মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া

Admin
October 16, 2024
296
স্মরণশক্তি কিংবা মুখস্ত করার যোগ্যতা মহান আল্লাহ তাআলা অনেক বড় নেয়ামত। কেউ চাইলে যেমন কোনো কিছু স্মরণ রাখতে পারে না আবার চাইলে যে কেউ কোনো কিছু মুখস্ত রাখতে পারে না। মুখস্ত করা বা স্মরণ রাখার জন্য আল্লাহর সাহায্য ও অনুগ্রহ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। যুগে যুগে অনেক কম সময়ে ছোট থেকে বড় মানুষরাও পবিত্র কুরআনুল কারিম মুখস্ত করেছেন। হজরত ইমাম শাফেঈ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে শুরু করে ৪ বছরের শিশুও রয়েছে এ তালিকায়। মুখস্ত শক্তি বা স্মরণশক্তি নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহ তাআলার নেয়ামত।
কুরআনুল কারিম মুখস্ত রাখার কৌশল তথা স্মরণশক্তি বাড়াতে আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নসিহত পেশ করেছেন এবং দোয়া শিখিয়েছেন। যা উম্মতে মুসলিমার জন্য নসিহত ও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম যখন ওহি নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাসের কাছে আসতেন। ওহি নাজিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা মুখস্ত করার চেষ্টা করতেন। আর তা ছিল বিশ্বনবির জন্য অনেক কষ্টসাধ্য কাজ।
তখন আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের একটি আয়াত নাজিল করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উপদেশ দিলেন এবং একটি দোয়া শিখিয়ে দিলেন। এ নসিহত এবং দোয়ার বরকতেই কুরআন আয়ত্ব করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কষ্ট দূর হয়ছিল। আর তাতে তিনি কুরআনের ওহি আয়ত্ব করেও প্রশান্তি লাভ করেন।
আর এ দোয়া ও নসিহতের আমলেই মানুষের মুখস্ত শক্তি ও স্মরণশক্তি দ্রুত বেড়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِن قَبْلِ أَن يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ
‘সত্যিকার মালিক হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআলা। আপনার কাছে আল্লাহর ওহি সম্পুর্ণ হওয়ার আগে আপনি কুরআন আয়ত্বের জন্য তাড়াহুড়া করবেন না।’
(আয়াতের প্রথমাংশে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওহি আসার পর তা মুখস্ত করার বিষয়ে তাড়াহুড়ে করতে নিষেধ করেছেন। বরং ধীরস্থিরতা অবলম্বনের উপদেশ দিয়েছেন।)
অতপর কুরআন আয়ত্ব করতে আয়াতের শেষাংশে এ দোয়া করতে বলেছেন-
وَقُل رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا
‘আর বলুন- হে আমার প্রভু! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।’ (সুরা ত্বাহা : আয়াত ১১৪)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেয়া এ উপদেশ ও দোয়াই মানুষের মুখস্ত শক্তি বাড়ানোর অন্যতম উপায়।
সুতরাং মানুষের উচিত, যে কোনো পরিস্থিতিতে তাড়াহুড়ো নয়, বরং ধীরস্থিরভাবে মহান আল্লাহর সাহায্য নিয়ে তা আয়ত্ব করার প্রচেষ্টা করা আর আল্লাহর কাছে একান্ত মনে এ দোয়া করা-
رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বি যিদনি ইলমা।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আমার জ্ঞান (মুখস্ত বা স্মরণ শক্তি) বাড়িয়ে দিন।’
ইবাদতে মনোযোগ লাভের দোয়া
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আ-ইন্নি আলা জিকরিকা, ওয়া শুকরিকা, ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনার জিকির করতে, আপনার শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে এবং সুন্দরভাবে আপনার ইবাদত করতে আমাকে সাহায্য করুন।
উপকার: মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাত ধরে বলেন, হে মুআজ, আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসি, আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসি। তিনি বলেন, হে মুআজ, আমি তোমাকে অসিয়ত করছি, তুমি প্রত্যেক নামাজের পর এ দোয়াটি (উপরোক্ত) কখনো পরিহার করবে না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের নসিহত ও দোয়ার মাধ্যমে মুখস্ত শক্তি বাড়িয়ে তোলার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।