
Haroon Habib
writer, journalist
Date of Birth | : | 01 January, 1948 (Age 77) |
Place of Birth | : | Dewanganj Upazila, Bangladesh |
Profession | : | Writer, Journalist |
Nationality | : | Bangladeshi |
হারুন হাবীব (Haroon Habib) (জন্মঃ ১ জানুয়ারি ১৯৪৮) একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য রচয়িতা। বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন । বর্তমানে জার্নালিজম অ্যান্ড পিস ফাউন্ডেশন (জেপিএফ) এর নির্বাহী পরিচালক।
জন্ম ও শিক্ষা জীবন
হারুন হাবীবের জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৪৮ সালে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার খড়মা গ্রামে। তার বাবা তোফাজ্জল হোসেন পেশায় চিকিৎসক হলেও নাটক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে ব্যাপক ভাবে যুক্ত ছিলেন। তার মা ফাতেমা খাতুন। পড়াশুনার হাতে খড়ি স্থানীয় খড়মা প্রাইমারি স্কুলে। দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন। পরবর্তীতে তৎকালীন কায়েদে আযম কলেজ (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) থেকে স্নাতক এবং ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় মাস্টার্স করেন।
কর্ম-জীবন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের প্রথম দিকেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হন। তৎকালীন বাংলাদেশ প্রেস ইন্টারন্যাশনাল এ রিপোর্টার হিসেবে যোগদান করেন যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ভারতের দ্য হিন্দু, দি ফ্রন্ট লাইন, আমেরিকার দ্য নিউজ উইক, জার্মানির ডয়চে ভেলে সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করেছেন।
তিনি দৈনিক মানবকণ্ঠ সহ বেশ কিছু জাতীয় পত্রিকাতে নিয়মিত কলাম লিখে থাকেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
মুক্তিযুদ্ধে তিনি ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। ১৯৭০ এর নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্স শেষবর্ষের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতার দাবিতে সমগ্র জাতি তখন মরিয়া। হারুন হাবীব অন্যান্য ছাত্র নেতা এবং স্বাধীনতা কর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন মিছিল-মিটিং নিয়ে ঢাকার রাজপথে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ এবং পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুযায়ী নিজ জেলা জামালপুর এবং ময়মনসিংহ এলাকাতে চলে আসেন। উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি এবং তরুন-যুবকদের সংগঠিত করা। ১৬ই মার্চ নিজ জন্মস্থান দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাতে চলে আসেন এবং স্থানীয় জনগণকে সংগঠিত করা শুরু করেন। দেওয়ানগঞ্জের বেলতলী বাজার নামক স্থানে তিনি এবং তার বন্ধু আনোয়ারুল আজিম ছানা সহ স্থানীয় জনতা ২০ই মার্চ বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এই খবর পাক বাহিনীর কাছে পৌঁছালে আনোয়ারুল আজিম ছানা কে বন্দী করে হত্যা করা হয়। হারুন হাবীব অন্যান্য তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জ ক্যাম্পে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে তিনি বিখ্যাত কামালপুরের যুদ্ধ, বাহাদুরাবাদ ঘাট মুক্ত করার যুদ্ধ, জামালপুর মুক্ত করা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে সংবাদ সংগ্রহ
হারুন হাবীব মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদ সংগ্রহ এবং তা প্রকাশ করতেন। যুদ্ধকালীন সংবাদপত্র ‘জয়বাংলা’ তে নিয়মিত সংবাদ প্রেরণ করতেন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কাজ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের যুদ্ধ সংবাদদাতা হিসেবে।
মুক্তিযুদ্ধে আলোকচিত্র সংগ্রহ
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন তার তোলা দুর্লভ এবং কালজয়ী ছবি গুলো দিয়ে। পাক-বাহিনির ধ্বংসযজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং, বাস্তুচ্যুত মানুষের কষ্ট, বিভিন্ন আশ্রয় শিবির, স্বাধীন বাংলাদেশ সব কিছুকেই তিনি মূর্ত করেছেন ক্যামেরার ফ্রেমে।
সাহিত্য কর্ম
হাবীব একজন ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং প্রবন্ধকার হিসেবে জনপ্রিয়। মূলতঃ তিনি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাহিত্য রচনা করে থাকেন। একজন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নিজের অভিজ্ঞতা এবং পরবর্তীতে তার ব্যাপক গবেষণা লেখাগুলোকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। তার লেখা পিতৃপুরুষের গল্প নামক ছোট গল্পটি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য রচনায় অনন্য অবদানের জন্য তিনি ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
Quotes
Total 0 Quotes
Quotes not found.