সূরা ইয়াসিন কোরআনের ৩৬তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৮৩ এবং রুকু ৫টি। হযরত মুহাম্মদ (সা.) -এর নবুওয়ত লাভের প্রথম দিকে এবং হিজরতের বহু আগে মক্কায় এই সূরা ইয়াসিন অবতীর্ণ হয়েছে।
এই সূরা থেকে পবিত্র কোরআনের বিশালত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
অর্থ: শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
يس
উচ্চারণ: ইয়াসিন
অর্থ: ইয়া-সিন (সূরা ইয়াসিন ৩৬:১)
وَالْقُرْآنِ الْحَكِيمِ
উচ্চারণ: ওয়াল কোরআনিল হাকিম।
অর্থ: প্রজ্ঞাময় কোরআনের কসম। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২)
إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ
উচ্চারণ: ইন্নাকা লামিনাল মুরসালিন।
অর্থ: নিশ্চয়ই আপনি প্রেরিত রাসুলগণের একজন। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩)
عَلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
উচ্চারণ: আলা সিরাতিম মুসতাকিম।
অর্থ: সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪)
تَنزِيلَ الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ
উচ্চারণ: তানজিলাল ‘আজিজির রাহিম।
অর্থ: কোরআন পরাক্রমশালী পরম দয়ালু আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫)
لِتُنذِرَ قَوْمًا مَّا أُنذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُونَ
উচ্চারণ: লিতুনজিরা কাওমাম মা উনজিরা আ-বাউহুম ফাহুম গা-ফিলুন।
অর্থ: যাতে আপনি এমন এক জাতিকে সতর্ক করেন, যাদের পূর্ব-পুরুষগণকেও সতর্ক করা হয়নি। ফলে তারা গাফেল। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬)
لَقَدْ حَقَّ الْقَوْلُ عَلَىٰ أَكْثَرِهِمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
উচ্চারণ: লাকাদ হাক্কাল কাওলু ‘আলা আকসারিহিম ফাহুম লা-ইউ’মিনুন।
অর্থ: তাদের অধিকাংশের জন্য শাস্তির বিষয় অবধারিত হয়েছে। সুতরাং তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭)
إِنَّا جَعَلْنَا فِي أَعْنَاقِهِمْ أَغْلَالًا فَهِيَ إِلَى الْأَذْقَانِ فَهُم مُّقْمَحُونَ
উচ্চারণ: ইন্না- যা‘আলনা-ফি আ‘না-কিহিম আগলা-লান ফাহিয়া ইলাল আজকা-নি ফাহুম মুকমাহুন।
অর্থ: আমি তাদের গর্দানে চিবুক পর্যন্ত বেড়ি পরিয়েছি। ফলে তাদের মস্তক ঊর্ধ্বমুখী হয়ে গেছে। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৮)
وَجَعَلْنَا مِن بَيْنِ أَيْدِيهِمْ سَدًّا وَمِنْ خَلْفِهِمْ سَدًّا فَأَغْشَيْنَاهُمْ فَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ
উচ্চারণ: ওয়া যা‘আল না-মিম বাইনি আইদিহিম ছাদ্দাওঁ ওয়া মিন খালফিহিম ছাদ্দান ফাআগশাইনা-হুম ফাহুম লা-ইউবসিরুন।
অর্থ: আমি তাদের সামনে ও পিছনে প্রাচীর স্থাপন করেছি, অতঃপর তাদের আবৃত করে দিয়েছি, ফলে তারা দেখে না। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৯)
وَسَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
উচ্চারণ: ওয়া ছাওয়াউন ‘আলাইহিম আ আনযারতাহুম আম লাম তুনজিরহুম লা-ইউ’মিনুন।
অর্থ: আপনি তাদের সতর্ক করুন বা না করুন, তাদের পক্ষে দুটোই সমান; তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:১০)
إِنَّمَا تُنذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِيَ الرَّحْمَن بِالْغَيْبِ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ
উচ্চারণ: ইন্নামা তুনজিরু মানিত্তাবা‘আজ-জিরা ওয়া খাশিয়ার রাহমা-না বিল গাইবি ফাবাশশিরহু বি মাগফিরাতিওঁ ওয়া আজরিন কারিম।
অর্থ: আপনি কেবল তাদেরই সতর্ক করতে পারেন, যারা উপদেশ অনুসরণ করে এবং দয়াময় আল্লাহকে না দেখে ভয় করে। অতএব, আপনি তাদের সুসংবাদ দিয়ে দিন ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১১)
إِنَّا نَحْنُ نُحْيِي الْمَوْتَى وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ وَكُلَّ شَيْءٍ أحْصَيْنَاهُ فِي إِمَامٍ مُبِينٍ
উচ্চারণ: ইন্না নাহনু নুহয়িল মাওতা ওয়া নাকতুবু মা কাদ্দামু ওয়া আছারাহুম ওয়া কুল্লা শাইয়িন আহসাইনাহু ফি ইমামিম মুবিন।
অর্থ: আমিই মৃতদের জীবিত করি এবং তাদের কর্ম ও কীর্তিসমূহ লিপিবদ্ধ করি। আমি প্রত্যেক বস্তু স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১২)
وَاضْرِبْ لَهُم مَّثَلاً أَصْحَابَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءهَا الْمُرْسَلُونَ
উচ্চারণ: ওয়াদরিব লাহুম মাছালান আসহাবাল কারইয়াহ; ইজ জাআহাল মুরসালুন।
অর্থ: আপনি তাদের কাছে সে জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করুন, যখন সেখানে রাসুল আগমন করেছিলেন। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১৩)
إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ فَكَذَّبُوهُمَا فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوا إِنَّا إِلَيْكُم مُّرْسَلُونَ
