photo

Narendra Modi

Prime Minister of India
Date of Birth : 17 September, 1950 (Age 74)
Place of Birth : Vadnagar, India
Profession : Politician, Orator
Nationality : Indian
Social Profiles :
Facebook
Twitter
Instagram
নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী (Narendra Modi) একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ। যিনি ২০১৪ সালের মে থেকে ভারতের চতুর্দশতম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মোদি ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের বারানসীর সংসদ সদস্য (এমপি) ছিলেন। তিনি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাজনৈতিক দলের সদস্য। তিনি ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ষোড়শ সাধারণ নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে জয়লাভ লাভ করেছিলেন।

২০১৪ সালের ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনে মোদি বিজেপির নেতৃত্ব দেন, যেখানে ১৯৮৪ সালের পর এটি প্রথমবারের মতো কোনো একক দলের জন্য দলটি ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তার প্রশাসন ভারতীয় অর্থনীতিতে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে এবং স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে ব্যয় কমানোর চেষ্টা করেছে। তিনি পরিকল্পনা কমিশনকে বিলুপ্ত করে এবং এটিকে নীতি আয়োগ দিয়ে প্রতিস্থাপন করে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করেন। মোদি একটি হাই-প্রোফাইল স্যানিটেশন অভিযান শুরু করেছিলেন, ২০১৬ সালে উচ্চ মূল্যের নোটের নোট বাতিলের সূচনা করেছিলেন এবং পণ্য ও পরিষেবা কর এবং দুর্বল বা বিলুপ্ত পরিবেশ ও শ্রম আইন চালু করেছিলেন।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

নরেন্দ্র মোদী ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই সেপ্টেম্বর বম্বে প্রেসিডেন্সির (বর্তমান গুজরাত রাজ্যের) মহেসানা জেলার বড়নগর নামক স্থানে গুজরাটি হিন্দু মুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি তার পিতামাতার ছয় সন্তানের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। তার পিতার নাম দামোদারদাস মূলচাঁদ মোদী ও মায়ের নাম হীরাবেন মোদী। বড়নগর রেলস্টেশনে তিনি তার পিতাকে চা বিক্রি করতে সহায়তা করতেন এবং কৈশোরে বাস স্ট্যান্ডের কাছে ভাইয়ের সাথে চা বিক্রি করুতেন। পুরো পরিবার একটি ছোট ৪০ ফুট X ১২ ফুট মাপের একতলা বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি এই শহরেই একজন সাধারণ মানের ছাত্র হিসেবে তার বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেন।

ছোট বেলায় স্বামী বিবেকানন্দের জীবন তাকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করে। আট বছর বয়সে মোদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের স্থানীয় শাখায় তার রাজনৈতিক গুরু লক্ষ্মণরাও ইনামদার নামক এক সাংগঠনিক কর্মীর সংস্পর্শে আসেন। ইনামদার তাকে সঙ্ঘের বালস্বয়ংসেবক হিসেবে দলে নেন।এই সময় তিনি জন সংঘের নেতা বসন্ত গজেন্দ্রগড়কর ও নথালাল জঘদার সংস্পর্শে আসেন।

প্রাথমিক রাজনৈতিক জীবন

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের বাংলাদেশ পাকিস্তান যুদ্ধ শেষ হলে মোদী আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘে যোগ দেন। নাগপুর শহরে প্রশিক্ষণের পর তাকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কর্তৃক ঘোষিত জরুরীকালীন অবস্থায় বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হলে এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে মোদী গ্রেপ্তারী এড়ানোর জন্য কখনো শিখ, কখনো বয়স্ক ব্যক্তির ছদ্মবেশে গোপণে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারপুস্তিকা বিতরণ ও বিক্ষোভ সমাবেশ সংগঠিত করতেন। তিনি জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে জরুরীকালীন অবস্থা আন্দোলনে সামিল হন। এই সময় তিনি গুজরাত লোকসংঘর্ষ সমিতি নামক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে গুজরাতে বিভিন্ন আন্দোলনকারীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেন। এই সময় তিনি গুজরাতী ভাষায় সংঘর্ষ্ মা গুজরাত (গুজরাতের সংঘর্ষ) নামক একটি পুস্তক রচনা করেন যেখানে তিনি এই সময়ে ঘটিত বিভিন্ন ঘটনার নিরিখে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ মোদীকে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করায়। এই সময় শঙ্করসিনহা বাগেলা ও কেশুভাই পটেল ভারতীয় জনতা পার্টির গুজরাত শাখার উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দ হলেও নরেন্দ্র মোদী মুরলী মনোহর যোশীর কন্যাকুমারী-শ্রীনগর একতা যাত্রা সংগঠিত করে রাজ্য শাখায় উল্লেখযোগ্য সংগঠক হিসেবে উঠে আসেন। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির গুজরাত শাখার কার্যনির্বাহী সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। এই পদে তার ভূমিকায় ভারতীয় জনতা পার্টি ১৯৯৫ সালে অনুষ্ঠিত গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভে সহায়তা করে।

গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী

২০০১ খ্রিষ্টাব্দে কেশুভাই পটেলের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে এবং তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ভূজ ভূমিকম্পে প্রশাসনিক দুর্বলতার অভিযোগ ওঠে। এর ফলে পার্টির জাতীয় নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য নরেন্দ্র মোদীকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে হিসেবে তুলে ধরে। পার্টির বরিষ্ঠ নেতা লাল কৃষ্ণ আডবাণী মোদীর অনভিজ্ঞতার ওপর চিন্তিত থাকলেও মোদী পটেলের সহায়ক হিসেবে গুজরাতের উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দেন। এর ফলশ্রুতিতে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই অক্টোবর মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সরকারীকরণ ও বিশ্বায়নবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে বেসরকারীকরণের নীতি গ্রহণ করেন।

জাতীয় রাজনীতি

কেশুভাই শঙ্কর সিং দ্বন্দ্বর সময় তিনি প্রথম দিল্লীর রাজনীতিতে আসলেও তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি৷ পরে ২০১৩ তে তাকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয় ও নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতে ২৬শে মে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নেন ।

প্রধানমন্ত্রী

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভূমিধস জয়ী হওয়ার পর, মোদি ২০১৪ সালের ২৬ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। তিনি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর জন্মগ্রহণকারী প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-এর জয়ের পর মোদি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর, তিনি ভারতের চতুর্থ-দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং দীর্ঘতম সময়ের জন্য অ- কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী হন।

শাসন ​​এবং অন্যান্য উদ্যোগ

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির প্রথম বছরে ক্ষমতার উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রীকরণ দেখা গেছে। মোদি, যার প্রাথমিকভাবে ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না, তিনি তার নীতিগুলি কার্যকর করার জন্য অনেকগুলি অধ্যাদেশ পাস করেন, যার ফলে ক্ষমতার আরও কেন্দ্রীকরণ হয় । তার প্রশাসন বিচারক নিয়োগের উপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি এবং বিচার বিভাগের হ্রাস করার জন্য একটি বিল প্রণয়ন করে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে, তিনি পরিকল্পনা কমিশন বিলুপ্ত করেন, এটিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়া (NITI Aayog) দিয়ে প্রতিস্থাপন করেন, পূর্বে পরিকল্পনা কমিশনের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করা। পূর্ববর্তী বছরগুলিতে পরিকল্পনা কমিশন সরকারের অদক্ষতা তৈরির জন্য এবং সামাজিক কল্যাণের উন্নতিতে তার ভূমিকা পালন না করার জন্য সমালোচিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯০ এর অর্থনৈতিক উদারীকরণের পর থেকে, এটি সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কিত ব্যবস্থাগুলির জন্য দায়ী প্রধান সরকারী সংস্থা ছিল।

স্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন

প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার প্রথম বছরে, মোদি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় কমিয়েছিলেন। জানুয়ারী ২০১৫ সালে, মোদি সরকার তার নতুন স্বাস্থ্য নীতি (NHP) চালু করে, যা স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি করেনি। কিন্তু বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা সংস্থাগুলির ভূমিকার উপর জোর দেয়। এটি পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারের নীতি থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রতিনিধিত্ব করে, যা শিশু এবং মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস সহ জনস্বাস্থ্য লক্ষ্যে সহায়তা করার জন্য প্রোগ্রামগুলিকে সমর্থন করেছিল। ন্যাশনাল হেলথ মিশন, যা এই সূচকগুলিতে লক্ষ্য করে জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করে। গত বছরের তুলনায় ২০১৫ সালে প্রায় ২০ শতাংশ কম তহবিল পেয়েছে। মোদি প্রশাসন তার দ্বিতীয় বছরে স্বাস্থ্যসেবা বাজেট আরও ১৫% কমিয়েছে।  পরের বছরের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বাজেট ১৯% বেড়েছে; বেসরকারী বীমা প্রদানকারীরা বাজেটটিকে ইতিবাচকভাবে দেখেছে কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের ভূমিকার উপর জোর দেওয়ার সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে এটি জনস্বাস্থ্য সুবিধা থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রতিনিধিত্ব করে। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যসেবা বাজেট ১১.৫% বেড়েছে; পরিবর্তনের মধ্যে একটি সরকারী অর্থায়িত স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচির জন্য ₹ ২০ বিলিয়ন (US$250 মিলিয়ন) বরাদ্দ এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বাজেট হ্রাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিদেশ যাত্রায় খরচ

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ যাত্রায় কি পরিমাণ খরচ হয় তার কয়েকটি তথ্য দেওয়া হল।

২০২২ সালের মে মাস থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৩৮ বার বিদেশে যাত্রা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর এই সফরে মোট খরচ হয়েছিল ২৫৮.৯ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের জুন মাসে মোদীর আমেরিকা সফরই ছিল সবচেয়ে ব্যয়বহুল। এতে প্রায় ২২ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের আমেরিকা সফরে খরচ হয়েছিল ১৫ কোটি টাকা। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের করা প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানিয়েছেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী পবিত্র মার্গারিটা।

Quotes

Total 0 Quotes
Quotes not found.