বাংলা স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি

Admin
March 03, 2025
132
স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি ? বাংলা ভাষার অক্ষর গঠনের মূল ভিত্তি হলো স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ। বাংলা ভাষার বর্ণমালাকে বুঝতে হলে প্রথমেই আমাদের জানতে হবে স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কী এবং এদের সংখ্যা কত।
বাংলা ভাষা বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ ভাষা। এর অক্ষর, উচ্চারণ, ব্যাকরণ এবং গঠনশৈলী বাংলা ভাষাকে অনন্য করে তুলেছে। বাংলা বর্ণমালায় প্রধানত দুটি ধরণের অক্ষর থাকে – স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ। এ দুটি একসঙ্গে মিলেই বাংলা ভাষার শব্দগঠন ও বাক্যগঠন হয়।
বাংলা স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি? অনেকেই এই বিষয়ে বিভ্রান্ত থাকেন। কারণ বিভিন্ন সময়ে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও উচ্চারণগত পরিবর্তনের কারণে স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা নিয়ে ভিন্নমত দেখা যায়। এই নিবন্ধে আমরা স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের প্রকৃত সংখ্যা, সংজ্ঞা এবং তাদের ব্যবহারের বিশদ ব্যাখ্যা দেব।
বাংলা ভাষার বর্ণমালা হলো একগুচ্ছ অক্ষর যা বাংলা শব্দ গঠনের মূল উপাদান। বাংলা ভাষার বর্ণমালা দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত:
স্বরবর্ণ (Vowels) – স্বয়ংসম্পূর্ণ উচ্চারণযুক্ত অক্ষর
ব্যঞ্জনবর্ণ – স্বরবর্ণ ছাড়া উচ্চারিত হতে অক্ষম অক্ষর
বাংলা বর্ণমালার মোট অক্ষর কয়টি?
বাংলা বর্ণমালায় ৫০টি অক্ষর রয়েছে। এর মধ্যে:
১১টি স্বরবর্ণ
৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ
তবে, অনেক পুরনো বই এবং পাঠ্যপুস্তকে স্বরবর্ণের সংখ্যা ৭ বলা হয় (অ, আ, ই, উ, এ, ও, ঋ)। কিন্তু আধুনিক ভাষাবিজ্ঞান অনুযায়ী, সম্পূর্ণ স্বরধ্বনি প্রকাশ করতে ১১টি স্বরবর্ণ ধরা হয়।
স্বরবর্ণ: সংজ্ঞা, সংখ্যা ও বৈশিষ্ট্য
এই বর্ণ হলো এমন অক্ষর যা উচ্চারণের জন্য অন্য কোনো ধ্বনির সাহায্য নেয় না। অর্থাৎ, স্বরবর্ণ নিজে নিজেই উচ্চারিত হতে পারে এবং কোনো ব্যঞ্জনবর্ণের সাহায্য ছাড়াই স্পষ্টভাবে ধ্বনিত হয়।
স্বরবর্ণ কয়টি?
বাংলা ভাষায় মোট ১১টি স্বরবর্ণ রয়েছে: অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ, এ, ঐ, ও, ঔ।
এগুলোর প্রতিটি ধ্বনি বাংলা ভাষায় স্বতন্ত্র ভূমিকা রাখে। উচ্চারণভেদে এগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়:
হ্রস্ব স্বরবর্ণ – ই, উ, ঋ (সংক্ষিপ্ত উচ্চারণ)
দীর্ঘ স্বরবর্ণ – আ, ঈ, ঊ, এ, ঐ, ও, ঔ (প্রলম্বিত উচ্চারণ)
বাংলা ভাষায় স্বরবর্ণের গুরুত্ব
- শব্দ গঠনের জন্য স্বরবর্ণ অপরিহার্য
- সঠিক উচ্চারণ ও বানানচর্চার ক্ষেত্রে স্বরবর্ণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
- বাংলা কাব্য ও সাহিত্যিক উচ্চারণে স্বরবর্ণের ব্যতিক্রমী ব্যবহার রয়েছে
ব্যঞ্জনবর্ণ: সংজ্ঞা, সংখ্যা ও বৈশিষ্ট্য
আর ব্যঞ্জনবর্ণ হলো এমন অক্ষর, যা উচ্চারণের জন্য স্বরবর্ণের সহায়তা প্রয়োজন হয়। একা ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারিত হতে পারে না, বরং এটি স্বরবর্ণের সঙ্গে মিলেই একটি সম্পূর্ণ শব্দ তৈরি করে।
ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি?
বাংলা ভাষায় মোট ৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ রয়েছে। এগুলো হলো:
ক, খ, গ, ঘ, ঙ,
চ, ছ, জ, ঝ, ঞ,
ট, ঠ, ড, ঢ, ণ,
ত, থ, দ, ধ, ন,
প, ফ, ব, ভ, ম,
য, র, ল, শ, ষ, স,
হ, ড়, ঢ়, য়, ৎ,ং,ঃ, ঁ।
বাংলা বানানে স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের প্রভাব
বাংলা বানানশৈলী মূলত স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের সঠিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। অনেক শব্দের বানান ভুল হয় কারণ স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের সঠিক প্রয়োগ জানার অভাব থাকে। ব্যঞ্জনবর্ণের পরিবর্তন বা সংমিশ্রণে বাংলা ভাষায় নতুন শব্দের জন্ম হয়। বাংলা ভাষার উচ্চারণগত সৌন্দর্য বৃদ্ধি
বাংলা ভাষার স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে ভাষার উচ্চারণগত সৌন্দর্য বাড়ে। বিশেষত কবিতা, গান ও সাহিত্যিক রচনায় এদের সংযোজন বাংলা ভাষাকে আরও প্রাঞ্জল করে তোলে।