উচ্চারণ: ইজ আরসালনা ইলাইহিমুসনাইনি ফাকাজ্জাবুহুমা ফা‘আজ্জাজনা বিসালিসিন ফাকালু ইন্না ইলাইকুম মুরসালুন।
অর্থ: আমি তাদের নিকট দুজন রাসুল প্রেরণ করেছিলাম, অতঃপর তারা তাদের মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। তখন আমি তাদের শক্তিশালী করলাম তৃতীয় একজনের মাধ্যমে। তারা সবাই বলল, আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১৪)
قَالُوا مَا أَنتُمْ إِلاَّ بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَمَا أَنزَلَ الرَّحْمن مِن شَيْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلاَّ تَكْذِبُونَ
উচ্চারণ: কালু মা আনতুম ইল্লা বাশারুম মিসলুনা ওয়া মা আনজালার রাহমানু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা তাকজিবুন।
অর্থ: তারা বলল, তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ, রহমান কিছুই নাজিল করেননি। তোমরা কেবল মিথ্যাই বলে যাচ্ছ। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১৫)
قَالُوا رَبُّنَا يَعْلَمُ إِنَّا إِلَيْكُمْ لَمُرْسَلُونَ
উচ্চারণ: কালু রাব্বুনা ইয়া‘লামু ইন্না ইলাইকুম লামুরসালুন।
অর্থ: রাসুলগণ বললেন, আমাদের পরওয়ারদিগার জানেন, আমরা অবশ্যই তোমাদের প্রতি প্রেরিত। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১৬)
وَمَا عَلَيْنَا إِلاَّ الْبَلاَغُ الْمُبِينُ
উচ্চারণ: ওয়া মা ‘আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবিন।
অর্থ: পরিষ্কারভাবে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১৭)
قَالُوا إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ لَئِن لَّمْ تَنتَهُوا لَنَرْجُمَنَّكُمْ وَلَيَمَسَّنَّكُم مِّنَّا عَذَابٌ أَلِيمٌ
উচ্চারণ: কালু ইন্না তাতাইয়ারনা বিকুম লাইল লাম তানতাহু লানারজুমান্নাকুম ওয়া লাইয়ামাস্সান্নাকুম মিন্না ‘আজাবুন আলিম।
অর্থ: তারা বলল, আমরা তোমাদের অশুভ-অকল্যাণকর দেখছি। যদি তোমরা বিরত না হও, তবে অবশ্যই তোমাদের প্রস্তর বর্ষণে হত্যা করব এবং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি স্পর্শ করবে। (সুরা ইয়াসিন ৩৬:১৮)
قَالُوا طَائِرُكُمْ مَعَكُمْ أَئِن ذُكِّرْتُم بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُونَ
উচ্চারণ: কালু তাইরুকুম মা’আকুম, আইন যুক্কিরতুম? বল, আনতুম কাওমুম মুসরিফুন।
অর্থ: রাসুলগণ বলল, তোমাদের অকল্যাণ তোমাদের সাথেই! এটা কি এজন্য যে, আমরা তোমাদের সদুপদেশ দিয়েছি? বস্তুত, তোমরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:১৯)
وَجَاء مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ رَجُلٌ يَسْعَى قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِينَ
উচ্চারণ: ওয়া জাআ মিন আকসাল মাদিনতি রাজুলুয় ইয়াস‘আ, কালা ইয়া কাওমিত্তাবিউল মুরসালীন।
অর্থ: অতঃপর শহরের প্রান্তভাগ থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এলো। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা রাসূলগণের অনুসরণ করো। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২০)
اتَّبِعُوا مَن لاَّ يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَهُم مُّهْتَدُونَ
উচ্চারণ: ইত্তাবি‘উ মাল লা ইয়াস’আলুকুম আজরাও ওয়া হুম মুহতাদুন।
অর্থ: অনুসরণ করো তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় কামনা করে না, অথচ তারা সুপথপ্রাপ্ত। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২১)
وَمَا لِي لاَ أَعْبُدُ الَّذِي فَطَرَنِي وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
উচ্চারণ: ওয়া মা লিয়া লা আ‘বুদুল্লাযী ফাতারানী ওয়া ইলাইহি তুরজা‘উন।
অর্থ: আমার কী হলো, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যাঁর কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে, আমি তাঁর এবাদত করব না? (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২২)
أَأَتَّخِذُ مِن دُونِهِ آلِهَةً إِن يُرِدْنِ الرَّحْمَن بِضُرٍّ لاَّ تُغْنِ عَنِّي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا وَلاَ يُنقِذُونِ
উচ্চারণ: আআত্তাখিযু মিন দুনিহি আলিহাতান, ইয় ইউরিদনির রাহমানু বিদুররিল লা তুগনী ‘আন্নী শাফা‘আতুহুম শাইআও ওয়া লা ইউনকিযুন।
অর্থ: আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্যদের উপাস্যরূপে গ্রহণ করব? করুণাময় যদি আমাকে কষ্টে নিপতিত করতে চান, তবে তাদের সুপারিশ আমার কোনোই কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে রক্ষাও করতে পারবে না। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২৩)
إِنِّي إِذًا لَّفِي ضَلاَلٍ مُّبِينٍ
উচ্চারণ: ইন্নী ইযাল লা ফী দালালিম মুবীন।
অর্থ: এরূপ করলে আমি প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হব। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২৪)
