
Benimadhab Barua
Date of Birth | : | 31 December, 1888 |
Date of Death | : | 23 March, 1948 (Aged 59) |
Place of Birth | : | Chattogram |
Profession | : | Writer |
Nationality | : | Bangladeshi |
জন্ম ও শৈশব
শিক্ষাজীবন
১৮৯৪ সালে ছয় বছর বয়সে গ্রামের মডেল স্কুলে তিনি পড়ালেখা শুরু করেন। ১ স্কুলে ভর্তির সময় পারিবারিক পদবী “তালুকদার” এর পরিবর্তে “বেণীমাধব বড়ুয়া” রাখা হয়।ঐ স্কুল হতে ১৯০২ সালে মিডল ইংলিশ (এম ই) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পড়ালেখায় উৎসাহী পিতা রাজচন্দ্র তালুকদার এবং পিতৃতুল্য ধনঞ্জয় তালুকদারের প্রেরণায় তিনি ১৯০২ সালে চট্টগ্রাম শহরের কলেজিয়েট স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯০৬ সালে তিনি ঐ স্কুল থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ঐ বছর তিনি চট্টগ্রাম কলেজে এফ. এ. পড়ার জন্য ভর্তি হন। তিনি ১৯০৮ সালে দ্বিতীয় বিভাগে এফ. এ. পাশ করেন। তখন পর্যন্ত তার লেখাপড়ার সম্পূর্ণ খরচ চালাতেন ধনঞ্জয় তালুকদার এবং তদীয় পত্নী শশীকুমারী। ডঃ বেণীমাধব বড়ুয়া তার মধ্যমনিকায় গ্রন্থের উৎসর্গপত্রে লিখেছেন “যিনি আমার বাল্যে ও কৈশোরে পুত্রবৎ পালন করিয়া তাঁহার সর্বস্ব দিয়া আমার জীবনধারা নিয়ন্ত্রিত করিয়াছিলেন সেই পিতৃতুল্য পরমারাধ্য খুল্লতাত ধনঞ্জয় তালুকদার এবং...সেই জননীস্বরুপা পরমারাধ্যা স্বর্গতা খুল্লমাতা শশীকুমারী দেবীর চরণোদ্দেশে এই অনুবাদ গ্রন্থখানি সশ্রদ্ধে উৎসর্গীকৃত হইল”। এফ. এ. পাশ করার পর ধনঞ্জয় তালুকদারের আকস্মিক মৃত্যুতে বেণীমাধবের উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। তখন তার পিতা দ্বিতীয় পুত্র কানাইলালকে রেঙ্গুনে পাঠান। রেঙ্গুনে সাঙ্গুভেলী টী কোম্পানীতে চাকরি নিয়ে কানাইলাল অগ্রজ বেণীমাধবের উচ্চশিক্ষার খরচপত্র চালিয়ে যান। এফ. এ. পাশ করে বেণীমাধব কলকাতায় এসে স্কটিশ চার্চ কলেজে বি. এ. ক্লাসে ভর্তি হন। এ সময় স্কটিশে পালি পড়বার ব্যবস্থা না থাকায় তাকে পালি ভাষায় অনার্স পড়বার জন্য প্রেসিডেন্সি কলেজে আসতে হতো। তিনি ১৯১১ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ হতে পালি ভাষায় অনার্স সহ দ্বিতীয় শ্রেনীতে বি. এ. পরীক্ষায় পাশ করেন। তারপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পালি ভাষায় এম. এ. শুরু করেন। ১৯১৩ সালে তিনি এম. এ. তে প্রথম শ্রেনীতে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। এম. এ.তে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল ভবিষ্যৎ কর্মজীবন সম্পর্কে তাকে আশাবাদী করে তোলে।
এম. এ. পাশ করার এক বছর পরে বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর বিহারের প্রতিষ্ঠাতা কৃপাশরণ মহাস্থবির এবং স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ভারত সরকার তাকে অ্যান অ্যানুয়াল ষ্টেট স্কলারশিপ ফর দ্য সায়েন্টিফিক স্টাডি অফ পালি ইন ইউরোপ নামক রাষ্ট্রীয় বৃত্তি মঞ্জুর করলে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যাত্রা করে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক ছাত্র হিসাবে যোগ দেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে ইন্ডিয়ান ফিলোসফি - ইটস অরিজিন অ্যান্ড গ্রোথ ফ্রম বেদাস টু দ্য বুদ্ধ নামক বেদোত্তর সংস্কৃত ভাষা ভিত্তিক একটি গ্রন্থ রচনার ভার দেওয়া হয়। এই গবেষণাসমাপ্ত হলে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি যিনি ডি. লিট উপাধি লাভ করেন।
লন্ডন থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে তিনি পালি বিভাগে লেকচারার পদে নিযুক্ত হন এবং প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দায়িত্ব নেন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বেণীমাধবের গবেষণাপত্রটিকে আ হিষ্ট্রি অফ প্রি-বুদ্ধিস্টিক ইন্ডিয়ান ফিলোসফি নামে প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। এই গ্রন্থে অমোঘবর্মণ ও মহিদাস ঐতরেয় সম্পর্কে তিনি মৌলিক মূল্যায়ন করেন। কয়েক বছর পর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সংস্কৃত বিভাগেও অধ্যাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পালি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণের মৃত্যু ঘটলে তিনি ঐ পদ গ্রহণ করেন। কয়েক বছর পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের পদে উন্নীত করা হয়। পালি ভাষার বি. এ. এবং এম. এ. কোর্সের সিলেবাসের সংস্কার তার অন্যতম কীর্তি। তিনি সংস্কৃত ও পালি ভাষার সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস, ভূগোল, বহির্ভারতে বৌদ্ধশাস্ত্র, বৌদ্ধধর্ম, দর্শন, শিল্পকলা, মূর্তিতত্ত্ব ও সংস্কৃতির সমন্বয় সাধন করে এক নতুন যুগোপযোগী সিলেবাস তৈরী করেন।
বেণীমাধব সংস্কৃত কলেজের আদর্শে পালি ভাষা ও সাহিত্য গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জুলাই ১, বুদ্ধিষ্ট টেম্পল রোডে বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর ভবনে নালন্দা বিদ্যাভবন স্থাপন করেন। এই ভবনের উদবোধন করেন সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে ধর্মাঙ্কুর বিহার লাগোয়া জমিতে ভিক্ষু ছাত্র ও তীর্থযাত্রীদের জন্য আর্য বিহার নামে এক নতুন ভবনের নির্মাণ করা হলে নালন্দা বিদ্যাভবন সেখানে স্থানান্তরিত হয়। বেণীমাধব সেখানে পড়াতেন এবং ঐ বিদ্যাভবনের নালন্দা নামক মুখপত্র প্রকাশ ও সম্পাদনা করতেন।