মহিলাদের ঘরে বসে ইনকাম – বর্তমান ডিজিটাল যুগে ঘরে বসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য এটা অনেক বড় একটি সুযোগ। অনেক মহিলা আছেন যারা স্বাধীন ভাবে টাকা উপার্জন করে জীবন অতিবাহিত করতে চান। কিন্তু পারিবারিক সমস্যা বা ধর্মিয় অনেক কারণে বাহিরে কাজ করার কোনো সুযোগ থাকে না। কিন্তু তাই বলে কি ইনকাম করতে পারবেন না?
একজন ছেলে চাইলেই ঘরে কিংবা বাইরে গিয়ে যেকোনভাবে উপার্জনের ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু একজন মেয়ের জন্য ঘরের বাইরে গিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা কিংবা ব্যবসা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাছাড়া ইসলামিক ভাবেও বিভিন্ন বিধি-নিষেধ রয়েছে।
তাই একজন মেয়ে কিভাবে ঘরে বসেই অনলাইনে কিংবা অফলাইনে অল্প টাকা বিনিয়োগ করে ইনকাম করতে পারবে, সে সম্পর্কে এই আর্টিকেলে সেরা কিছু আইডিয়া তুলে ধরা হলো।
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায়
ঘরে বসে একজন মেয়ে স্বল্প পুঁজি নিয়ে যেসকল ব্যবসা শুরু করতে পারবে, তেমন কয়েকটি ব্যবসা নিয়ে নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো:
(১) কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঘরে বসে ইনকাম করার অন্যতম সেরা উপায় হলো কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা। আগে থেকেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন অলি গলিতে এই ব্যবসার প্রচলন ছিল উদ্যোক্তা নারীদের মাঝে। তবে বর্তমানে শহর ছাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলেও অনেক নারী উদ্যোক্তা এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে গেছে।
পরিবারের কোনো পুরুষ সদস্যের মাধ্যমে কাপড়ের পাইকারি বাজার থেকে বিভিন্ন রকমের কাপড় সংগ্রহ করে নিজ এলাকায় কিংবা নিজ গ্রামে বিক্রি করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ছোট বাচ্চাদের জামা কাপড়, গজ কাপড়, বিছানার চাদর, থ্রি পিস, বোরকা ইত্যাদি কাপড় বাছাই করতে পারেন। খুবই অল্প পুঁজি নিয়েই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা শুরু করার জন্য:
১০-২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। কাপড়ের পাইকারি বাজার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাপড়ের পাইকারি মার্কেট গুলো হলো: ইসলামপুর, নবাবপুর, গাউছিয়া, বায়তুল মোকাররম মার্কেট, গুলিস্তান, চকবাজার, এলিফ্যান্ট রোড ও নিউমার্কেট ইত্যাদি।
স্থানীয় মানুষের চাহিদা ও জীবনমানের উপর লক্ষ্য রেখে স্বল্প খরচে ভালো পণ্যটি সরবরাহের চেষ্টা করতে হবে। পাড়া প্রতিবেশীদের মাঝে এ ধরনের পাইকারি কাপড় বিক্রি করে, প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
(২) ঘরে বসে নারী উদ্যোক্তার ফাস্টফুড বিক্রি
আপনি শহরাঞ্চলে বসবাস করে থাকেন কিংবা গ্রামাঞ্চলে, ফাস্টফুড বিক্রির ব্যবসা আপনার জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহু নারী উদ্যোক্তা। এমনই একটি ব্যবসার উদাহরণ হলো- সিরাজগঞ্জের, বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের ৩ বোন আর তাদের বাবা ঘরে বসেই গড়ে তুলেছেন ফাস্ট ফুডের ব্যবসা।