إِنِّي آمَنتُ بِرَبِّكُمْ فَاسْمَعُونِ
উচ্চারণ: ইন্নি আ-মানতু বিরাব্বিকুম ফাসমাউন।
অর্থ: আমি নিশ্চিতভাবে তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম। অতএব, আমার কথা শোন। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২৫)
قِيلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ قَالَ يَا لَيْتَ قَوْمِي يَعْلَمُونَ
উচ্চারণ: কিলাদখুলিল জান্নাতা কা-লা ইয়া লাইতা কাওমি ইয়া’লামুন।
অর্থ: তাকে বলা হলো, জান্নাতে প্রবেশ করো। সে বলল, হায়! আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত! (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২৬)
بِمَا غَفَرَ لِي رَبِّي وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُكْرَمِينَ
উচ্চারণ: বিমা গাফিরলি রাব্বি ওয়া জা’আলানি মিনাল মুকরামিন।
অর্থ: যে, আমার পালনকর্তা আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিতদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২৭)
وَمَا أَنزَلْنَا عَلَى قَوْمِهِ مِن بَعْدِهِ مِنْ جُندٍ مِّنَ السَّمَاء وَمَا كُنَّا مُنزِلِينَ
উচ্চারণ: ওয়ামা আনজালনা ‘আলা কাওমিহি মিম বা’দিহি মিন জুন্দিম মিনাস সামা-ই ওয়ামা কুন্না মুনজিলিন।
অর্থ: তারপর আমি তার সম্প্রদায়ের উপর আকাশ থেকে কোনো বাহিনী অবতীর্ণ করিনি এবং আমি (বাহিনী) অবতরণকারীও নই। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২৮)
إِن كَانَتْ إِلاَّ صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ خَامِدُونَ
উচ্চারণ: ইন কানাত ইল্লা সাইহাতাওঁ ওয়াহিদাতান ফাইজা হুম খামিদুন।
অর্থ: বস্তুত এ ছিল মাত্র এক মহানাদ। অতঃপর সঙ্গে সঙ্গে সবাই নিস্তব্ধ হয়ে গেল। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:২৯)
يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ مَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلاَّ كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُون
উচ্চারণ: ইয়া হাসরাতান ‘আলাল ‘ইবাদি মা ইয়া’তিহিম মির রাসুলিন ইল্লা কানু বিহি ইয়াসতাহজিউন।
অর্থ: বান্দাদের জন্য আক্ষেপ! তাদের কাছে এমন কোনো রাসুলই আগমন করেননি, যাদের প্রতি তারা বিদ্রূপ করেনি। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩০)
أَلَمْ يَرَوْا كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّنْ الْقُرُونِ أَنَّهُمْ إِلَيْهِمْ لاَ يَرْجِعُونَ
উচ্চারণ: আলাম ইয়ারাও কাম আহলাকনা কাবলাহুম মিনাল কুরুনি আন্নাহুম ইলাইহিম লা ইয়ারজিউন।
অর্থ: তারা কি দেখেনি, তাদের পূর্বে আমি কত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি? তারা তাদের কাছে আর ফিরে আসবে না। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩১)
وَإِن كُلٌّ لَّمَّا جَمِيعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُونَ
উচ্চারণ: ওয়া ইন কুল্লুল লাম্মা জামি’উল লাদাইনা মুহদারুন।
অর্থ: এবং সবাইকে সমবেত অবস্থায় আমার দরবারে উপস্থিত হতেই হবে। (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩২)
وَآيَةٌ لَّهُمُ الْأَرْضُ الْمَيْتَةُ أَحْيَيْنَاهَا وَأَخْرَجْنَا مِنْهَا حَبًّا فَمِنْهُ يَأْكُلُونَ
উচ্চারণ: ওয়া আ-য়াতুল লাহুমুল আরদুল মাইতাতু আহইয়াইনা-হা ওয়া আখরাজনা মিনহা হাব্বান ফামিনহু ইয়া’কুলুন।
অর্থ: তাদের জন্য একটি নিদর্শন মৃত পৃথিবী। আমি একে সঞ্জীবিত করি এবং তা থেকে উৎপন্ন করি শস্য, যা থেকে তারা ভক্ষণ করে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৩]
وَجَعَلْنَا فِيهَا جَنَّاتٍ مِن نَّخِيلٍ وَأَعْنَابٍ وَفَجَّرْنَا فِيهَا مِنْ الْعُيُونِ
উচ্চারণ: ওয়া জা‘আলনা ফিহা জান্নাতিম মিন নাখিলিন ওয়া আ‘নাবিন ওয়া ফাজ্জারনা ফিহা মিনাল ‘উয়ুন।
অর্থ: আমি তাতে সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান এবং প্রবাহিত করি তাতে ঝর্ণাধারা। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৪]
لِيَأْكُلُوا مِن ثَمَرِهِ وَمَا عَمِلَتْهُ أَيْدِيهِمْ أَفَلَا يَشْكُرُونَ
উচ্চারণ: লিয়াকুলু মিন ছামারিহি ওয়া মা ‘আমিলাতহু আইদিহিম, আফালা ইয়াশকুরুন।
অর্থ: যাতে তারা তার ফল খায়, যা তাদের হাত সৃষ্টি করেনি। অতঃপর তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না কেন? [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৫]
سُبْحَانَ الَّذِي خَلَقَ الْأَزْوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنبِتُ الْأَرْضُ وَمِنْ أَنفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُونَ
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাজি খালাকাল আজওয়াজা কুল্লাহা মিম্মা তুম্বিতুল আরদু ওয়া মিন আনফুসিহিম ওয়া মিম্মা লা ইয়ালামুন।
