Anisul Hoque
Author
Date of Birth | : | 04 March, 1965 (Age 59) |
Place of Birth | : | Nilphamari |
Profession | : | Author |
Nationality | : | Bangladeshi |
Social Profiles | : |
Facebook
|
আনিসুল হক (Anisul Hoque) একজন বাংলাদেশী কবি, লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদক পদে কর্মরত আছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সত্য ঘটনা নিয়ে তার লেখা মা বইটি বেশ জনপ্রিয়। বাংলা ভাষার পাশাপাশি বইটি দিল্লী থেকে ইংরেজি ভাষায় এবং ভুবনেশ্বর থেকে ওড়িয়া ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
জন্ম
আনিসুল হকের জন্ম রংপুর বিভাগের নীলফামারীতে। তার পিতার নাম মো. মোফাজ্জল হক এবং মায়ের নাম মোসাম্মৎ আনোয়ারা বেগম। তার স্ত্রীর নাম মেরিনা ইয়াসমিন। একমাত্র কন্যা পদ্য পারমিতা।
শিক্ষাজীবন
তিনি রংপুর জিলা স্কুল থেকে ১৯৮১ সালে এস.এস.সি. এবং রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে এইচ.এস.সি. পাস করেন। উভয় পরীক্ষাতেই রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মেধাতালিকায় স্থান পান। এসএসসি পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় তিনি ৩য় এবং এইচএসসিতে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৮ম স্থান লাভ করেন। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের(বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেন।
কর্মজীবন
আনিসুল হক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকারের রেলওয়ে বিভাগে যোগদান করেন। অল্প কিছুদিন চাকরির পরই তা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতায় চলে আসেন। তিনি ১৯৮৭ সালে সাপ্তাহিক দেশবন্ধু পত্রিকার সহসম্পাদক, ১৯৮৯ সালে সাপ্তাহিক পূর্বাভাস পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক, ১৯৯১ সালে সাপ্তাহিক খবরের কাগজের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত দৈনিক ভোরের কাগজের সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত দৈনিক প্রথম আলোর সাথে যুক্ত আছেন। তার মূল ঝোঁক লেখালেখিতে। পত্রিকায় তিনি নিয়মিত কলাম লেখেন। বুয়েটে পড়ার সময় কবিতার দিকে বেশি ঝোঁক ছিল। পরবর্তীতে এর পাশাপাশি কথাসাহিত্যেও মনোযোগী হন। উপন্যাস, বিদ্রুপ রচনা, নাটক রচনায় প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। ২০১০ সালে তিনি আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল রাইটিং প্রোগ্রাম (আইডব্লিউপি) কর্মশালায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লেখকদের সাথে যোগ দেন। তিনি ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৭ জন লেখক আইডব্লিউপির কর্মশালায় যোগ দেন। ১৯৬৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজনে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১৩০টি দেশের এক হাজার ২০০ লেখক অংশ নেন।
রচনা
গল্প
- যে স্বপ্ন দেখতে জানতো, আজকালকার ভালোবাসার গল্প, অসমাপ্ত চুম্বনের ১২ বছর পর।
কবিতা
- খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে (১৯৮৯),
