স্ত্রীর মাসিকের সময় সহবাস করার বিকল্প নিয়ম

স্ত্রীর মাসিকের সময় সহবাস করার বিকল্প নিয়ম
Admin December 02, 2024 457
হায়েজ বা মাসিক নারীদেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মাসিকচক্রের সঙ্গে যুক্ত আছে ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধান।

নিম্নে সেই বিষয়ে কিছু মাসআলা তুলে ধরা হলো—

স্ত্রীর মাসিকের সময়সীমা ও নামাজ-রোজার বিধান


ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুযায়ী একজন নারীর ঋতুস্রাবের সর্বনিম্ন সময় তিনদিন আর সর্বোচ্চ সময় ১০ দিন। তিন দিন থেকে ১০ দিন পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে মাসিক ঋতুস্রাবকালীন নামাজ-রোজা করার প্রয়োজন নেই। এই দিনগুলোতে নারীর যথাসাধ্য বিশ্রাম দরকার। এজন্য ওই দিনগুলোতে ইসলাম নারীকে নামাজ-রোজা থেকে দায়মুক্তি দিয়েছে। কোনো কারণে ঋতুস্রাবের সময় ১০ দিনের চেয়ে বেড়ে গেলে নিজের আগের অভ্যাস অনুপাতে যে মেয়াদ আছে, ওই দিন পর্যন্ত বন্ধ রেখে এরপর থেকে নামাজ-রোজা পালন করবে। আর যদি ১০ দিনের ভেতরই শেষ হয়ে যায়, তাহলে শুরু ও শেষ দিন পর্যন্ত ঋতুস্রাব গণ্য করে নামাজ-রোজা বন্ধ রাখবে। এ অবস্থায় নামাজের কাজা না থাকলেও পরবর্তী সময়ে রোজা কাজা করে নেবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩০০-৩০১)

মাসিকের অবস্থায় স্ত্রী সহবাস


মাসিক অবস্থায় জেনেশুনে স্ত্রী সহবাস করা নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘লোকেরা আপনাকে হায়েজ তথা ঋতুস্রাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন, তা অপবিত্রতা। অতএব তোমরা হায়েজের সময় স্ত্রীদের থেকে পৃথক থাকো এবং তাদের নিকটবর্তী হবে না। যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২২)

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ঋতুবতীর সঙ্গে মিলিত হয় কিংবা কোনো নারীর পশ্চাদ্দ্বারে সঙ্গম করে অথবা কোনো গণকের কাছে যায়, নিশ্চয়ই সে মুহাম্মাদের ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করে। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৫)  তাছাড়া ডাক্তারদের মতেও এ সময় স্ত্রী সহবাস করা অনুচিত।

কারণ এ সময় স্রাবের রক্তের সঙ্গে বিভিন্ন রোগের জীবাণু বের হয়ে থাকে, যা সহবাসের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সময় সহবাস নিষিদ্ধ। তবে কেউ যদি তা করে ফেলে তার জন্য কর্তব্য হলো আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তিগফারের পাশাপাশি সদকা করা। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সঙ্গম করে তার সম্পর্কে নবী (সা.) বলেছেন, সে যেন এক দিনার অথবা আধা দিনার (যা বর্তমান মূল্য হিসেবে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ) সদকা করে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৬৪)

স্ত্রীর মাসিকের আরও কিছু বিধান


মাসিক চলাকালীন নারীরা কোরআন তিলাওয়াত করবে না এবং অন্যকে শেখানোর উদ্দেশ্যও পড়বে না। তবে একান্ত প্রয়োজন হলে পূর্ণ আয়াত তিলাওয়াত না করে এক বা দুই শব্দ করে কাউকে বলে দিতে পারবে এবং গোসল ফরজ থাকা অবস্থায়ও তাফসির পড়তে পারবে। তবে অজু করে পড়া ও ধরা মুস্তাহাব। (বাদায়েউস সানায়ে ১/১৫০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৯)

মাসিককালে কেউ যদি সিজদার আয়াত শুনে তাহলে তার ওপর সিজদা ওয়াজিব হবে না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ৪৩৪৭)

রমজানের রোজা, হজের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কারণে নারীরা ওষুধ সেবনের মাধ্যমে সাময়িকভাবে স্রাব বন্ধ রাখে। ওষুধ সেবনের মাধ্যমে স্রাব বন্ধ রাখা বৈধ হলেও তা ব্যবহারের আগে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক, হাদিস : ১২১৯, ১২২০ আল-মুহিতুল বুরহানি ১/৩৯৯)
ঋতুস্রাবকালীন নারীরা আজানের জবাব দিতে পারবে। (আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৩)

কেউ যদি হায়েজ অবস্থায় ইতিকাফ করে, তাহলে তার ইতিকাফ আদায় হবে না। এমনকি ইতিকাফের মাঝখানে হায়েজ চলে এলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। (ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/২১)

প্রশ্নঃ আমার মাসিক চলা কালে স্বামী ধৈর্যধারণ করতে পারে না। তার সেক্স অত্যাধিক বেশী। আমার মাসিক চলাকালে সে বিকল্প পন্থায় কিভাবে তার সেক্স চাহিদা নিবারণ করতে পারে পরামর্শ দিলে উপকৃত হবো। ধন্যবাদ

উত্তরঃ মাসিক চলাকালে ইসলামে সঙ্গম করা হারাম বিধায় আপনি বিকল্প পদ্ধতিতে আপনার স্বামীর যৌন চাহিদা নিবারণ করাতে চেয়েছেন। আপনি আপনার স্বামী যৌন চাহিদাকে গুরুত্ব দেন এবং তাকে অনেক ভালোবাসেন এই কথার দ্বারাই বুঝা যায়। আপনি চান না আপনার সাময়িক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য তার কোন কষ্ট হউক। আমরা আপনার আগ্রহকে স্বাগতম জানাই। আপনি মাসিকের সময় দুইটি নিয়মে বা পদ্ধতিতে আপনার স্বামীকে যৌনতা লাভের মাধ্যমে তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন।

স্ত্রীর মাসিক চলাকালীন বিকল্প পন্থায় যৌনতা লাভ করার পদ্ধতি

প্রথম পদ্ধতিঃ স্ত্রী তার স্বামীকে লিঙ্গকে হ্যান্ডজবের মাধ্যমে বীর্যপাত করিয়ে স্বামীকে যৌন আনন্দ দিতে পারেন। এই কাজ করার পূর্বে আগের মতোই স্বামী স্ত্রী একে অপরকে আলিঙ্গণ, চুম্বনের মাধ্যমে নিজেদের মাঝে যৌন উত্তেজনা জাগিয়ে নিবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ উত্তেজিত লিঙ্গ স্ত্রীর উরুতে ঘর্ষণের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটিয়ে স্বামী যৌন আনন্দ উপভোগ করতে পারে।