অর্থ: পবিত্র তিনি, যিনি জমিন থেকে উৎপন্ন উদ্ভিদ, তাদের নিজদের এবং যা তারা জানে না, তার সবকিছুকে জোড়া জোড়া করে সৃষ্টি করেছেন। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৬]
وَآيَةٌ لَّهُمْ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُم مُّظْلِمُونَ
উচ্চারণ: ওয়া আয়াতুল লাহুমুল লাইলু নাসলাখু মিনহুন্নাহারা ফাইজা হুম মুজলিমুন।
অর্থ: তাদের জন্যে একটি নিদর্শন রাত্রি, আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি, তখনই তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৭]
وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
উচ্চারণ: ওয়াশ শামসু তাজরি লিমুস্তাকাররিল লাহা, জালিকা তাকদিরুল ‘আজিজিল ‘আলিম।
অর্থ: সূর্য তার নির্দিষ্ট স্থানে আবর্তন করে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৮]
وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتَّى عَادَ كَالْعُرْجُونِ الْقَدِيمِ
উচ্চারণ: ওয়াল কামারা কাদ্দারনাহু মানাজিলা হাত্তা ‘আদা কাল‘উরজুনিল কাদিম।
অর্থ: চন্দ্রের জন্য আমি বিভিন্ন মনজিল নির্ধারণ করেছি, অবশেষে সে পুরাতন খর্জুরের শাখার ন্যায় হয়ে যায়। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৯]
لَا الشَّمْسُ يَنبَغِي لَهَا أَن تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
উচ্চারণ: লাশ শামসু ইয়ামবাগি লাহা আন তুদরিকাল কামারা ওয়া লাল লাইলু সাবিকুন্নাহার, ওয়া কুল্লুন ফি ফালাকিন ইয়াসবাহুন।
অর্থ: সূর্য চন্দ্রকে অতিক্রম করতে পারে না এবং রাত দিনকে অতিক্রম করতে পারে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪০]
وَآيَةٌ لَّهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ
উচ্চারণ: ওয়া আয়াতুল লাহুম আন্না হামালনা জুররিয়্যাতাহুম ফিল ফুলকিল মাশহুন।
অর্থ: তাদের জন্য একটি নিদর্শন এই যে, আমি তাদের বংশধরদের বোঝাই করা নৌকায় আরোহণ করিয়েছি। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪১]
وَخَلَقْنَا لَهُم مِّن مِّثْلِهِ مَا يَرْكَبُونَ
উচ্চারণ: ওয়া খালাকনা লাহুম মিম মিছলিহি মা ইয়ারকাবুন।
অর্থ: এবং তাদের জন্য নৌকার অনুরূপ যানবাহন সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা আরোহণ করে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪২]
وَإِن نَّشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنقَذُونَ
উচ্চারণ: ওয়া ইন্নাশা’ নুগরিকহুম ফালা ছারিখা লাহুম ওয়ালা হুম ইউনকাজুন।
অর্থ: আমি ইচ্ছা করলে তাদের নিমজ্জিত করতে পারি, তখন তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই এবং তারা পরিত্রাণও পাবে না। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪৩]
إِلَّا رَحْمَةً مِّنَّا وَمَتَاعًا إِلَى حِينٍ
উচ্চারণ: ইল্লা রাহমাতাম মিন্না ওয়া মাতা’আন ইলা হিন।
অর্থ: কিন্তু আমারই পক্ষ থেকে কৃপা এবং তাদের কিছুকাল জীবনোপভোগ করার সুযোগ দেয়ার কারণে তা করি না। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪৪]
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّقُوا مَا بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَمَا خَلْفَكُمْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
উচ্চারণ: ওয়া ইযা কিলা লাহুমুত্তাকু মা বাইনা আইদিকুম ওয়া মা খালফাকুম লা‘আল্লাকুম তুরহামুন।
অর্থ: আর যখন তাদের বলা হয়, তোমরা সামনের ও পেছনের কে ভয় করো, যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়, তখন তারা তা অগ্রাহ্য করে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪৫]
وَمَا تَأْتِيهِم مِّنْ آيَةٍ مِّنْ آيَاتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوا عَنْهَا مُعْرِضِينَ
উচ্চারণ: ওয়া মা তা’তিহিম মিন আয়াতিম মিন আয়াতি রাব্বিহিম ইল্লা কানু আনহা মু‘রিদিন।
অর্থ: যখনই তাদের পালনকর্তার নির্দেশাবলীর মধ্যে থেকে কোনো নির্দেশ তাদের কাছে আসে, তখনই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪৬]
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ أَنفِقُوا مِمَّا رَزَقَكُمْ اللَّهُ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا أَنُطْعِمُ مَن لَّوْ يَشَاء اللَّهُ أَطْعَمَهُ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
উচ্চারণ: ওয়া ইযা কিলা লাহুম আনফিকু মিম্মা রাজাকাকুমুল্লাহ, কালাল্লাজিনা কাফারু লিল্লাজিনা আমানু আনুত‘ইমু মাল লাও ইয়াশাউল্লাহু আত‘আমাহু, ইন আনতুম ইল্লা ফি দালালিম মুবিন।
অর্থ: যখন তাদের বলা হয়, আল্লাহ তোমাদের যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করো। তখন কাফেররা মুমিনগণকে বলে, ইচ্ছা করলেই আল্লাহ যাকে খাওয়াতে পারতেন, আমরা তাকে কেন খাওয়াব? তোমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত রয়েছো। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪৭]
وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
উচ্চারণ: ওয়া ইয়াকুলুনা মাতা হাযাল ওয়া‘দু ইন কুনতুম সাদিকিন।
অর্থ: তারা বলে, তোমরা সত্যবাদী হলে বলো এই ওয়াদা কবে পূর্ণ হবে? [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪৮]
مَا يَنظُرُونَ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَخِصِّمُونَ
উচ্চারণ: মা ইয়ানজুরুনা ইল্লা সাইহাতাওঁ ওয়াহিদাতান তা’খুজুহুম ওয়াহুম ইয়াখিসসিমুন।
অর্থ: তারা কেবল একটা ভয়াবহ শব্দের অপেক্ষা করছে, যা তাদের আঘাত করবে তাদের পারস্পরিক বাকবিতণ্ডার সময়। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৪৯]
فَلَا يَسْتَطِيعُونَ تَوْصِيَةً وَلَا إِلَى أَهْلِهِمْ يَرْجِعُونَ
উচ্চারণ: ফালা ইয়াসতাতি‘উনা তাওসিয়াতাওঁ ওয়ালা ইলা আহলিহিম ইয়ারজি‘উন।
অর্থ: তখন তারা ওসিয়ত করতেও সক্ষম হবে না এবং তাদের পরিবার-পরিজনের কাছেও ফিরে যেতে পারবে না। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫০]
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ
উচ্চারণ: ওয়ানুফিখা ফিসসূরি ফাইযা-হুম মিনাল আজদাছি ইলা রব্বিহিম ইয়ানসিলুন।
অর্থ: শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখনই তারা কবর থেকে তাদের পালনকর্তার দিকে ছুটে চলবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫১]
قَالُوا يَا وَيْلَنَا مَن بَعَثَنَا مِن مَّرْقَدِنَا هَذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ
উচ্চারণ: কালু ইয়া ওয়াইলানা মাম বা'আছানা মিম মারকাদিনা, হাযা মা ওয়া'আদার রহমানু ওয়া সাদাকাল মুরসালুন।
অর্থ: তারা বলবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদের নিদ্রাস্থল থেকে উঠাল? রহমান আল্লাহ তো এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫২]
إِن كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُونَ
উচ্চারণ: ইন কানাত ইল্লা সাইহাতাওঁ ওয়াহিদাতান ফাইযা-হুম জামী'উল লাদাইনা মুহদারুন।
অর্থ: এটা তো হবে কেবল এক মহানাদ। সে মুহূর্তেই তাদের সবাইকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৩]
فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
উচ্চারণ: ফালইয়াওমা লা তুজলামু নাফসুন শাইয়াওঁ ওয়া লা তুজজাওনা ইল্লা মা কুনতুম তা'মালুন।
অর্থ: আজকের দিনে কারও প্রতি জুলুম করা হবে না এবং তোমরা যা করবে কেবল তারই প্রতিদান পাবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৪]
إِنَّ أَصْحَابَ الْجَنَّةِ الْيَوْمَ فِي شُغُلٍ فَاكِهُونَ
উচ্চারণ: ইন্না আসহাবাল জান্নাতিল ইয়াওমা ফি শুগুলিন ফাকিহুন।
অর্থ: এদিন জান্নাতিরা আনন্দে মশগুল থাকবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৫]
هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَالٍ عَلَى الْأَرَائِكِ مُتَّكِؤُونَ
উচ্চারণ: হুম ওয়া আজওয়াজুহুম ফি জিলালিন 'আলাল আরাইকি মুত্তাকিউন।
অর্থ: তারা এবং তাদের স্ত্রীরা উপবিষ্ট থাকবে ছায়াময় পরিবেশে আসনে হেলান দিয়ে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৬]
لَهُمْ فِيهَا فَاكِهَةٌ وَلَهُم مَّا يَدَّعُونَ
উচ্চারণ: লাহুম ফিহা ফাকিহাতুওঁ ওয়া লাহুম মা ইয়াদ্দা'উন।
অর্থ: সেখানে তাদের জন্য থাকবে ফল-মূল এবং যা চাইবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৭]
سَلَامٌ قَوْلًا مِن رَّبٍّ رَّحِيمٍ
উচ্চারণ: সালামুন কাওলাম মির রাব্বির রহিম।
অর্থ: করুণাময় পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হবে সালাম। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৮]
وَامْتَازُوا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُونَ
উচ্চারণ: ওয়ামতাজুল ইয়াওমা আইয়ুহাল মুজরিমুন।
অর্থ: হে অপরাধীরা! আজ তোমরা আলাদা হয়ে যাও। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৫৯]
أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَن لَّا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
উচ্চারণ: আলাম আ'হাদ ইলাইকুম ইয়া বানি আদামা আল্লা তা'বুদুশ শাইতানা, ইন্নাহু লাকুম 'আদুওউম মুবিন।
অর্থ: হে বনি-আদম! আমি কি তোমাদের বলে রাখিনি, শয়তানের এবাদত করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬০]
وَأَنْ اعْبُدُونِي هَذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِيمٌ
উচ্চারণ: ওয়া আনি'বুদুনি, হাযা সিরাতুম মুস্তাকিম।
অর্থ: এবং আমার এবাদত কর। এটাই সরল পথ। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬১]
وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنكُمْ جِبِلًّا كَثِيراً أَفَلَمْ تَكُونُوا تَعْقِلُونَ
উচ্চারণ: ওয়ালাকাদ আদাল্লা মিনকুম জিবিল্লান কাছিরা। আফালাম তাকুনু তা'কিলুন?