- আমি আছি আমার অনলে (১৯৯১),
- আসলে আয়ুর চেয়ে বড় সাধ তার আকাশ দেখার (১৯৯৫),
- জলরংপদ্য (২০০২),
- তোমাকে ভাবনা করি।
- তোমাকে না পাওয়ার কবিতা
উপন্যাস
তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস মা। এছাড়া বীর প্রতীকের খোঁজে, নিধুয়া পাথার, আয়েশামঙ্গল, খেয়া, ফাঁদ, বেকারত্বের দিনগুলিতে প্রেম, ভালোবাসা আমি তোমার জন্য কাঁদছি, ফাল্গুন রাতের আঁধারে, আমার একটা দুঃখ আছে, ক্ষুধা এবং ভালোবাসার গল্প, হৃদিতা, "জিম্মি" , সেঁজুতি, তোমার জন্য, ৫১ বর্তী, আবার তোরা কিপ্টা হ,আলো-অন্ধকারে যাই,আমার একটা দু:খ আছে, আয়েশামঙ্গল, বারোটা বাজার আগে, বিক্ষোভের দিনগুলির প্রেম(২০১৫) প্রভূতি উল্লেখযোগ্য।
ব্যঙ্গাত্মক রচনা
তিনি মূলত দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘গদ্যকার্টুন’ নামে নিয়মিত ব্যঙ্গাত্মক রচনা লেখেন। এসব লেখা নিয়ে প্রকাশিত বইগুলির মধ্যে কথাকার্টুন, গণতান্ত্রিক ফ্যান্টাসি, রাজা যায় রানি আসে, ছাগলতন্ত্র, অশ্বডিম্ব, সেই গাধা সেই পানি ,হাসতে হাসতে খুন উল্লেখযোগ্য।
নাটক
নাট্যকার হিসেবে তিনি ভিন্ন ধাঁচের নাটক উপহার দিয়েছেন। তার রচিত দর্শকনন্দিত টেলিভিশন কাহিনীচিত্রের মাঝে রয়েছে নাল পিরান, করিমন বেওয়া, প্রত্যাবর্তন, সাঁকো, প্রতি চুনিয়া, চড়ুইভাতি, মেগা সিরিয়াল ৫১বর্তী প্রভৃতি।
সিনেমা
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ব্যাচেলর এবং মেড ইন বাংলাদেশ সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখেছেন আনিসুল হক। এছাড়া তিনি থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার, টেলিভিশন সিনেমারও স্ক্রিপ্ট লিখেছেন। বৃত্তের বাইরে ও স্বপ্নডানায় চলচ্চিত্রে কাহিনী বিন্যাসের কাজ করেন।
পুরস্কার
শ্রেষ্ঠ টিভি নাট্যকার হিসেবে পুরস্কার, টেনাশিনাস পদকসহ বেশ কয়েকটা পুরস্কার পেয়েছেন। সাহিত্যের জন্য পেয়েছেন খুলনা রাইটার্স ক্লাব পদক, কবি মোজাম্মেল হক ফাউন্ডেশন পুরস্কার। ২০১২ সালে কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান। ২০১৯ সালে প্রবন্ধ শাখায় ‘প্রথমা’ থেকে প্রকাশিত সফল যদি হতে চাও-এর জন্য পাঞ্জেরী ছোটকাকু আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।
Quotes
Total 10 Quotes
আমি শিল্পী নই, কিন্তু ছবি–রংতুলি দেখলে হাত আপনিই ছুটে যায়; আমি লেখক নই, কিন্তু লিখতে লিখতে লিখতে আয়ু ক্ষয় করে ফেললাম, আমি কবি নই, কিন্তু আমার স্বপ্নগুলোকে আকার দিতে জীবনপাত করে যেতে রাজি আছি। একটা জীবন কিছুই করলাম না, নিজের মতো করে জীবনটাই যাপন করলাম না। বড় দুঃখী একটা মানুষ আমি। আমার সেই দুঃখ আমি ভুলে যাই, যখন আমি লিখি, যখন আমি আঁকি! - আনিসুল হক
আমি বারবার বলি, মা উপন্যাসটি আমার মাধ্যমে লিখিত হয়েছে বটে, কিন্তু এটি আসলে শহীদ আজাদ তাঁর বুকের রক্ত এবং তাঁর মা অশ্রু দিয়ে লিখেছেন। মাকে আমরা সবাই ভালোবাসি, দেশকেও ভালোবাসি। কাজেই মা যে বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় হয়ে উঠবে, এতে আমার খুব কৃতিত্ব নেই। আমি অনুরোধ করে কাউকে মা উপন্যাস অনুবাদ করতে বলেছি, তা নয়। একেকজন পড়েছেন ও মনে করেছেন, বইটি অনূদিত হওয়া উচিত, মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছানো উচিত। তাঁরা তা করেছেন। - আনিসুল হক
