বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী বেসরকারি ব্যাংক গুলোর মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংক অন্যতম। ডাচ বাংলা ব্যাংকে নিরাপত্তার সাথে লেনদেন করা সম্ভব। ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং এই ব্যাংকের সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত এই লেখাটিতে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে ডাচ বাংলা ব্যাংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৬ সালে এই ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়। এবং পরবর্তীতে দেশের সর্ব বৃহত এটিএম নেটওর্য়াক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।ব্যাংকিং কার্যক্রম এর দিক থেকে বাংলাদেশ ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (DBBL) সম্পূর্ণ নিরাপদ। গ্রাহকরা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সকল ব্যাংকিং কার্যক্রম ঘরে বসে সম্পূর্ণ করতে পারবে। ডাচ বাংলা ব্যাংক সম্পর্কিত তথ্যগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
Dutch Bangla Bank Account Opening
ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, ২ কপি ছবি, নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র ও ১ কপি ছবিসহ নিকটস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা অথবা ফাস্ট ট্র্যাক অফিসে যান। একাউন্ট খোলার ফরম পূরণ করে কাগজপত্র ও প্রাথমিক ডিপোজিট জমা দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।
Account Opening Form পূরণ করে জমা দেয়ার পর, দ্বায়িত্বরত অফিসার আপনার একাউন্ট খুলে দিবেন। এরপর আপনাকে ব্যাংকের নুন্যতম জমার পরিমাণ ক্যাশ কাউন্টারে জমা দিয়ে Account সচল করতে হবে।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য একজন সুপারিশ কারি প্রয়োজন। DBBL ব্যাংকের যেকোনো একাউন্ট হোল্ডার সুপারিশকারী হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তারা আপনাকে সহযোগিতা করতে পারেন, যদি আপনার পরিচিত কোন সুপারিশকারী না থাকে।
তবে ডাচ বাংলা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করার আগে অবশ্যই এই ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে এবং ব্যাংকে একাউন্ট খোলার আগে আপনি কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে চান সেটি সিলেক্ট করতে হবে। সাধারণত ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ৭ ধরনের একাউন্ট খোলা যায়।
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম পূরণের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস এর তথ্য প্রয়োজন হবে এবং ফর্ম এর সাথে কিছু ডকুমেন্ট সংযুক্ত করার প্রয়োজন হতে পারে। সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো হলোঃ
জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি।
বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে।পাসপোর্ট সাইজের সদ্যতোলা ৪ কপি রঙিন ছবি। নমিনির ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।নুন্যতম জমার পরিমাণ ৫০০ টাকা।ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি ( প্রয়োজন হতে পারে) একটি সুপারিশকারী একাউন্ট (DBBL ব্যাংকে একাউন্ট আছে এমন একজন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার এর সুপারিশ)ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে।উক্ত ডকুমেন্টসগুলো দিয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে খুব সহজে একটি সেভিংস একাউন্ট ওপেন করতে পারবেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট এর সুবিধা
খুব সহজেই সেভিংস একাউন্টে চেক ইস্যু।সেভিংস একাউন্টে আপনি ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।ব্যাংকের অন্য যেকোনো ব্রাঞ্চে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।ইন্টারনেট ব্যাংকিং (i-banking) এবং এসএমএস ব্যাংকিং সুবিধা।ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা।ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ।DPS খুলতে পারবেন।লিমিটেড ও আনলিমিটেড লেনদেন। ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট খোলার ফরম ডাচ বাংলা ব্যাংকে যেকোনো ধরনের একাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই একটি ফরম সংগ্রহ করতে হবে। আপনারা চাইলে নিকটস্থ ব্রাঞ্চ এ গিয়ে এই ফর্মটি সংগ্রহ করতে পারেন অথবা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ফরমটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
DBBL ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে যেকোনো ফরম ডাউনলোডের জন্য Download Form এখানে ক্লিক করুন। এখান থেকে ফরমটি পিডিএফ ফাইল হিসেবে ডাউনলোড করে পরবর্তীতে এটিকে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
ডাচ বাংলা ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য একইভাবে নিকটস্থ DBBL ব্যাংকের যেকোনো ব্রাঞ্চ থেকে একটি স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার ফরম সংগ্রহ করে নিবেন। এবং প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো প্রদান করে উক্ত ফর্মটি পূরণ করে ব্যাংকের শাখায় জমা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার স্টুডেন্ট একাউন্টটি ওপেন হয়ে যাবে।
এবং ব্যাংক থেকে টাকা উঠানোর জন্য একটি ইনস্ট্যান্ট ATM কার্ড প্রদান করা হবে। এবং পরবর্তীতে আপনি ব্যাংক থেকে চেক বই সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। সাধারণত ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীরা খুলতে পারবে। ছাত্র-ছাত্রী ব্যতীত অন্য কেউ ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট কেউ খুলতে পারবে না।
স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
লিমিটেশনের অধিক ট্রানজেকশন করার জন্য ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হতে পারে (এটা শুধুমাত্র ব্যবসায়ী স্টুডেন্টদের ক্ষেত্রে)ডাচ বাংলা ব্যাংকে (DBBL) স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার পূর্বে অবশ্যই উক্ত ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে নিবেন। ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে নিকটস্থ ডাচ-বাংলা ব্যাংকের শাখায় গিয়ে একটি স্টুডেন্ট একাউন্ট ওপেন করতে পারবেন।
স্টুডেন্ট একাউন্টের সুবিধা
কোন ফি ছাড়াই ইনস্ট্যান্ট ATM কার্ডডাচ বাংলা ব্যাংকের যেকোন ব্রাঞ্চ থেকে টাকা জমা-উত্তোলন ও এটিএম বুথ থেকে খুব সহজেই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট আপনারা লাইফটাইম ব্যবহার করতে পারবেন।Two-Factor Authentication (2FA) ব্যবহার করতে পারবেন।ইন্টারনেট ব্যাংকিং (i-banking) ব্যবহার করতে পারবেন। রকেট একাউন্ট এর সাথে ডাচবাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট লিংক করতে পারবেন।সেভিংস অ্যাকাউন্ট এর থেকে স্টুডেন্ট একাউন্টে ইন্টারেস্ট রেট একটু বেশি থাকে।স্টুডেন্ট একাউন্টে ইন্টারেস্ট রেট সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করা সম্ভব নয়। ডাচ বাংলা ব্যাংক এ হেল্পলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করে এ সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। এই লেখাটি শেষের দিকে ডাচবাংলা ব্যাংকের হেল্পলাইন নাম্বার দেওয়া আছে।
স্টুডেন্ট একাউন্ট এর অসুবিধা
ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টের সুবিধা পাশাপাশি কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেগুলো হলোঃ
স্টুডেন্ট একাউন্টে কোন ধরনের চেক প্রদান করা হয় না (তবে নূতন আপডেটে চেক প্রদান করার ব্যবস্থা চালু হতে পারে)
লেনদেনের ক্ষেত্রে লিমিটেশন রয়েছে।
৫,০০০ টাকার উপরে ব্যালেন্স থাকলে ৬ মাস অন্তর ১০০ টাকা মেইন্টেনেন্স ফি এবং ১৫ টাকা ভ্যাট প্রদান করতে হবে।এক অর্থ বছরে আপনার একাউন্টের ব্যালেন্স একসাথে ১ লক্ষ টাকার বেশি হলে ১৫০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।ছাড়া ডাচ বাংলা স্টুডেন্ট ব্যাংকে তেমন কোন অসুবিধা নেই। DBBL স্টুডেন্ট ব্যাংকে অসুবিধার থেকে সুবিধা অনেক বেশি।