অর্থ: শয়তান তোমাদের অনেক দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা বুঝোনি? [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬২]
هَذِهِ جَهَنَّمُ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ
উচ্চারণ: হা-জিহি জাহান্নামুল্লাতি কুনতুম তু'আদুন।
অর্থ: এই সে জাহান্নাম, যার ওয়াদা তোমাদের দেওয়া হতো। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৩]
اصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ
উচ্চারণ: ইসলাওহাল ইয়াওমা বিমা কুনতুম তাকফুরুন।
অর্থ: তোমাদের কুফরের কারণে আজ এতে প্রবেশ করো। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৪]
الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
উচ্চারণ: আলইয়াওমা নাখতিমু 'আলা আফওয়া-হিহিম ওয়াতুকাল্লিমুনা আইদিহিম ওয়া তাশহাদু আরজুলুহুম বিমা কা-নু ইয়াকছিবুন।
অর্থ: আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব। তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৫]
وَلَوْ نَشَاء لَطَمَسْنَا عَلَى أَعْيُنِهِمْ فَاسْتَبَقُوا الصِّرَاطَ فَأَنَّى يُبْصِرُونَ
উচ্চারণ: ওয়ালাও নাশাউ লাতামাছনা 'আলা আ'ইউনিহিম ফাস্তাবাকুস সিরাত। ফাআন্না ইউবসিরুন?
অর্থ: আমি ইচ্ছা করলে তাদের দৃষ্টিশক্তি বিলুপ্ত করে দিতে পারতাম, তখন তারা পথের দিকে দৌড়াতে চাইলে কেমন করে দেখতে পেত! [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৬]
وَلَوْ نَشَاء لَمَسَخْنَاهُمْ عَلَى مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوا مُضِيًّا وَلَا يَرْجِعُونَ
উচ্চারণ: ওয়ালাও নাশাউ লামাছাখনা-হুম 'আলা মাকা-নাতিহিম ফামাস্তাতা-'ঊ মুদিইয়াওঁ ওয়ালা ইয়ারজি'উন।
অর্থ: আমি ইচ্ছা করলে তাদের স্ব স্ব স্থানে আকার বিকৃত করতে পারতাম, ফলে তারা আগেও চলতে পারত না এবং পেছনেও ফিরে যেতে পারত না। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৭]
وَمَنْ نُعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِي الْخَلْقِ أَفَلَا يَعْقِلُونَ
উচ্চারণ: ওয়ামান নু'আম্মিরহু নুনাক্কিছহু ফিল খালক। আফালা ইয়া'কিলুন?
অর্থ: আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি, তাকে সৃষ্টিগত পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেই। তবুও কি তারা বোঝে না? [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৮]
وَمَا عَلَّمْنَاهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنبَغِي لَهُ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَقُرْآنٌ مُّبِينٌ
উচ্চারণ: ওয়ামা 'আল্লামনাহুশ শি'র। ওয়ামা ইয়ামবাগি লাহু। ইন হুওয়া ইল্লা জিকরুওঁ ওয়া কুরআনুম মুবিন।
অর্থ: আমি রাসুলকে কবিতা শিক্ষা দেইনি এবং তা তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এটা তো এক উপদেশ ও প্রকাশ্য কুরআন। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬৯]
لِيُنذِرَ مَن كَانَ حَيًّا وَيَحِقَّ الْقَوْلُ عَلَى الْكَافِرِينَ
উচ্চারণ: লিইউনজিরা মান কা-না হাইয়াওঁ ওয়া ইয়াহিক্কাল কাওলু 'আলাল কা-ফিরিন।
অর্থ: যাতে তিনি সতর্ক করেন জীবিতকে এবং যাতে কাফেরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭০]
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُمْ مِمَّا عَمِلَتْ أَيْدِينَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُونَ
উচ্চারণ: আওয়ালাম ইয়ারাও আন্না খালাকনা লাহুম মিম্মা ‘আমিলাত আইদিনা আন‘আ-মান ফাহুম লাহা মা-লিকুন।
অর্থ: তারা কি দেখে না, তাদের জন্য আমি আমার নিজ হাতের তৈরি বস্তুর দ্বারা চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তারাই এগুলোর মালিক। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭১]
وَذَلَّلْنَاهَا لَهُمْ فَمِنْهَا رَكُوبُهُمْ وَمِنْهَا يَأْكُلُونَ
উচ্চারণ: ওয়া জাল্লালনা-হা-লাহুম ফামিনহা রাকুবুহুম ওয়া মিনহা ইয়া’কুলুন।
অর্থ: আমি এগুলোকে তাদের হাতে অসহায় করে দিয়েছি। ফলে এদের কতক তাদের বাহন এবং কতক তারা ভক্ষণ করে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭২]
وَلَهُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَمَشَارِبُ أَفَلَا يَشْكُرُونَ
উচ্চারণ: ওয়া লাহুম ফিহা মানা-ফি‘উ ওয়া মাশা-রিবু আফালা ইয়াশকুরুন।
অর্থ: তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে অনেক উপকারিতা ও পানীয় রয়েছে। তবুও কেন তারা শুকরিয়া আদায় করে না? [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭৩]
وَاتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ آلِهَةً لَعَلَّهُمْ يُنصَرُونَ
উচ্চারণ: ওয়াত্তাখাজু মিন দুনিল্লা-হি আ-লিহাতাল লা‘আল্লাহুম ইউনসারুন।