আশেপাশের গ্রামের কেউ অর্ডার করলেই বাড়িতে পৌঁছে দেন পিজ্জা, বার্গার, চিকেন ফ্রাইসহ হরেক রকমের খাবার। প্রথমদিকে খুব একটা সাড়া না পেলেও কম দামে মান সম্মত খাবার পাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে তাদের খাবারের চাহিদা ও বিক্রি। এভাবেই উদ্যোক্তা মানসিকতার মাধ্যমে নারীরাও স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করে ভালো পরিমাণ উপার্জন করতে পারে ঘরে বসেই।
ঘরে বসে ফাস্টফুড ব্যবসা শুরু করার জন্য:
খাবার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, এবং ফাস্টফুড খাবার তৈরীর কাঁচামাল সংগ্রহ করলেই হবে। যেহেতু এই ব্যবসাতে নির্দিষ্ট কোন দোকানের প্রয়োজন নেই, তাই মাত্র ২-৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়েও ব্যবসাটি শুরু করা সম্ভব। তারপর অনলাইনে Facebook পেজ খুলে এবং আশেপাশের পরিচিত মানুষদের মাধ্যমে ব্যবসার কথা শেয়ার করে আপনার ব্যবসাটির প্রসার করতে পারবেন।
এই ব্যবসাটির উপার্জন নির্ভর করবে আপনার আশেপাশের মানুষের চাহিদা এবং আপনার তৈরিকৃত খাবারের স্বাদের উপর। যদি খাবারের স্বাদ দিয়ে কাস্টমারের মন জয় করতে পারেন, তাহলে খুব যতই ব্যবসার প্রসার হবে এবং ৩০-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
(৩) ঘরে বসে নারী উদ্যোক্তার হাঁসের মাংস বিক্রি
হাঁসের মাংসও যে অনলাইনে বিক্রি করা যায়, সেই বিষয়টি অনেকেরই ধারণার বাইরে। তবে উদ্যোক্তা মনোভাবের কারণে অনেকেই এই বিষয়টিকে একটি ব্যবসায়ীক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। এমন একটি উদাহরণ হলো- লিজা আক্তার ও তার স্বামীর অনলাইনে হাঁসের মাংস বিক্রির ব্যবসা।
লিজা আক্তার চাকরি ছেড়ে দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতি শুক্রবার হাঁসের মাংস রান্না করে বিক্রি উদ্যোগ নেয়। ধীরে ধীরে সম্প্রসারণ হয় তার ব্যবসার এবং বর্তমানে সপ্তাহব্যাপী বিক্রি করে রান্না করা হাঁসের মাংস। শুরুতে ব্যবসাটি ততটা লাভজনক মনে না হলেও, বর্তমানে তাদের মাসিক বিক্রির পরিমাণ লক্ষ টাকারও বেশি।
হাঁসের মাংস সচরাচর বিভিন্ন খাবার হোটেলে পাওয়া যায় না। কিন্তু এই মাংসের চাহিদা গ্রাম ও শহরাঞ্চলে অনেক। ভালো মানের হাঁসের মাংসের সংগ্রহ করে ইউনিক রেসিপিতে রান্না করে আপনিও তাদের মতই বিক্রি করতে পারবেন। এই ব্যবসাতেও ফেসবুককেই আপনাদের দোকান বা অনলাইন স্টোর হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
এই ব্যবসার সবচেয়ে ভালো দিক হলো খুবই অল্প পুজিতে ব্যবসাটি শুরু করা সম্ভব। যেমন- মাত্র ২-৪ হাজার টাকা প্রাথমিক মূলধন নিলেই যথেষ্ট। তবে আপনাকে ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং নিজের ফেসবুক পেজকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে মানুষের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। তাহলে ধীরে ধীরে আপনিও একজন স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তা হতে পারেন।
(৪) হ্যান্ড প্রিন্ট কাপড়ের ব্যবসা
হাজারো প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসার মাঝে হ্যান্ড প্রিন্ট কাপড়ের ব্যবসাটি একটি ইউনিক ও কম প্রতিযোগিতার ব্যবসা। সচরাচর এই ব্যবসাতে মানুষের বেশি আগ্রহ দেখা যায় না। তবে হ্যান্ড প্রিন্ট করা কাপড়ের চাহিদা বর্তমানে প্রতিনিয়তই বাড
মেয়েদের ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়- অনলাইন ইনকাম
