলি হয়। যশোরের ম্যাজিস্ট্রেট বার্টনের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে সঞ্জীবচন্দ্র চাকরিতে ইস্তফা দেন।
সাহিত্য কর্ম
বাংলা ভাষার উইকিসংকলনে এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত মৌলিক রচনা রয়েছে: লেখক:সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম বাংলা প্রবন্ধ যাত্রা প্রকাশিত হয়। ভ্রমর নামক মাসিক পত্রিকায় রামেশ্বরের অদৃষ্ট নামক তার প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়, যা ১৮৭৭ খ্রিস্তাব্দে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম উপন্যাস কণ্ঠমালা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে জালপ্রতাপ চাঁদ ও ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে মাধবীলতা নামক উপন্যাস পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। ১২৮১ বঙ্গাব্দে ভ্রমর নামক মাসিক পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ সংখ্যায় প্রকাশিত দামিনী নামক গল্পটি তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। ১২৮৭ বঙ্গাব্দ থেকে ১২৮৯ বঙ্গাব্দের মধ্যে ছয়টি পর্বে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় তার ভ্রমণকাহিনী পালামৌ প্রকাশিত হয়।
Quotes
Total 30 Quotes
বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে - সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
আমার বলতে ইচ্ছে করছিল, মুকু, ভালবাসা বোঝো? তারপরেই মনে হল, প্যানপ্যানে শোনাবে। ভালবাসা শব্দটাই ভালবাসার শত্রু। ভালবাসা একটা ভাবমিশ্রিত, সেবা, সাহচর্য, অবস্থিতি, সহ্যশক্তি। হাত ধরে নীরবে হাঁটা। ওটা বোধের ব্যাপার, বলার নয়।
জীবন থেকে সরে গিয়ে জীবনের নকশা দেখে নিতে হয় মাঝে মাঝে। মনকে সরাও, মনকে ঢোকাও। ঘাড়-মুখ গুঁজড়ে সংসারে পড়ে থেকো না। সবেতেই আছি আবার কিছুতেই নেই। ইউ লিড এ লাইফ অ্যান্ড লার্ন দি আর্ট অফ লিভিং।
আমি সিদ্ধান্ত করেছি, আই উইল কমিট সুসাইড। সভাসদরা সমস্বরে বললেন, সেকী? আত্মহত্যা। ইয়েস আত্মহত্যা! দুষ্ট গোরুর চেয়ে, শূন্য গোয়াল ভাল। মাতামহ বললেন, দুষ্ট গোরু তো ও, তুমি কেন গোয়াল শূন্য করে চলে যাবে? এ আবার কেমন বিচার?
গাড়ি যেমন পেট্রোলে চলে, মানুষ তেমনি চলে আশীর্বাদে। পূর্বপুরুষরা আশীৰ্বাদ না করলে জীবনকে চালাতে হয় ঠেলে ঠেলে।
চলো, ওপরে চলো। বলাইবাবু, আমরা তো আছি! এক যায়, আর এক থাকে। মানুষের মতো ভুলতে শেখো। এই দেখো, একে একে আমার তো সবাই চলে গেছেন। যান না, আমি ধীরে ধীরে সব ভুলে যাব। একে একে নতুন চরিত্র এসে আমার চারপাশে ঘিরে বসবে। মাইফেল চলবে দিনের পর দিন। তারপর আবার একদিন সব ভোজবাজি! শুন্য কার্পেট, ছেঁড়া ফুলের মালা, ঘুঙুরের দানা, বাতি ম্রিয়মাণ, ভোরের পানসে আলো, ঘুলঘুলিতে তন্দ্রাতুর পায়রার ডানার ঝটাপটি, মৃতের নিশ্বাসের মতো ফিকে বাতাস। ছিল সব, নেই কিছু। নদীর এক পাড় ভাঙে, আর এক পাড় গড়ে। চলো বলাইবাবু, ওপরে চলো। তুমি আমার কোলে উঠে চলো। বর্ষার দুপুরের স্মৃতি। মাতামহ একেই বলতেন-সব ধুস।
জীবন মানেই ঝোড়ো হাওয়া কনক, জীবন মানেই ঝড়। করার কিছু নেই।
এ বাড়িতে কাউকে খাওয়াতে হলে তাকে একেবারে খাইয়ে শেষ করে দেওয়া হয়। খেতে খেতে তিনি একসময় কেঁদে ফেলেন। হাত জাড় করে বলতে থাকেন, “বিশ্বাস করুন, আমি আর পারছি না। আমার পেটে আর জায়গা নেই! আমি পেট ফেটে মরে যাব!
সব বড় বড় মানুষেরই ছোট ছোট একটা শুরু থাকে। সেই হাফপ্যান্ট পরে স্কুলে যাওয়া। পেটাই হওয়া। নিলডাউন। দু’কান ধরে বেঞ্চের ওপর দাড়ানো। অভাব, দুঃখ, কষ্ট কত কী খেতে ইচ্ছে করে, পয়সা নেই। কত কী পরতে ইচ্ছে করে, পয়সা নেই। তারপর টিউশনি করে পড়ার খরচ তোলা। তারপর মা সরস্বতীর কৃপায় সে-কী পরীক্ষার ফল। ফাস্ট, ফ্লাস্টক্লাস, গোল্ড মেডেল। ডব্লু বি সি এস, আই এ এস। জজ, ম্যাজিষ্ট্রেট, ব্যারিস্টার। এই জজসায়েব, মেজমামার মুখে যা শুনেছি, হারিকেনের আলোয়, চালাবাড়িতে রাত জেগে লেখাপড়া করেছেন, আর দিনের বেলায় কলেজ করেছেন, ছাত্র পড়িয়েছেন।
জীবন তো পুষে রাখার জিনিস নয়, জীবন কে উড়িয়ে দিতে হয় পাখির মতো । কত দেশ, কত বন, উপবন, নদ, নদী, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, জীবন জীবিকা, অ্যাডভেঞ্চার ।