মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি ২০২৫

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি ২০২৫
Admin January 15, 2025 2614

দ্রুতগতির যানবাহন গুলোর মধ্যে মোটরসাইকেল অন্যতম। রাস্তায় চালানোর জন্য মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন করা অত্যন্ত জরুরী। তা না হলে সড়কপথে চলার সময় বিভিন্ন আইনি জটিলতার মধ্য পড়তে হতে পারে।

আপনার এই গুরুত্বপূর্ণ কাগজটি যদি সম্পন্ন করা না হয়ে থাকে কিংবা ইতিমধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে থাকে তাহলে নিচের পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন এবং খুঁটিনাটি জেনে নিন।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার গুরুত্ব

বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী প্রত্যেকটি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করা অবশ্যই বাধ্যতামূলক। এটা ছাড়া রাস্তায় কোন গাড়ি চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোন গাড়ি রাস্তায় চালানো যাবে না।

রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে

অনেকেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সম্পর্কে সঠিকভাবে না জানার কারণে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন না। আপনাদের সুবিধার জন্য আমি নিচে একটি তালিকা প্রদান করছি।

১। আমদানি কারক অথবা ডিলার কর্তৃক প্রদত্ত নির্ধারিত আবেদন ফরম। এছাড়াও সাথে প্রয়োজন হবে বিল অফ এন্ট্রি, এলসি কপি এবং ইনভয়েস ইত্যাদি। অর্থাৎ গাড়িটির আমদানি সংক্রান্ত সকল ধরনের ডকুমেন্ট।

২। মোটরসাইকেলের ভ্যাট পরিশোধ করেছেন কিনা সেই কাগজপত্র।

৩। আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি, কিন্তু এটি না থাকলে লার্নার কপি দিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

৪। ডিলার কর্তৃক প্রদত্ত মোটরসাইকেলের ভ্যাটের কাগজ।

৫। আপনি যে মোটরসাইকেলটির ক্রয় করেছেন সেটির প্রমাণপত্র অথবা সেল সার্টিফিকেট।

৬। আপনার যদি ট্যাক্স যোগ্য আয় থাকে তাহলে টিন সার্টিফিকেট।

৭। মোটরসাইকেলের ট্যাক্স টোকেন নবায়নের জন্য নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ।

৮। যদি কোন মোটরযান ব্যক্তির অধীনে আমদানি করা হয় তাহলে সেই ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড, বাসার বিদ্যুৎ বিলের কপি, পাসপোর্ট সাইজের ছবি ইত্যাদি প্রয়োজন হতে পারে।

৯। রেজিস্ট্রেশন করার সময় মোটরযান পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন প্রদান করা হয়। সেটির কপিও প্রয়োজন হবে।

আমি উপরে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলোর কথা উল্লেখ করেছি সেগুলো আপনি গাড়ি কেনার সময় অবশ্যই পাবেন। এগুলো নিয়ে আলাদাভাবে ঝামেলা পোহাতে হবে না। সাধারণত শোরুম থেকে একটি বাইক কেনার ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই এই সকল ডকুমেন্টস গুলো সরবরাহ করা হয়ে থাকে। তবে নানা কারণে সর্বোচ্চ ৩ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

মোটরসাইকেলের ট্যাক্স টোকেন নবায়ন বা রেজিস্ট্রেশন করার ধাপ গুলো কি কি

সবগুলো কাগজপত্র জোগাড় করা হয়ে গেলে নিজ জেলার বিআরটিএ অফিসে আবেদন করবেন। তারপর নির্ধারিত ফি জমা প্রদান করতে হবে। একটি সকল প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে বিআরটিএ অফিস হতে গাড়িটি পরিদর্শনের জন্য নিয়ে যেতে বলা হবে।

মোটরযান পরিদর্শন করে সকল তথ্য এবং যাচাই-বাছাই শেষ করে রেজিস্ট্রেশনের জন্য অনুমোদন প্রদান করা হবে। তারপরেই রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সহ একটি প্রাপ্তির স্বীকার পত্র গ্রাহককে দেওয়া হবে।

মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বায়োমেট্রিক দিতে হয়। এটিকে আপনারা ডিজিটাল স্বাক্ষরও বলতে পারেন। সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় কবে ডিজিটাল নাম্বার প্লেট এবং স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।

তবে বর্তমানে এমন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে যে রেজিস্ট্রেশন এবং লাইসেন্স কার্ড গ্রাহকদের মাধ্যমে নিজের ঠিকানায়ও নিতে পারবেন। সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা করে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ এ ধরনের একটি উদ্যোগ নিয়েছে।

সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কত টাকা লাগে

২০২৪ সালের নিয়ম অনুযায়ী ১০০ সিসি পর্যন্ত ২ বছর মেয়াদী রেজিস্ট্রেশন করতে চাইলে আপনাকে ফ্রি প্রদান করতে হবে ১০ হাজার ৪৪১ টাকা।

আর একই ধরনের মোটরসাইকেলের ১০ বছরের মেয়াদের জন্য করতে চাইলে ফি পরিশোধ করতে হবে ১৯ হাজার ৬৪১ টাকা।

আর ১০১ সিসি থেকে ১৬৫ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি ২ বছরের জন্য ১১ হাজার ৭৬৪ টাকা। আর ১০ বছরের জন্য ২০ হাজার ৯৬৪ টাকা।

সকল ধরনের স্মার্ট কার্ড, নাম্বার প্লেট ইত্যাদি সব মিলিয়েই এই ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

আবেদন করবেন কিভাবে

আপনি ঘরে বসে নিজেই কিংবা দক্ষ কোন লোকের মাধ্যমে এই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারেন। তবে আবেদনের সময় আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন এরকম একটি ফোন নাম্বার দিবেন।

কারণ ভবিষ্যতে যে কোন প্রয়োজনে এট ফোন নাম্বারটি দরকার হতে পারে। মোটরসাইকেল এবং আপনার বিভিন্ন তথ্য প্রদানের সময় বারবার যাচাই করে নিন। এ ধরনের বিষয় গুলোতে ভুল তথ্য কিংবা নামের বানান ভুল হলে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়।

আপনি যদি ব্যবসায়ী কিংবা পেশাদার হয়ে থাকেন তাহলে আবেদনের সময় সেগুলি নির্বাচন করে দিন।

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন চেক করবেন কিভাবে

আগেকার দিনে সরকারি কিংবা বেসরকারি যেকোনো ধরনের আবেদন করতে বেশ সময় এবং অর্থ ব্যয় হতো। কারণ সকল কিছুই হাতে করতে হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় ঘরে বসেই এর ধরনের যাবতীয় কাজগুলো সম্পন্ন করা যায়।

আপনার মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে কিনা কিংবা নাম্বার প্লেট এসেছে কিনা সেটি ঘরে বসেই এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারবেন।

আপনার হাতে থাকা ফোনটি মেসেজ অপশনে গিয়ে N টাইপ করে ২৬৯৬৯ নম্বরে পাঠিয়ে দিন। তবে আবেদন করার সময় যে ফোন নম্বরটি ব্যবহার করেছেন সেই নাম্বারটি দিয়েই এসএমএস পাঠাতে হবে।

ট্যাক্স টোকেন নবায়ন ফি ২০২৫

সাধারণত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ১০ বছর মেয়েদের করে থাকলে দীর্ঘ সময় ঝামেলা ছাড়াই চালানো যায়। তবে ১০ বছর হোক কিংবা ২ বছর, যাদের কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে তারা নতুন ফি জমা দিয়ে পুনরায় কাগজ নিতে পারবেন।

২ বছর মেয়াদী ট্যাক্স টোকেন নবায়ন করার ফি হচ্ছে ৩ হাজান ৪৫০ টাকা। আপনার নিকটস্থ এনআরবিসি ব্যাংকের শাখায় এই মেয়াদ নবায়ন ফি জমা প্রদান করতে পারবেন।

আশা করি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য গুলি সম্পর্কে আপনারা অবহিত হয়েছেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন এবং নিরাপদে রাস্তায় বাইক চালান। এধরনের আরো প্রয়োজনীয় তথ্য গুলি পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।