বর্তমানে মেয়েদের ঘরে বসেই অনলাইনে ইনকাম করার উপায় হতে পারে যেকোন একটি কাজ শিখে। অনলাইনে ইনকাম করার অনেক সহহজ কাজ রয়েছে । বিশেষ করে মেয়েদের জন্য ঘরে বসেই বিভিন্ন কাজ করে আয় করা সম্ভব। এতে একদিকে যেমন পরিবারের দায়িত্ব পালন করা যায়, অন্যদিকে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতাও অর্জিত হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা সহজ ভাষায় অনলাইনে ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।অনলাইনে ইনকাম করার ক্ষেত্রে ধৈর্য এবং প্রেক্টিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে হয়তো কিছুটা সময় লাগতে পারে, তবে নিয়মিত পরিশ্রম করলে ভালো সাফল্য পাওয়া যায়। মেয়েদের জন্য ঘরে বসেই ইনকামের জন্য নিচে উল্লেখিত কাজগুলো তুলনামূলক সহজ এবং কার্যকরী হতে পারে। তাই, নিজের পছন্দের এবং দক্ষতার সাথে মিল রেখে যেকোনো একটি বা একাধিক উপায় বেছে নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।
১. ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম
ফ্রিল্যান্সিং হল এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে আপনি আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন। এখানে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কন্টেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি, ট্রান্সলেশন ইত্যাদি কাজ করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য Upwork, Freelancer, Fiverr ইত্যাদি ওয়েবসাইটে প্রোফাইল তৈরি করে কাজ পাওয়া যায়। শুরুতে কিছুটা সময় লাগতে পারে, তবে ভালো কাজ করলে ধীরে ধীরে নিয়মিত কাজ পাওয়া যায়।
২. ব্লগিং করে অনলাইনে আয়
যারা লিখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ব্লগিং একটি চমৎকার উপায়। নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে ব্লগ তৈরি করে আয় করা যায়। ব্লগে নিয়মিত মানসম্মত কন্টেন্ট প্রকাশ করলে গুগল অ্যাডসেন্স বা অন্য বিজ্ঞাপন সংস্থার মাধ্যমে আয় করা যায়। এছাড়া অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সরশিপ ইত্যাদির মাধ্যমেও ব্লগ থেকে আয় করা সম্ভব।
৩. অনলাইন টিউশনি করে ইনকাম
যারা শিক্ষাদান করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য অনলাইন টিউশনি একটি ভালো উপায়। বিভিন্ন শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট বা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস করানো যায়। এছাড়া নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষামূলক ভিডিও আপলোড করেও আয় করা যায়।
৪. ইউটিউবিং করে ইনকাম
ইউটিউব বর্তমানে একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। নিজের পছন্দের যেকোনো বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করে আয় করা যায়। যেমন রান্নাবান্না, সৌন্দর্য বিষয়ক টিপস, হস্তশিল্প, ভ্রমণ, শিক্ষা ইত্যাদি। ভিডিওগুলোতে গুগল অ্যাডসেন্স এর বিজ্ঞাপন, স্পন্সরশিপ বা পণ্যের প্রচার করে আয় করা যায়।
৫. অনলাইন ব্যবসা করে আয়
অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমেও মেয়েরা ঘরে বসে আয় করতে পারেন। ই-কমার্স ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের তৈরি পণ্য বিক্রি করা যায়। যেমন, জামা-কাপড়, গহনা, হস্তশিল্প, কসমেটিক্স, খাদ্যপণ্য ইত্যাদি। এছাড়া ড্রপশিপিং মডেলেও ব্যবসা করা যায়, যেখানে পণ্য সরাসরি সরবরাহকারীর কাছ থেকে ক্রেতার কাছে পৌঁছানো হয়।