অর্থ: তারা আল্লাহর পরিবর্তে অনেক উপাস্য গ্রহণ করেছে যাতে তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হতে পারে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭৪]
لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَهُمْ وَهُمْ لَهُمْ جُندٌ مُّحْضَرُونَ
উচ্চারণ: লা-ইয়াছতাতী‘উনা নাসরাহুম ওয়াহুম লাহুম জুনদুম মুহদারুন।
অর্থ: অথচ এসব উপাস্য তাদের সাহায্য করতে সক্ষম হবে না এবং এগুলো তাদের বাহিনী রূপে ধৃত হয়ে আসবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭৫]
فَلَا يَحْزُنكَ قَوْلُهُمْ إِنَّا نَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ
উচ্চারণ: ফালা ইয়াহঝুনকা কাওলুহুম; ইন্না না‘লামু মা ইউছিররুনা ওয়া মা ইউ‘লিনুন।
অর্থ: অতএব, তাদের কথা যেন আপনাকে দুঃখিত না করে। আমি জানি, যা তারা গোপনে করে এবং যা তারা প্রকাশ্যে করে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭৬]
أَوَلَمْ يَرَ الْإِنسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِن نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُّبِينٌ
উচ্চারণ: আওয়ালাম ইয়ারাল ইনসানু আন্না খালাকনাহু মিন নুতফাতিন ফাইজা হুওয়া খসিমুম মুবিন।
অর্থ: মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি বীর্য থেকে? অতঃপর সে হয়ে গেল প্রকাশ্য বাকবিতণ্ডাকারী। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭৭]
وَضَرَبَ لَنَا مَثَلًا وَنَسِيَ خَلْقَهُ قَالَ مَنْ يُحْيِي الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ
উচ্চারণ: ওয়া দারাবা লানা মাছালাওঁ ওয়া নাছিয়া খালকাহু কা-লা মাইঁ ইউহয়িল ‘ইযামা ওয়া হিয়া রামিম।
অর্থ: সে আমার সম্পর্কে এক অদ্ভুত কথা বর্ণনা করে, অথচ সে নিজের সৃষ্টি ভুলে যায়। সে বলে, কে জীবিত করবে অস্থিসমূহকে যখন সেগুলো পচে গলে যাবে? [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭৮]
قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ
উচ্চারণ: কুল ইউহয়ীহাল্লাজি আনশাআহা আওওয়ালা মাররাতিওঁ ওয়া হুয়া বিকুল্লি খালকিন ‘আলিম।
অর্থ: বলুন, যিনি প্রথমবার সেগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই জীবিত করবেন। তিনি সর্বপ্রকার সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক অবগত। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৭৯]
الَّذِي جَعَلَ لَكُم مِّنَ الشَّجَرِ الْأَخْضَرِ نَارًا فَإِذَا أَنتُم مِّنْهُ تُوقِدُونَ
উচ্চারণ: আল্লাজি জা‘আলা লাকুম মিনাশ শাজারিল আখদারি নারান ফাইজা আনতুম মিনহু তুকিদুন।
অর্থ: যিনি তোমাদের জন্য সবুজ বৃক্ষ থেকে আগুন উৎপন্ন করেন। তখন তোমরা তা থেকে আগুন জ্বালাও। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৮০]
أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يَخْلُقَ مِثْلَهُم بَلَى وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ
উচ্চারণ: আওয়া লাইছাল্লাজি খালাকাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা বিকাদিরিন ‘আলা আইঁ ইয়াখলুকা মিছলাহুম বালা ওয়া হুওয়াল খাল্লাকুল ‘আলিম।
অর্থ: যিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ, তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৮১]
إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
উচ্চারণ: ইন্নামা আমরুহু ইজা আরা-দা শাইয়ান আইঁ ইয়াকুলা লাহু কুন ফাইয়াকুন।
অর্থ: তিনি যখন কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলে দেন, ‘হও’ তখনই তা হয়ে যায়। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৮২]
فَسُبْحَانَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
উচ্চারণ: ফাছুবহানাল্লাজি বিয়াদিহি মালাকুতু কুল্লি শাইয়িওঁ ওয়া ইলাইহি তুরজা‘উন।
অর্থ: অতএব পবিত্র তিনি, যাঁর হাতে সবকিছুর রাজত্ব এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। [সূরা ইয়াসিন ৩৬:৮৩]
সূরা ইয়াসিনের ফজিলত
সূরা ইয়াসিনের ফজিলত, গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। এই সূরার মাহাত্ম্য সম্পর্কে রাসুল (সা.) অসংখ্য হাদিসে বলেছেন। নিচে কিছু ফজিলত দেওয়া হলো–
সূরা ইয়াসিন কোরআনের হৃদয়
হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন–
“সব কিছুর মধ্যেই একটি হৃদয় আছে; কোরআনের হৃদয় হলো সূরা ইয়াসিন।”
[তাফসির-আল-সাবুনী খণ্ড ২]
এই হাদিসটি আমাদের দেখায় যে, সূরা ইয়াসিন কতটা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, হৃৎপিণ্ড আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, পুরো কার্যকারিতা হৃৎপিণ্ডের ওপর নির্ভর করে। একইভাবে, সূরা ইয়াসিন কোরআনের হৃদয় এবং প্রতিটি মুসলমানের জন্য এটি পড়া ও বোঝা অপরিহার্য।