তুই কি একা আমার হবি? তুই কি আমার একান্ত এক দুঃক হবি? - আনিসুল হক
কাজেই এই দূষণ, এই কুয়াশা, এই মেঘ, ভূমধ্যসাগর থেকে আসা নয়, আমাদের খাসলতের মধ্য-সাগর থেকে আসা। খাসলত কখন মরে! স্বভাব যায় না ম’লে! আমরা করোনায় মরব, নিউমোনিয়ায় মরব, হাঁপানিতে মরব, শ্বাসকষ্টে মরব, তবু আমাদের স্বভাব ভালো হবে না। ভূমধ্যসাগরের মেঘ কেটে যাবে, ঢাকার আকাশ পরিষ্কার হবে না হবে না হবে না। করোনা চলে যাবে, প্রেমিক মিলবে প্রেমিকার সঙ্গে ঠিকই, কিন্তু রমনায় গিয়ে তারা শ্বাস নিতে পারবে না পারবে না পারবে না। - আনিসুল হক
আনিসুল হকের উক্তি
কাজে
কুয়াশা
ভূমধ্যসাগর
সাগর
স্বভাব
নিউমোনিয়া
হাঁপানি
ঢাকা
আকাশ
পরিষ্কার
আনিসুল হক
আমাদের জীবনে আমরা কলুর বলদের মতো চোখে ঠুলি পরেছি, মাড়াইয়ের গরুর মতো মুখে টোপর পরেছি, আর একই চক্রে ঘুরছি। আমরা দেখি না, আমরা খাই না। শুধু তা–ই না, আমরা বলিও না। সৈয়দ শামসুল হক লিখেছিলেন, মানুষের চোখ আছে তা দেখবার জন্য শুধু নয়, কাঁদবারও জন্য। আমরা বলি, মানুষের মুখ আছে, তা কেবল খাওয়ার জন্য নয়, বলবারও জন্য। আমাদের মুখে আমরা মুখোশ পরে আছি। আমরা মুখ দেখাব না এবং আমরা কিছু বলবও না। বোবার শত্রু নেই। - আনিসুল হক
বলতে চাইছি, রাষ্ট্রগুলো কেবল নিজেদের স্বার্থ দেখে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সাম্য, মৈত্রী কেবল নিজের জন্য, অন্যদের জন্য নয়। - আনিসুল হক
আমাদের অফিস যেখানে, কারওয়ান বাজারে, একটা পরিবার সারাটা দিন, বাসের নিচে দিনের বেলাটা কাটিয়ে দেয়। দুটো শিশু বাসের নিচে ঘুমায়, খেলা করে। পাঁচটার পরে বাসটা চলে যায়, তারা উঠে আসে বহুতল অফিস ভবনের এক পাশের উঁচু বেদিতে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার মতো করে দীর্ঘশ্বাস ফেলি: আমি কী রকমভাবে বেঁচে আছি, তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ। - আনিসুল হক
আমরা একটা চক্রে পড়ে গেছি। রাষ্ট্রগুলো, ব্যবস্থাগুলো আমাদের মুক্তি দেয় না, আমাদের ক্রমাগতভাবে বন্দী করে। আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার তো দেয়ই না, বরং আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাধীনভাবে চলার অধিকার, আমাদের কথা বলার অধিকার ক্রমাগতভাবে সংকুচিত করাই রাষ্ট্রের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। - আনিসুল হক
মানুষ স্বাধীনভাবে জন্মায়, কিন্তু সবখানেই সে শিকলে বাঁধা। আমাদের দেহই তো একটা কারাগার। নারী–পুরুষ বা তৃতীয় লিঙ্গ, বাঙালি–অবাঙালি, প্রতিবন্ধী–চৌকস, বুদ্ধিমান–বুদ্ধিকম, একালের–সেকালের কত রকমের শিকলে যে আমরা বাঁধা। - আনিসুল হক
আমরা এই ক্ষমতাকাঠামো এবং মূল্যবোধের কাঠামোর বাইরে যেতে পারি না। কেউ যদি যায়, তাহলে তাকে মানসিক হাসপাতালে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, না হলে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কাজেই মানুষের মুক্তি নেই। - আনিসুল হক