আরবি মাসের নাম

Admin
March 01, 2025
64
আরবি মাসের নাম একজন মুসলিম হিসাবে আমাদের মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিনিয়ত ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জীবন-যাপন করতে গিয়ে আমরা ইসলামী ক্যালেন্ডারের মাস ভুলে যাই। চাঁদ দেখার উপর এই ক্যালেন্ডারটি নির্ভরশীল হওয়ায় এটিকে চন্দ্র ভিত্তিক ক্যালেন্ডার বলা হয় । তবে আমরা হিজরি ক্যালেন্ডার (Hijri Calendar) বা ইসলামি ক্যালেন্ডার (Islamic Calendar) বলে চিনি। আজকে আমরা হিজরি ক্যালেন্ডারে আরবি মাসের নাম||আরবি ১২ মাসের নাম সম্পর্কে জানবো।
আরবি ১২ মাসের নাম
মুহররম (محرم)
সফর (صفر)
রবিউল আউয়াল (ربيع الأول)
রবিউস সানি (ربيع الثاني)
জমাদিউল আউয়াল (جمادى الأولى)
জমাদিউস সানি (جمادى الثانية)
রজব (رجب)
শাবান (شعبان)
রমজান (رمضان)
শাওয়াল (شوال)
জিলকদ (ذو القعدة)
জিলহজ্জ (ذو الحجة)
আরবি ১২ মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত
মুহররম (محرم)
মুহাররম মাসটি হিজরি ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস কারণ এই মাসের ১০ তারিখে আশুরা পালন করা হয়। এটি কারবালা দিবস নামেও পরিচিত। এ মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সফর (صفر)
সফর এটি হিজরি ক্যালেন্ডারের দ্বিতীয় মাস। এটি একটি স্বাভাবিক মাস কোনো বিশেষ ফজিলত নেই মাসে । সবকিছুই স্বাভাবিক।
রবিউল আউয়াল (ربيع الأول)
রবিউল আউয়াল মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের তৃতীয়তম মাস। এটি আমাদের শেষ নবি হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর জন্মের মাস। ১২ ই রবিউল আউয়াল আমাদের শেষ নবির জন্মদিন। এই দিনটিকে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী বলে। মুসলিম উম্মাহ এই দিনকে মওলিদ উন-নবী হিসেবে উদযাপন করে থাকে।
রবিউস সানি (ربيع الثاني)
রবিউস সানি এটি হিজরি ক্যালেন্ডারের চতুর্থ মাস। এটি একটি স্বাভাবিক মাস কোনো বিশেষ ফজিলত নেই মাসে । সবকিছুই স্বাভাবিক।
জমাদিউস সানি (جمادى الثانية)
জমাদিউস সানি ইসলামী চান্দ্র পঞ্জিকার ষষ্ঠ মাস।এই মাসে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কন্যা ফাতিমা (রাঃ) ইন্তেকাল করেছিলেন। তাছাড়া মুয়াতাহের যুদ্ধে বিজয় লাভ হয়েছিলো এই মাসে।
রজব (رجب)
রজব ইসলামী চান্দ্র পঞ্জিকার সপ্তম মাস। এই মাসের ২৭ তারিখে মিরাজের ঘটনা ঘটেছিল। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এই রাতে তিনি মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস এবং সেখান থেকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত ভ্রমণ করেন। এই ঘটনাটি রজব মাসের ২৭তম রাতে ঘটেছে বলে বিশ্বাস করা হয়, যা “শবে মেরাজ” নামে পরিচিত।
শাবান (شعبان)
শাবান ইসলামী চান্দ্র পঞ্জিকার অষ্টমতম মাস।শাবান মাসের ১৫তম রাতে পালিত হয় “লাইলাতুল বরাত” বা “শবে বরাত”। মুসলমানরা এই রাতে আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে দোয়া, ইবাদত এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন। অনেকের বিশ্বাস, এই রাতে আল্লাহ তাআলা পরবর্তী বছরের জন্য মানুষের তাকদির নির্ধারণ করেন। তাছাড়া এই মাসে কিবলা পরবির্তন হয়ে থাকে ।প্রথমদিকে মুসলমানরা নামাজে বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম) মুখী হয়ে নামাজ পড়তেন, কিন্তু শাবান মাসে আল্লাহর আদেশে কিবলা পরিবর্তন করে কাবা শরীফের দিকে নামাজ পড়া শুরু হয়।
রমজান (رمضان)
রমজান ইসলামিক চান্দ্র বছরের নবম মাস এবং এটি মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ মাস। রমজান মাসে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ইবাদত সংঘটিত হয়-
রোজা (সিয়াম): রমজান মাসে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখা বাধ্যতামূলক (ফরজ)। রোজা রাখার মাধ্যমে মুসলমানরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও সংযম অনুশীলন করেন এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। রোজা শুধু খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকার নাম নয়; বরং এটিকে সমস্ত খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার এবং আত্মশুদ্ধির একটি মাধ্যম হিসেবেও দেখা হয়।
লাইলাতুল কদর (শবে কদর): রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে কোন এক রাতে লাইলাতুল কদর বা শবে কদর পালিত হয়। এটি এমন একটি রাত, যা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। কুরআন মাজিদে উল্লেখ আছে যে, এই রাতে ফেরেশতারা আল্লাহর অনুমতি নিয়ে পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং বিশেষ রহমত ও বরকত নিয়ে আসেন।