সূরা ইয়াসিনের চমৎকার পুরস্কার লাভ:
পবিত্র কোরআনের একটি শব্দ পড়লে আল্লাহর ১০টি নিয়ামত পাওয়া যায়। সূরা ইয়াসিন পড়ার সময় একজন ব্যক্তি ১০ বার কোরআন পড়ার সওয়াব পাবেন। যেমন আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি সূরা ইয়াসিন পাঠ করে, আল্লাহ তাকে পুরো কোরআন পড়ার সমান সওয়াব দান করেন।” (তিরমিজি ২৮১২)
সূরা ইয়াসিন গুনাহ মাফের মাধ্যম:
আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য রাতে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।” (ইবনে হিব্বান, দারিমি ৩২৮৩-এ)
আপনি যদি মহান আল্লাহর কাছে আপনার গুনাহের জন্য ক্ষমা চাইতে চান, তাহলে প্রতিদিন সূরা ইয়াসিন পড়ুন। আল্লাহ অবশ্যই আপনার গুনাহ মাফ করবেন।
সূরা ইয়াসিন মৃত্যু-কষ্ট লাঘবের মাধ্যম:
হজরত আবু যর (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
“মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির কাছে সূরা ইয়াসিন পাঠ করলে তার মৃত্যুযন্ত্রণা সহজ হয়ে যায়।” (মাজহারি)
তাছাড়া আরও একটি হাদিস আছে,
“যারা মৃত্যুবরণ করছে তাদের ওপর ইয়াসিন পাঠ কর।” -সানান আবি দাউদ
হজরত মা’কিল ইবনে ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“সূরা ইয়াসিন তোমাদের মুমূর্ষু ব্যক্তিদের নিকট পাঠ করো।” -(আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)
ইমাম আহমাদ (রঃ) বলেছেন, “আমাদের প্রবীণরা বলতেন,
‘মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসিন পাঠ করা হলে আল্লাহ তাঁর কষ্ট লাঘব করে দেন।’” (তাফসিরে ইবনে কাসির, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা- ১৫৪)
হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, সূরা ইয়াসিন মৃত ব্যক্তির নিকট পাঠ করা বাঞ্ছনীয়। একজন মানুষ যে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তার আধ্যাত্মিক সাহায্য এবং সান্ত্বনা দরকার পরকালের সফলতার জন্য।
তাই এই সময়ে যদি কোরআনের হৃদয় তেলাওয়াত করা হয়, এটি যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়ায় শান্তি ও আরাম এনে দেয়।
সুরা ইয়াসিন চাহিদা পূরণের মাধ্যম
মানুষমাত্রই অবস্থান অনুযায়ী নানা ধরনের অভাব-অনটনে বা হাজতে থাকে। শুধু পরিশ্রম করে কিংবা অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। পরিশ্রমকারী বা অর্থ উপার্জনকারীর ওপর আল্লাহর বিশেষ রহমত থাকতে হয়।
সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত-বরকত আসে। সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করলে মনের হাজত বা মনের আশা পূর্ণ হয়।
হজরত আতা ইবনে আবি রাবাহ (রা.) বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি দিনের বেলায় সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার সব হাজত পূর্ণ করা হবে।’ (সুনানে দারেমী : ৩৪৬১)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.) বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি অভাব-অনটনের সময় সুরা ইয়াসিন পাঠ করে, তাহলে তার অভাব দূর হয়, সংসারে শান্তি ও রিজিকে বরকত লাভ হয়। (মাজহারি)
ইয়াহইয়া ইবনে কাসির বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে-শান্তিতে থাকবে। যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে।’ (মাজহারি)
সব ধরনের ভয় দূর করে
মানুষের মনে নানা ধরনের ভয় থাকে। প্রতিদিন এই সুরা পাঠ করলে আপনার সমস্ত ভয় দূর হয়।
আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) বলেন:
“এবং আমি কোরআনকে বোঝার জন্য এবং স্মরণ রাখার জন্য সহজ করে দিয়েছি, তাহলে উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?” (৫৪:১৭)
এই আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, কোরআনের যেকোনো সুরা মুখস্থ করা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন। আর সুরা ইয়াসিন কোরআনের সবচেয়ে সহজ সুরাগুলির মধ্যে একটি। এটি খুব দীর্ঘ নয়, আয়াতগুলি উপলব্ধি করা এবং মুখস্থ করা তুলনামূলকভাবে সহজ।
বাকিটা নির্ভর করে আপনি কতটা অনুপ্রাণিত এবং কতটা প্রচেষ্টা করতে ইচ্ছুক তার ওপর। আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন তাহলে বলতে পারি, এই সুরাটি মুখস্থ করতে ৫-১০ দিন সময় লাগতে পারে।
সুরা ইয়াসিন আল্লাহর চূড়ান্ত ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা বর্ণনা করে। নিয়মিত সুরা ইয়াসিন, সুরা মূলক, আয়াতুল কুরসি ইত্যাদি তেলাওয়াত করুন। এটি আপনার ওপর মহান আল্লাহর নিয়ামত দান করবে। এটি আপনার বিশ্বাসকেও মজবুত করে এবং আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্ককে দৃঢ় করে।