photo

Khwaja Ahsanullah

Nawab of Dhaka
Date of Birth : 22 Aug, 1846
Date of Death : 16 Dec, 1901
Place of Birth : Dhaka, Bangladesh
Profession : Nawab Of Dhaka
Nationality : Indian
নবাব খাজা আহসানুল্লাহ (Khwaja Ahsanullah) (১৮৪৬-১৯০১) খান বাহাদুর কেসিআইই ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার নবাব ছিলেন। তিনি একজন বিখ্যাত উর্দূ সাহিত্যিক ও ছিলেন। ১৮৭১ সালে খান বাহাদুর, ১৮৭৫ সালে নওয়াব, ১৮৯১ সালে সিআইই, ১৮৯২ সালে নওয়াব বাহাদুর ও ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে কেসিআইই উপাধি লাভ করেন। তিনি ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবার এবং ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয়বার ব্রিটিশ বড়লাটের আইনসভার সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন। তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি মুসলিম রাজনৈতিক ধারার সমর্থক ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

বাল্যকাল
তিনি ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে ডিসেম্বর নবাব খাজা আব্দুল গণির ঔরসে মাতা ইসমতুন্নেসার গর্ভে জন্মলাভ করেন। শৈশবে তিনি মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও আরবি, উর্দূ ও ফার্সি ভাষা শিক্ষালাভ করেন। তিনি বাল্যকালেই কোরআন এ হাফেজ হন। ২২বছর বয়সে তিনি তার পারিবারিক সম্পত্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

দানবীর নবাব
নওয়াব খাজা আহসানুল্লাহ একজন দানবীর ছিলেন। হিসাব করা হয়েছে যে, তিনি বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে অন্তত: ৫০ লক্ষাধিক টাকা দান করেছিলেন। যেমন, ঢাকার হোসেনী দালান পুনর্নির্মাণে এক লক্ষ টাকা, ঢাকার প্লেগ মহামারী নিবারণে এক লক্ষ টাকা (১৮৯৮খ্রি:), কুমিল্লা শহর উন্নয়নে (১৮৯৮) ৮০ হাজার টাকা, বড়লাটের দুর্ভিক্ষ তহবিলে ৫০ হাজার টাকা, মিটফোর্ড হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে দান প্রায় এক লক্ষ টাকা, ঢাকায় লেডি ডাফরিন মহিলা হাসপাতাল নির্মাণে (১৮৮৮ খ্রি:) ৫০ হাজার টাকা ইত্যাদি। প্রতি বছর ৩০-৪০ জন দরিদ্র মুসলমানকে হজে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যয় তিনি বহন করতেন। এছাড়া মক্কায় নহরে জুবায়দা নামে খাল সংস্কারে তিনি ৬০ হাজার টাকা দান করেছিলেন । তিনি ঢাকার সার্ভে স্কুলটিকে ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বার্থে এক লক্ষ ১২ হাজার টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জীবদ্দশায় তা সম্ভব হয়নি। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র নওয়াব সলিমুল্লাহ ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন।

সামাজিক অবদান
১৯০১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর তারিখে ঢাকা শহরে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা হয়। এই ব্যাপারে তিনি ছিলেন অন্যতম উদ্যোক্তা। কেবল তাই নয় এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নের স্বার্থে তিনি সাড়ে চার লক্ষ টাকা দান করেছিলেন। তিনি ১৮৯৯ সালে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব প্রতিষ্ঠায় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। কলকাতার সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশন ও এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য ছিলেন। ঢাকায় তিনি মোহামেডান লিটারারি সোসাইটির শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। তারই নির্দেশনায় ঢাকা থেকে ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে আহসানুল কাসাস নামে একটি উর্দু পত্রিকা প্রকাশিত হতো।

সাহিত্য-সংস্কৃতি
খাজা আহসানুল্লাহ একাধারে গীতিকার, নাট্যকার ও কণ্ঠশিল্পী ছিলেন। তিনি বেশ কিছু ঠুমরী ঢংয়ের গীত রচনা করেন। তার রচিত উর্দু নাটকগুলো নওয়াববাড়িতে মঞ্চস্থ হতো। তিনি উর্দু ও ফার্সি ভাষায় কবিতা রচনা করতেন। তিনি "শাহীন" (যার অর্থ রাজপাখী) এই কাব্যনাম ধারণ করেছিলেন। কুল্লিয়াতে শাহীন নামে তার উর্দু-ফার্সি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। তার নির্দেশনায় ঢাকা থেকে ১৮৮৪ সালের আহসানুল কাসাস নামে উর্দু পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তিনি নিয়মিত রোজনামচা লিখতেন। তার লেখা তারিখে খান্দানে কাশ্মীরিয়াহ (কাশ্মীরি বংশের ইতিহাস) নামক (অপ্রকাশিত) একটি গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে। শৌখিন ফটোগ্রাফার হিসেবে কলকাতার ফটোগ্রাফি সোসাইটির সদস্য হয়েছিলেন।

মৃত্যু
তিনি ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। বেগমবাজারে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার নামে পুরান ঢাকার একটি রাস্তা, বিখ্যাত আহসান মঞ্জিল এবং বুয়েটে একটি ছাত্রবাস (হল) রয়েছে।

Quotes

Total 0 Quotes
Quotes not found.