শবে মেরাজ কি (ফজিলত ও আমল)

মেরাজ অর্থ হলো ঊর্ধ্বগমন। লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী উপমহাদেশে শবে মেরাজ হিসাবে আখ্যায়িত। এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) অলৌকিক উপায়ে উর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
শবে মেরাজ কি
মেরাজ আরবি শব্দ, শাব্দিক অর্থ ঊর্ধ্বগমন, আকাশপথে ভ্রমণ করা, সোপান ইত্যাদি। রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে জাগ্রত অবস্থায় মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা, এরপর বোরাকে করে ঊর্ধ্বাকাশ পাড়ি দেওয়ার মাধ্যমে আরশে আজিমে পৌঁছে আল্লাহর দিদার লাভ করার নামই মেরাজ। কোরআনে কারিমে আল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র সত্তা তিনি, যিনি বান্দাকে তাঁর নিদর্শনগুলো দেখানোর জন্য রাত্রিকালে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ পবিত্র, নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ১)
শবে মেরাজের ঘটনা
মহানবী (সা.) কর্তৃক সশরীরে সজ্ঞানে জাগ্রত অবস্থায় জিবরাইল (আ.) ও মিকাইলের (আ.) সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মেরাজের রাতে সফর করেন। তিনি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে প্রথম আসমানে গমন করেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে সপ্তম আসমান এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিম পর্যন্ত ভ্রমণ করে মহান রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন। পাশাপাশি জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করে পৃথিবীতে ফিরে আসেন।
ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক অর্থাৎ (ফরজ) নির্ধারণ করা হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিধান নির্দিষ্ট করা হয়।
শবে মেরাজের রোজা রাখা যাবে কি না?
বহু মুসলমান এই রাত উপলক্ষে মেরাজের রোজা রাখতে চান বা রাখার বিধান জানতে চান। অনেকেই শবে মেরাজের নামাজ বা রোজাকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করেন। নামাজ আদায় করা ও রোজা রাখা অবশ্যই পুণ্যের কাজ। কিন্তু শবে মেরাজ উপলক্ষে বিশেষ কোনো নামাজ ও রোজার বিধান ইসলামি শরিয়তে নেই।
শবে মেরাজের রাতে কি কি ইবাদত করতে হয়?
মিরাজের রাত ইবাদাতের জন্য নির্দিষ্ট করা,এরাতে ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান করা, জিকির-আজকার করা, শবীনা খতম ও দোয়া অনুষ্ঠান করা, মিলাদ ও ওয়াজ মাহফিল করা (সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম করা), উদ্ভট গল্পবাজী, আতশবাজি, আলোকসজ্জা, কবর জিয়ারত, দান-সদকা করা, এ মাসে অধিক সওয়াবের আশায় ওমরাহ করা ইত্যাদি সুস্পষ্ট বিদআত।
শবে মেরাজের নামাজ
শবে মেরাজে করণীয় ও বর্জনীয়
শবে মিরাজ উপলক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কোনো নামাজ আল্লাহর রাসুলের হাদিসের মাধ্যমে অথবা সাহাবিদের আমলের মাধ্যমে অথবা তাবেয়িদের আমলের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়নি। এ রাতের কোনো ইবাদত আল্লাহর রাসুলের কোনো হাদিসের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়নি।
শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে নফল রোজা রাখার কোনো বর্ণনা কোরআন-হাদিসের কোথাও নেই। আল্লাহর রাসুল ও তার অনুসারীরা এই দিনে বিশেষভাবে কোনো রোজা রেখেছেন এমনে কোনো বর্ণনা ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই এই দিনে শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে রোজা রাখা কোনো ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না।
শবে মেরাজের নামাজে কি কি সূরা পড়তে হয়?
শবে মেরাজের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়
সূরা ফাতিহা: প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়া ওয়াজিব। সূরা ইখলাস: অনেক মুসলিম প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস 3 বার পড়েন। সূরা কাফিরুন: কিছু মুসলিম প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা কাফিরুন পড়েন।
শবে মেরাজ কত রাকাত?
শবে মেরাজ কি ১২ রাকাত নামাজ উমর ফারুক আতরি |
শবে মেরাজের নামাজ কি সুন্নত?
তাই স্পষ্ট ভাষায় বলবো, রাসূলের (সা) সুন্নাহ হিসাবে শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে কোনো বিশেষ নামাজ নাই।