Tahajjud Namaz Time

Admin
October 13, 2024
367
নামাজ (ফারসি: نماز) বা সালাত (আরবি: صلاة) ইসলাম ধর্মের ৫টি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন। প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। আর ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ছাড়াও নফল নামাজ পড়ার বিধান ইসলামি শরিয়তে রয়েছে।
নফল নামাজের মধ্যে সর্বোত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদ। মর্যাদা ও ফজিলতের দিক থেকে ফরজ নামাজের পরই তাহাজ্জুদের অবস্থান। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো রাতের (তাহাজ্জুদের) নামাজ’।
তাহাজ্জুদ (আরবি: تهجد), রাতের নামাজ বা কিয়ামুল লাইল নামেও পরিচিত, ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্যে একটি ঐচ্ছিক ইবাদত। এটা বাধ্যতামূলক ৫ ওয়াক্ত নামাজের অন্তর্ভুক্ত নয়। ইসলামের নবী মুহাম্মাদ(সা.) নিয়মিত তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন এবং তার সাহাবীদের এটা পালনে উৎসাহিত করতেন।
তাহাজ্জুদ নামাজ
{التهجد} এটা আরবি শব্দ – قيام الليل রাতের নামাজ বলা হয়। এছাড়া তাহাজ্জত নামাজ কে ঐচ্ছিক ইবাদত ও বলা হয়। কেননা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ন্যায় তাহাজ্জুদ নামাজ প্রতিদিন আদায় করা অত্যাবশক নয়। তবে যে কেউ চাইলে প্রভুর সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে প্রতিদিনও আদায় করতে পারে। তা আদায়ের উত্তম সময় রাতের শেষ তৃতীয়াংশে। এছাড়া রাতে ওঠার সম্ভাবনা না থাকলে এশার নামাজ আদায় করে বিতরের পরেও পড়া যায়।
তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের সর্বোত্তম সময়
তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার বা আদায়ের সময় কখন- কেউ কেউ তা জানতে চান। এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে তাহাজ্জুদের সময় শুরু হয় এবং রাতের শেষ ভাগ পর্যন্ত সময় থাকে। তবে তাহাজ্জুদ আদায়ের সর্বোত্তম সময় হলো- রাতের শেষ অংশ। অথবা ফজরের নিকটবর্তী সময়, যে সময়টা রাতের এক তৃতীয়াংশ।
তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত
তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা নির্দিষ্ট নেই। দুই দুই রাকাত করে চার রাকাত পড়তে পারবে। আবার দুই দুই রাকাত করে যত রাকাত ইচ্ছা আদায় করা যায়। ন্যূনতম চার রাকাত আদায় করা উত্তম। যে কয় রাকাতই পড়া হোক, তা নিয়মিত আদায়ের অভ্যাস করা।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত
নামাজের নিয়ত আরবিতে করা জরুরী নয়। তবে আপনি যদি বিশুদ্ধ আরবি পারেন চাইলে আরবিতেও করতে পারেন। নিম্নে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত আরবিতে দেওয়া হলঃ-
نويت ان اصلي لله تعالى ركعتي صلاه التهجد سنه رسول الله تعالى متوجها الى جهتي كعبه الشريفه الله اكبر
উচ্চারণঃ- নাওয়াইতোয়ান উছললিয়া লিল্লাহি তায়ালা রকাতাই সলাতিত তাহাজ্জুদি, সুন্নাতু রসুলিল্লাহি তায়ালা, মুতাওয়াজ্জিয়ান ইলা জিহাতি কাবাতিশ সারিফাতি “আল্লাহু আকবার”
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
তাহাজ্জুদের নামাজ নবী করিম সা.-এর ওপর ফরজ ছিল। উম্মতের ওপর এটি ফরজ না হলেও সব সুন্নাত নামাজের মধ্যে এটিই উত্তম। তাহাজ্জুদ অর্থ ঘুম থেকে জাগা আর তাহাজ্জুদের সময় হলো ইশার নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে তারপর অর্ধেক রাতের পর নামাজ আদায় করা। সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত থাকে। গভীর রাতে ঘুম থেকে জেগে নামাজ আদায়ে সওয়াব বেশি।
পবিত্র মক্কা ও মদিনায় হারামাইন শরিফাইনে তাহাজ্জুদের সালাতের জন্য আজান দেয়া হয় এবং অতি গুরুত্বের সাথে আদায় করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,
‘যারা শেষ রাতে ইবাদত ও প্রার্থনা করেন তাদের প্রশংসাস্বরূপ কিয়ামত দিবসে বলবেন, তারা রাতের সামান্য অংশই নিদ্রায় অতিবাহিত করে আর রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ (সুরা: আযযারিয়াত ১৭-১৮)।
মহান আল্লাহ প্রতি রাতে নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন, যখন রাতের শেষ তৃতীয় ভাগ অবশিষ্ট থাকে। তিনি তখন বলতে থাকেন, কে আছো যে আমায় ডাকবে? আর আমি তার ডাকে সাড়া দেবে। কে আছো যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তাকে তা দান করব। কে আছো যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আর আমি তাকে ক্ষমা করব। (বুখারি)