প্রেসার লো হলে করণীয়
-679f1adac4ec0.png)
Admin
February 02, 2025
106
রক্তচাপ কমে যাওয়া, লো প্রেশার, লো ব্লাড প্রেশার কিংবা নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। এ নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। অনেকেই মনে করেন দুর্বল স্বাস্থ্য যাঁদের, তাঁরা নিম্ন রক্তচাপে ভুগে থাকেন। এটা সত্য নয়। স্থূল মানুষেরও নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশার থাকতে পারে।
এ বিষয়ে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মু. সালাউদ্দিন বলেন, সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মি. মি. মার্কারি ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মি. মি. মার্কারির নিচে হলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। প্রেশার যদি খুব বেশি নেমে যায় তাহলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃৎপিণ্ডে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে অসুস্থতা দেখা দেয়। তাই প্রেশার লো হলে বাড়িতেই প্রাথমিক কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আমাদের শরীরের জন্য উচ্চ রক্তচাপের মতো নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ লো ব্লাড প্রেশারও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকে লো ব্লাড প্রেশার হতে পারে।হঠাৎ ব্লাড প্রেশার লো হয়ে গেলে সেই অবস্থায় তাড়াতাড়ি কফি পান করে নিতে হবে। কারণ কফির মধ্যে যে ক্যাফেইন উপকরণ থাকে তা ব্লাড প্রেশার বৃদ্ধি করবে। ফলে লো প্রেশার থেকে স্বাভাবিক হবে। এতে আপনি দ্রুতই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
যাদের রক্তচাপ প্রায় সময় কম থাকে এবং কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের কারণে লো ব্লাড প্রেশার হয় তারা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু নির্দিষ্ট খাবার রাখতে পারেন। এতে ধীরে ধীরে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসবে।
প্রেসার লো হলে করণীয়
- আয়রন, ভিটামিন সি, বি ১২, ও ফলেট শরীরের রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। এই সব খাদ্য উপাদানগুলো যে খাদ্যের মধ্যে পাওয়া যায় সেসব খাদ্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
- ডিম হাইপোটেনশনের রোগীদের জন্য উপযোগী খাদ্য। ডিমকে আদর্শ খাদ্যও বলা হয়। ডিমে আছে ভিটামিন বি ১২, যা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। স্যুপ, কফি, ফলের রস, দুধ, শরবত ইত্যাদি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
- টক জাতীয় ফলে থাকে ভিটামিন সি। এ ছাড়াও পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা সোডিয়ামের কার্যকারিতা ঠিক রাখে। তাই লেবু, মালটা, কমলা জাতীয় ফল প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
- গরু, মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, ডাল, লাল শাক, পালং শাক, কচু শাক, সিমের বিচি, মিষ্টি কুমড়ার বিচি ও শুকনা ফল আয়রনের ভালো উৎস। এ ছাড়া এতে সোডিয়াম ভালো পরিমাণে থাকে।
- ডাবের পানিতে থাকে সোডিয়াম, যা রক্তচাপ বাড়ায়। তাই ডাবের পানি খাওয়া ভালো।
- যাদের ব্লাড প্রেশার একদম লো থাকে তারা ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এটি রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।
- অসুস্থতাজনিত কারণে যেমন জ্বর, ডায়রিয়া ইত্যাদি কারণে প্রেশার কমে যেতে পারে।
এ সময়ে তাৎক্ষণিক যেসব খাবার দিলে উপকার পাওয়া যেতে পারে-
- স্যালাইন প্রেশার বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্যালাইন খেলে তাৎক্ষণিক প্রেশার বাড়তে থাকে। এ ছাড়া লবণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে হালকা একটু চিনি যোগ করে খাওয়ানো যেতে পারে।
- আঙ্গুরের রসও প্রেশার বাড়ানোর জন্য খুবই উপকারী।
- লবণযুক্ত খাবার যেমন চিপস, স্যুপ খাওয়ানো যেতে পারে।
লবণ
অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অনেক ক্ষতিকর দিক আছে। তবে পরিমিত লবণ প্রতিদিন খেতে হবে। কারণ আমাদের শরীরের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লবণ গ্রহণ করা জরুরি। যদি আপনার লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যা দেখা দেয় তবে সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা লবণ খেয়ে নিন। লেবু-পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীরে দ্রুত শক্তি আসবে।
বাদাম
বাদাম খাওয়ার অনেক উপকারিতা। এটি কিন্তু কাজ করে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণেও। রাতে একমুঠো বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেটি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পিষে নিন। ব্লাড প্রেশার স্বাভাবিক রাখতে এটি খেতে পারেন। হঠাৎ প্রেশার কমে গেলে এই খাবার খেলে তা দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে।
পানি
পর্যাপ্ত পানি পান করা অনেক কারণেই জরুরি। এদিকে শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে প্রেশার লো হবেই। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করার পরামর্শ দেন। শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে নিয়মিত ডাবের পানি, লেবুর শরবত ইত্যাদি পান করা উচিত।